• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

যে বাড়িতে এখনো বাস করেন জমিদার


মো. সাগর মিয়া জুলাই ২৪, ২০২১, ০৩:২১ পিএম
যে বাড়িতে এখনো বাস করেন জমিদার

ছবি : হোসেনপুর উপজেলার গাঙ্গাটিয়া জমিদার বাড়ি

ঢাকা : জমিদারি প্রথার বিলুপ্তি ঘটছে বহু আগেই৷ দেশে এখন তেমন কোনো জমিদার জীবিত না থাকলেও কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার গাঙ্গাটিয়া জমিদার বাড়িটি এখনও প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন হিসাবে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এ বাড়িতে জমিদারের বংশধর মানবেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী এখনো বসবাস করছেন। বর্তমানে যা দেখতে প্রতিনিয়ত দূর-দূরান্ত থেকে দেশি বিদেশি পর্যটকরা ছুটে আসছেন।

জমিদার বাড়ির প্রবেশ পথে পর্যটক কিংবা অতিথিকে স্বাগত জানাতে রয়েছে নকশা আর সৌন্দর্যে ভরপুর প্রবেশদ্বার। পুরো বাড়ির ভেতরের অট্টালিকা চমৎকার নৈপুণ্য আর কারুকাজে ভরপুর। দেয়াল-কার্নিশগুলোতে শোভা পাচ্ছে সুনিপুণ দৃষ্টিনন্দন শিল্প। বাড়ির সামনে রয়েছে সু-বিশাল পুকুর ও বিস্তীর্ণ মাঠ। জমিদার বাড়ির নহবতখানা, দরবারগৃহ ও মন্দির বিশেষ স্থাপত্যের নিদর্শন আজও কালের সাক্ষী।

জানা যায়, ষোড়শ শতাব্দীর দিকে গাঙ্গাটিয়া জমিদার বংশের পূর্ব পুরুষেরা রাঢ়ীয় ব্রাহ্মণ গোত্রের জনৈক শাস্ত্রীয় পণ্ডিত ভারতের উত্তর প্রদেশ থেকে এসে এদেশে বসতি স্থাপন করেন। ব্রাহ্মণ্য ধ্যান- ধারণা, পূজা-পার্বণ,আচার অনুষ্ঠানে জমিদার পরিবার এ অঞ্চলে এক সময় বিশেষ প্রভাব প্রতিপত্তি অর্জন করেন।

অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষে দীননাথ চক্রবর্তী হোসেনশাহী পরগণার এক তৃতীয়াংশ ক্রয় করে প্রথমে এ অঞ্চলে জমিদারি প্রথার সূচনা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বাবু অতুলচন্দ্র চক্রবর্তী পত্তনি সূত্রে আঠার বাড়ির জমিদার জ্ঞানদা সুন্দরী চৌধুরানীর কাছ থেকে আঠারো দুই আনা অংশ গাঙ্গাটিয়া জমিদারির সাথে যুক্ত করেন। জমিদার অতুল বাবুর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ইংরেজ আমলে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সাহিত্যের ব্যাপক প্রসার লাভ করে। তাদের পরবর্তী বংশধর খ্যাতিমান সাহিত্যিক, গবেষক ও হাইকোর্টের জজ ধারনাথ চক্রবর্তী এ জমিদার পরিবারের ঐতিহ্য ধরে রাখতে আমৃত্যু নিরলস চেষ্টা করেন।

স্থানীয়দের দাবি, বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলসহ পুরো বাংলায় ছড়িয়ে ছিল এ পরিবারের খ্যাতি। তাই দেশের পুরনো ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে গাঙ্গাটিয়া জমিদার বাড়িটি রাষ্ট্রীয়ভাবে রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি। পুরনো ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে, সংস্কার করে দৃষ্টি নন্দন করতে পারলে এটিও হতে পারে পর্যটকদের দর্শনীয় স্থানের একটি।

সোনালীনিউজ/এসএন

Wordbridge School
Link copied!