• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ২, ২০১৬, ১২:০১ পিএম
অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই

দেশে বিভিন্ন সময়েই নানা ধরনের অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তবে যে কোনো কারণেই হোক, এটি যদি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার মতো কোনো ঘটনার সৃষ্টি করে তবে তা হয়ে ওঠে অত্যন্ত উদ্বেগজনক। ধর্মকে অবমাননার অজুহাত তুলে গত রবিবার ব্র্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডব চালানো হয়েছে। জেলার নাসিরনগর উপজেলায় অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের ১৫ মন্দির ও শতাধিক বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এর রেশ ছড়িয়ে পড়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলা হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুরেও। সেখানেও দুটি মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। দুঃখজনক হলো, এ বছরের গোড়ার দিকে এক মাদরাসাছাত্রের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গনে হামলা চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে রীতিমতো ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়েছিল। এ ছাড়া এই এলাকায় একই অজুহাতে ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি ও তাণ্ডব চালানোর ঘটনা ঘটছে। কেন এখানে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে, কর্তৃপক্ষকে তা খতিয়ে দেখতে হবে। এসব ঘটনা প্রতিরোধের পাশাপাশি প্রতিকারেরও চেষ্টা করতে হবে। 

সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, শুক্রবার থেকেই এলাকায় রটানো হচ্ছিল, নাসিরনগরের রসরাজ দাস নামে এক হিন্দু যুবক ধর্মের অবমাননা করে ফেসবুকে একটি বিকৃত ছবি পোস্ট করেছে। পুলিশ শনিবার দুপুরে রসরাজকে গ্রেফতারও করেছে। অথচ রবিবার আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত নামের একটি সংগঠন বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, নাসিরনগর ও মাধবপুরে এই কর্মসূচিতে অনেকেই লাঠিসোঁটা নিয়ে অংশগ্রহণ করে। সমাবেশে উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়ারও অভিযোগ ওঠে। এরই একপর্যায়ে কিছু লোক হিন্দুদের মন্দির ও বাড়িঘরে হামলা চালায় এবং লুটপাট করে। পুলিশ হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে। অবশ্য আহলে সুন্নাতের স্থানীয় নেতারা দাবি করেছেন, এ হামলার সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং তারাও হামলকারীদের শাস্তি দাবি করেছেন। তবে এ হামলার সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে না পারলে মানুষের জীবনযাপনের স্বাভাবিকতা হারাবে যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। যার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। অপরাধ প্রমাণিত হলে তার শাস্তি হবে। তারপরও কেন এই জঘন্য হামলা? 

বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা, এই হামলার সঙ্গে জড়িতদের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করা। এর সঙ্গে ধর্মের কোনোই সম্পর্ক নেই। বরং ধর্মীয় অপমানকে অজুহাত হিসাবে দাঁড় করানো হয়েছে। এ ছাড়া এই ঘটনার সঙ্গে প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতা অনেকাংশে দায়ী। বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার পরও কার্যত তার কোনো পদক্ষেপই নেয়নি। যারা এসব হামলার সঙ্গে জড়িত ও পরিকল্পনাকারী তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হোক। আমরা ভবিষ্যতে এ জাতীয় ঘটনার পুনরাবৃত্তি চাই না।

সোনালীনিউজ/ঢাকা

Wordbridge School
Link copied!