• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিপ্লবী শহীদ তিতুমীরের জন্মদিন আজ


মোঃ সাব্বির হোসেন জানুয়ারি ২৭, ২০২৩, ১২:০৭ পিএম
বিপ্লবী শহীদ তিতুমীরের জন্মদিন আজ

ঢাকা: ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী নেতা বাঁশের কেল্লা খ্যাত শহীদ তিতুমীরের জন্মদিন আজ (২৭ জানুয়ারি)। তার প্রকৃত নাম সৈয়দ মীর নিসার আলী।

১৭৮২ সালের ২৭ জানুয়ারি চব্বিশ পরগনার বাদুড়িয়া থানার হায়দারপুর গ্রামে (বর্তমানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে) জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম সৈয়দ মীর হাসান আলী এবং মাতার নাম আবিদা রোকেয়া খাতুন।

তিতুমীরের প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় তার গ্রামের বিদ্যালয়ে। পরবর্তীকালে তিনি স্থানীয় একটি মাদ্রাসাতে লেখাপড়া করেন। ১৮ বছর বয়সে তিতুমীর কোরানে হাফেজ হন এবং হাদিস বিষয়ে পাণ্ডিত্য লাভ করেন। একই সাথে তিনি বাংলা, আরবি ও ফার্সি ভাষায় ব্যুৎপত্তি লাভ করেন।

তিতুমীর ১৮২২ সালে হজব্রত পালনের জন্য মক্কা শরীফ যান এবং সেখানে তিনি বিখ্যাত ইসলামি ধর্মসংস্কারক ও বিপ্লবী নেতা সাইয়িদ আহমদ বেরেলীর সান্নিধ্য লাভ করেন। 

সাইয়িদ আহমদ তাকে বাংলার মুসলমানদের অনৈসলামিক রীতিনীতির অনুশীলন এবং বিদেশি শক্তির পরাধীনতা থেকে মুক্ত করার কাজে উদ্বুদ্ধ করেন।

১৮২৭ সালে তিতুমীর নিজ গ্রামের দরিদ্র কৃষকদের নিয়ে জমিদার ও ব্রিটিশ নীলকরদের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন শুরু করেন। 

ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যে ক’জন বাঙালি বিপ্লবী সাড়া জাগিয়েছিলেন তাদের মধ্যে শহীদ তিতুমীরের অবস্থান সবার উপরে। 

সামরিক শক্তি ছাড়া শুধুমাত্র মানসিক শক্তি দ্বারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে তার সাহসিকতার স্ফুলিঙ্গ তাকে নিয়ে গেছে অনন্য এক উচ্চতায়। নিজের জীবনের বিনিময়েও অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করেননি কখনো। ছিলেন ধর্মপ্রাণ, কিন্তু অত্যাচার করেননি অন্য কোনো ধর্মীয় গোষ্ঠীকে।

বারাসাতের নারিকেলবাড়িয়া গ্রামে ১৮৩১ সালের ২৩ অক্টোবর তিনি বাঁশের কেল্লা তৈরি করে চব্বিশপরগনা, নদীয়া ও ফরিদপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। জমিদার ও ব্রিটিশ বাহিনী তিতুমীরের হাতে বেশ কয়েকবার পরাজিত হয়। বারাসতের বিদ্রোহে প্রায় ৮৩ হাজার কৃষকসেনা তিতুমীরের পক্ষে যুদ্ধ করেন। 

১৮৩১ সালের ১৩ নভেম্বর ব্রিটিশ সৈন্যরা তাদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। এ সময়ে তিতুমীর স্বাধীনতা ঘোষণায় বলেন, একটু পরেই ইংরেজ বাহিনী আমাদের কেল্লা আক্রমণ করবে। লড়াইতে হারজিত আছেই, এতে আমাদের ভয় পেলে চলবে না। 

দেশের জন্য শহীদ হওয়ার মর্যাদা অনেক। এ লড়াই শেষ লড়াই নয়। আমাদের লড়াইয়ের প্রেরণায় এ দেশের মানুষ একদিন দেশ উদ্ধার করবে।

কয়েকদিনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৯ নভেম্বরে বহুসংখ্যক অনুসারিসহ তিতুমীর শহীদ হন। অধিনায়ক গোলাম মাসুমসহ ৩৫০ জন বিপ্লবী সৈনিক ইংরেজদের হাতে বন্দি হন। গোলাম মাসুম মৃত্যুদন্ডে দণ্ডিত হন।

ইংরেজি বাহিনীর গোলার আঘাতে বাশের কেল্লা উড়িয়ে গিয়েছিলো ঠিকই। কিন্তু, বাঁশের কেল্লার সাহসীকতা যুগে যুগে আমাদের সাহস ও প্রেরণা দিয়েছে।

ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেতা বিপ্লবী শহিদ তিতুমীরের নামকে চিরস্মরণীয় রাখতে ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত জিন্নাহ কলেজের নাম পরিবর্তন করে তিতুমীর কলেজ রাখা হয়।

সোনালীনিউজ/আইএ

Wordbridge School
Link copied!