• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রাজনীতির মধ্যমণি হিলো আলম ‘সাহেব’!


ইমতিয়াজ আমিন ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৩, ০৮:০৫ পিএম
রাজনীতির মধ্যমণি হিলো আলম ‘সাহেব’!

মো. আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। ফাইল ছবি:

ঢাকা: বগুড়ায় উপনির্বাচনে হেরে যাওয়ায় পরও একরকম রাজনীতির মধ্যমণিতে পরিণত হয়েছেন আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম।নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার পর থেকে সারাদেশে তাকে নিয়ে যে আলোচনা শুরু হয়েছিলো তা এখন গিয়ে ঠেকেছে শীর্ষ রাজনীতিবিদ পর্যন্ত।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর থেকে শুরু করে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা, ভিপি নুর, জোনায়েদ সাকিসহ আরও অনেকেই কথা বলেছেন হিরো আলমকে নিয়ে। 

এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এমনকি টেলিভিশন টকশোতেও একচেটিয়া ভিউ নিয়েছে হিরো আলম ইস্যু।

হিরো আলমকে নিয়ে শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘হিরো আলম হিরো হয়ে গেছে। কারণ তারা হিরো আলমের কাছেও মাত্র ৮০০ ভোটে জিতেছে। তাও চুরির অভিযোগ আছে। আর ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক ব্যক্তিকে জেতাতে নিজেদের প্রার্থীকে গুম করা হয়েছে। এই হচ্ছে আওয়ামী লীগের বর্তমান পরিস্থিতি।

এর জবাবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বলেছেন, ‘হিরো আলম হেরে যাওয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ফখরুল সাহেব বলেছেন, রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে হিরো আলমকে হারানো হয়েছে। হায়রে মায়া! হিরো আলমের জন্য এত দরদ উঠলো ফখরুলের? ফখরুল ভেবেছিলেন হিরো আলম জিতে যাবে। হিরো আলম এখন জিরো হয়ে গেছে। তারা তো নির্বাচন চান নাই। হিরো আলমকে বিএনপি দাঁড় করিয়েছে। জাতীয় সংসদকে ছোট করার জন্য হিরো আলমকে প্রার্থী করেছে বিএনপি। অবশেষে ফখরুলের স্বপ্নভঙ্গ।’

একইদিন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক সমাবেশে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘উত্তরবঙ্গে হিরো আলম দাঁড়িয়েছিলেন। মানুষ আগ্রহী হয়ে ভোট দিয়েছিল। তাকে স্যার বলতে হবে, এটা প্রশাসনের লোকেরা মানতে পারলো না। তাই হিরো আলম জিতলেও, তাকে জিততে দেওয়া হয়নি।’ 

এছাড়া হিরো আলম হেরে যাওয়ার পর এক ভিডিও বার্তায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ‘হিরো আলমের নির্বাচন ঘিরে সব জায়গায় শোরগোল পড়েছে। সে একদম প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে আসা একজন লোক। তার উচ্চ শিক্ষা নেই, তেমন অর্থবিত্ত নেই। তিনি বিভিন্ন ভাষায় গান গেয়েছেন, অভিনয় করেছেন। নানা কারণেই তিনি আলোচনায় আছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘পত্র-পত্রিকার আপডেট অনুযায়ী আমরা দেখছিলাম, হিরো আলম নির্বাচনে জিতে যাচ্ছেন। কিন্তু জিতে গিয়েও আবার দেখলাম, তিনি হেরে গেলেন।’ 

বিএনপি নেত্রী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, ‘হিরো আলম এমপি হওয়া লজ্জার নয়, তাকে কারচুপি করে হারানোটা লজ্জার।’

শুধু রাজনীতিবিদরাই নন, চারদিকে কান পাতলে শোনা যায়, নানান শেণি-পেশার মানুষের আলোচনায় সত্যিকারের হিরোর মতই স্থান করে নিয়েছেন হিরো আলম। 

এতসব আলোচনা-সমালোচনা, বক্তব্য বিবৃতির মধ্যে একটি বিষয় বেশ নজর কেড়েছে মানুষের। যে হিরো আলমকে নিয়ে এক সময় ট্রল করাই মনে হতো যুক্তিযুক্ত, সেই মানুষটি এখন ‘সাহেব’ বনে গেছেন।

গত ২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা নির্বাচন কমিশন ভবনে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম সাহেব যে অভিযোগ তুলেছেন তা ভিত্তিহীন। আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, হিরো আলম সাহেব নন্দীগ্রামে খুব একটা এজেন্ট দেননি। জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন, আমি এবং এসপি সাহেব নিজে কেন্দ্র ভিজিট করেছি। আমরা সেখানে গিয়ে তার কোনো এজেন্ট পাইনি।’ 

ইসি রাশেদা সুলতানা একজন ভদ্র মহিলা, ভাল মানুষ। একজন প্রার্থীকে তিনি সাহেব বলবেন এটা তার চরিত্রগত গুণ। তবে মাটিতে গড়াগড়ি খেতে খেতে হিরো আলমের এই ‘সাহেব’ হয়ে ওটা সত্যিই প্রশংসনীয়।

সোনালীনিউজ/আইএ

Wordbridge School
Link copied!