• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অজানাকে জানার সুযোগ করে দেয় বইমেলা : প্রধানমন্ত্রী


নিউজ ডেস্ক ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৮, ০৬:২৭ পিএম
অজানাকে জানার সুযোগ করে দেয় বইমেলা : প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা: বইমেলা শুধু বই কেনাবেচার জন্য নয়। বইমেলা কিন্তু আকর্ষণ করে। আমাদের সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্রটাকে প্রসারিত করে। অজানাকে জানার সুযোগ করে দেয় বইমেলা। এজন্যই বলা হয় প্রাণের মেলা বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বাংলা একাডেমি চত্বরে অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে এ বছর বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার, স্মারক ও সার্টিফিকেট তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বইমেলা আমাদের এখানে হয়। এটা মনে রাখতে হবে, বইমেলা শুধু বই কেনাবেচা জন্য নয়। বইমেলা কিন্তু আকর্ষণ করে। আমাদের সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্রটাকে প্রসারিত করে। অজানাকে জানার সুযোগ করে দেয়। আমরা নিজেরাই বলি, এটা আমাদের প্রাণের মেলা।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু কিন্তু ভাষার মর্যাদার সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। আমি এটুকু বলতে পারি- আজ আমাদের যা যা অর্জন, সবকিছুর পেছনে আমাদের মহান ত্যাগ যেমন রয়েছে, তেমনি বঙ্গবন্ধুরও অবদান রয়েছে। আওয়ামী লীগ যখন হক-ভাসানী-সোহরাওয়ার্দীকে নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠন করা হলো, ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট সরকার গঠন করলো। কিন্তু যুক্তফ্রন্টকে বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে দেয়নি। এরপর ১৯৫৬ সালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে এবং বাংলাদেশের শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারই ২১ ফেব্রুয়ারিকে শহীদ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে, সরকারি ছুটি দেয় এবং সেইসঙ্গে শহীদ মিনার গড়ার প্রকল্প গ্রহণ করে। বাজেটের টাকা দিয়ে শহীদ মিনার তৈরির কাজও শুরু হয়েছিল। এরপর আবার আমাদের দেশে মার্শাল ল জারি হলো। আর মার্শাল ল জারি হলে যা হয়, আমাদের পথ অনেকটা বন্ধ হয়ে গেল।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কিন্তু এরপর আবার যখন মার্শাল ল সরকার ক্ষমতায় আসে, তারা আর যা হোক, বাঙালি জাতির সংস্কৃতি, বাঙালি জাতির সাহিত্য চর্চা, বাঙালি জাতির বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো— এই কাজগুলোর দিকে তাদের তেমন কোনও মনোযোগ ছিল না। আর থাকতেও পারে না। কেন পারে না? খুব স্পষ্ট। যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে, সংবিধান লঙ্ঘন করে, তারা সবসময় আতঙ্ক থাকে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতির প্রেক্ষাপট তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করে। সেসময় আমরা জানতে পারলাম যে কানাডাপ্রবাসী দু’জন বাঙালি এবং তাদের সঙ্গে আরও কয়েকটি দেশের মাতৃভাষাপ্রেমী, তারা একটি সংগঠন গড়ে তোলে। তাদের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তাব আসে যে জাতিসংঘে আমাদের ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু কোনও সংগঠন এককভাবে প্রস্তাব করলে হয় না, কোনও একটি দেশকে করতে হয়। যখনই এই খবরটি আমার কাছে এলো, সঙ্গে সঙ্গে আমরা প্রস্তাবনা পাঠালাম। আপনারা জানেন, ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ইউনেস্কো স্বীকৃতি দিয়েছে।

তিনি বলেন, আজ এই বাংলা একাডেমি আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন যেমন করছে, তেমনি বিদেশি বিভিন্ন ভাষার সাহিত্য অনুবাদ হচ্ছে, বাংলা ভাষার বিভিন্ন লেখা অন্য ভাষায় অনুবাদ হচ্ছে। সারাবিশ্বের সঙ্গে একটি সংযোগ হচ্ছে। এর দৃষ্টান্ত, প্রতিবার যখন বইমেলা হয়, কোনও না কোনও দেশের কবি-সাহিত্যিক উপস্থিত হন। তারা বাংলা ভাষা-সাহিত্যের চর্চা করেন, কত চমৎকারভাবে তারা বক্তব্য দেন। বাংলা ভাষা ও বাঙালি জাতি সম্পর্কে তারা যে ধরনের কথা বলেন, আমাদের উৎসাহিত করেন, এতেও বাঙালি জাতির মর্যাদা বিশ্বের দরবারে বৃদ্ধি পায়।

অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। অনুষ্ঠানে জিম্বাবুয়ে, মিশরসহ কয়েকটি দেশের বেশ কয়েকজন লেখক-সাহিত্যিকও বক্তব্য রাখেন।

সোনালীনিউজ/আতা

Wordbridge School
Link copied!