• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আত্মবিশ্বাস থাকলে সাফল্য আসবেই


নিউজ ডেস্ক নভেম্বর ২৯, ২০২১, ০৩:৩৭ পিএম
আত্মবিশ্বাস থাকলে সাফল্য আসবেই

ঢাকা : রোকসানা আহমেদ বিন্তীর স্বপ্নের চাকরি ছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। সে কারণে বিসিএস (প্রশাসন) এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বেছে নেন ব্যাংকিং সেক্টর। ২০১৫ সালে সহকারী পরিচালক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগদানের পর পদোন্নতিতে বর্তমানে উপ-পরিচালক হিসেবে ফিনানশিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্টে কর্মরত। তার পথচলা ও ব্যাংকিং ক্যারিয়ার বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা হয় আমাদের সঙ্গে ।

সাফল্যের পেছনের গল্প

রোকসানা আহমেদ বিন্তী : আাামি কখনোই নিজেকে একজন অনুপার্জনশীল ব্যক্তি হিসেবে কল্পনাও করতে পারতাম না। সবসময়ই অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন হতে চেয়েছি। আমার জন্য চাকরি নিয়ে কেউ বসে নেই এমন ভাবনা থেকে অনার্স দেয়ার পরপরই বিভিন্ন ব্যাংকে পরীক্ষা দেওয়া শুরু করি। অনেকগুলো ব্যাংকে রিটেনে টিকি কিন্তু ভাইভায় বাদ পড়ে যাই। মন খারাপ হয়েছে, ভেঙে পড়েছি কিন্তু ধৈর্য ধরে আবার নতুন করে পড়তে বসেছি। চাকরির পরীক্ষার বাজারে আসলে এভাবেই সারভাইভ করতে হয়। এখানে পরাজয়টাই হলো জয়লাভের প্রেরণা।

সাফল্যের মূলমন্ত্র

রোকসানা আহমেদ বিন্তী : পরিশ্রম করা এবং ধৈর্যহারা না হওয়া।

নারী হিসেবে ব্যাংকে কাজের অভিজ্ঞতা

রোকসানা আহমেদ বিন্তী : বাংলাদেশ ব্যাংকে গত ছয় বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, এখানকার পরিবেশ খুবই নারীবান্ধব। কর্মক্ষেত্রে কোনো ধরনের বৈষম্য মোকাবিলা এখন পর্যন্ত করতে হয়নি। কর্মবন্টনের ক্ষেত্রেও নারী পুরুষ ভেদাভেদ করা হয় না। তাই এখানে কাজ করতে এসে নিজেকে কখনোই আলাদা কিছু মনে হয়নি।

ব্যাংকে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে 

রোকসানা আহমেদ বিন্তী  : নারীবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে। সঠিক কর্মঘণ্টা নির্ধারণ করা, ডে-কেয়ার সুবিধা প্রদান, নিরাপদ কর্মপরিবেশ ইত্যাদি নিশ্চিত করতে হবে।

ব্যাংকিংক্ষেত্রে নারীদের চ্যালেঞ্জ

রোকসানা আহমেদ বিন্তী : মেয়েদের সবচেয়ে বড় শক্তি যেমন মাতৃত্ব তেমনি সবচেয়ে বড় দুর্বলতাও তাই। মা হওয়ার প্রক্রিয়ায় একজন নারীকে মাতৃত্বকালীন ছুটি নিতেই হয় কিন্তু রেগুলেটরি প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি অন্য অনেক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এই ছুটি পেতে সমস্যা হয়। এছাড়া সন্তানের অসুস্থতা কিংবা অন্য কোনো কারণে ছুটি প্রয়োজন হলে তা পাওয়া যায় না। আবার সন্তানের সঠিক কেয়ারগিভারের অভাবে অনেক যোগ্যতাসম্পন্ন নারীকে চাকরি ছাড়তে হয়। যা ডে কেয়ারের মাধ্যমে সমাধান করা যায়। এছাড়া ট্রান্সফার পোস্টিং, অফিস আওয়ারের পরেও অফিসে অবস্থান করা এসব ক্ষেত্রেও নারীরা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। তবে এই সমস্যাগুলো তফসিলি ব্যাংকের নারী কর্মীদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। বাংলাদেশ ব্যাংকের নারীদের এ ধরনের সমস্যা খুব বেশি সম্মুখীন হতে হয় না।

নারীদের উদ্দেশে বার্তা

রোকসানা আহমেদ বিন্তী : অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন করুন। চাকরি, ব্যবসা, শিক্ষকতা, টিউশনি, ফ্রিল্যান্সিং যা-ই হোক। সবকিছুতে স্বামী, ভাই কিংবা পিতার মুখাপেক্ষী হয়ে না থাকাই উত্তম। শুধু অর্থ উপার্জন নয়, নিজের একটা আইডেন্টিটি তৈরি করাটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। নিজের আইডেন্টিটি মানে নিজের একটা জগৎ তৈরি করা। সেখানে আপনার নতুন কিছু মানুষের সাথে পরিচয় হবে, আইডিয়া শেয়ারিং হবে। আপাতদৃষ্টিতে এসব সম্পর্ক গুরুত্বহীন মনে হলেও এই ছোট ছোট সম্পর্কগুলোও গুরুত্বপূর্ণ। কঠিন বাস্তবতায় এই সম্পর্কগুলোই আমাদের ভালোভাবে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে। ফলে জীবন চলার কঠিন পথটা খানিকটা হলেও সহজ হয়ে যায়।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

রোকসানা আহমেদ বিন্তী : ক্যারিয়ার নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আমি কখনোই করি না। নিজের মতো চেষ্টা করে যাই, তাতে যতটা সাফল্য আসে আমি তাতেই খুশি। চাকরিটা অনেক ভালোবাসি তাই আনন্দের সাথে কাজ করে যাচ্ছি। এতে যদি আর কোনো সাফল্য আসে তো আরও ভালো আর না এলেও ক্ষতি নেই। তবে উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার একটা ইচ্ছা আছে। আমি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বেশি না করে বর্তমানটা উপভোগ করি।

তরুণদের উদ্দেশে বার্তা

রোকসানা আহমেদ বিন্তী : যদি ঠিকঠাক প্রিপারেশন নিতে পারেন চাকরি আপনার হবেই। আমি অনেকগুলো ব্যাংকে ভাইভা দিয়ে ব্যর্থ হই কিন্তু কখনোই হতাশ হইনি। কখনো ভাবিনি আমাকে দিয়ে হবে না। ব্যর্থতার কারণে আমার আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে গিয়েছিল। আপনাকে শুধু ধৈর্য ধরে পরিশ্রম করে যেতে হবে। সাফল্য আসবেই।

ব্যাংকার হতে চাওয়া নারীদের জন্য পরামর্শ

রোকসানা আহমেদ বিন্তী : যদি ব্যাংকার হতে চান, তাহলে অবশ্যই খুব ভালো একটা প্রিপারেশন নিতে হবে। সেজন্য যতটা পরিশ্রম প্রয়োজন তা করতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো শর্টকাট পদ্ধতি অনুসরণ করা অনুচিত হবে বলে আমি মনে করি। সেইসাথে হতাশ হওয়া যাবে না। নিজের ওপর ভরসা রাখতে পারলে সফলতা ধরা দেবে। সূত্র : বাংলাদেশের খবর

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!