• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

অপরাধের ধরন অনুযায়ী রাজাকারদের বিচার


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯, ০৬:৫০ পিএম
অপরাধের ধরন অনুযায়ী রাজাকারদের বিচার

ঢাকা : আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত রাজাকারের তলিকায় থাকা কারো বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) খুন, ধর্ষণ ও লুটপাটের অপরাধের প্রমাণ পেলে নিশ্চয়ই তাকে বিচারের আওতায় আনা হবে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রাজাকারের তালিকা যাচাই বাছাই করে দেখবে, সেখানে অপরাধের ধরন অনুযায়ী রাজাকারদের বিচারের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে আইন বিচার ও সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে নেপালের আইন বিচার ও সংসদীয় বিষয়ক উপ-প্রধানমন্ত্রী উপেন্দ্র যাদব, যুগ্ম সচিব গৌতম ফনিন্দর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে আইনমন্ত্রী এ কথা বলেন। এসময় বাংলাদেশের আইন মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব ওয়ালিদ মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সকালে একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

আইনমন্ত্রী বলেন, রাজাকারদের বিচারের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের যে তদন্তকারী সংস্থাটি রয়েছে, তারা দেখবে যে কার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আওতায় বিচার করা উচিত। তারা যদি তালিকায় থাকা রাজাকারদের বিষয়ে তদন্ত করে অপরাধের প্রমাণ পায়, নিশ্চয় তাদের বিচার হবে।

দীর্ঘদিন পর রাজাকারদের তালিকা হলো এটাকে কীভাবে দেখছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইতিহাসে সবকিছু পরিষ্কার হওয়া ভালো। আমার মনে হয় নতুন প্রজন্ম এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মকে সত্য ইতিহাসটা জানানো উচিত। আমরা স্বাধীন হয়েছি কীভাবে। আমাদের স্বাধীনতা পর্যন্ত এনেছেন যিনি সে জাতীয় পিতার কথাও কিন্তু আমরা এক সময় বলতে দ্বিধাবোধ করেছি। আমার মনে সেটার অবসান হওয়া উচিত। এসব রাজাকারের তালিকা এবং আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে একটা সুন্দর শক্তিশালী এবং উন্নত বাংলাদেশ গড়তে সাহায্য করবে।

আনিসুল হক বলেন, আমাদের আলাপ আলোচনায় যেটা উঠে এসেছে সেটা হলো আইন অঙ্গনে পারস্পরিক সহযোগিতা। আপনারা জানেন আমরা ব্রিটিশ আইনটাই অনুসরণ করি। আমাদের ও নেপালের আদালতগুলো অনেকাংশেই একই ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে। সেই ক্ষেত্রে আমাদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হলে বাংলাদেশে যে জুডিশিয়াল অ্যাডমিনিস্টিরিয়াল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট আছে সেখানে আরো সহযোগিতা বাড়াতে পারি কিনা সে বিষয়ে আলোচনা করেছি।

আমরা আলাপ আলোচনা করেছি বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান ও নেপালের মধ্যে সড়ক পরিবহনের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো সহজ করার জন্য। এ কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার বলে থাকেন। সৈয়দপুর বিমানবন্দর ও মোংলা বন্দর দুটোই নেপাল-ভুটান তাদের মালামাল পরিবহনের জন্য ব্যবহার করতে পারেন এ বিষয়েও আলোচনা করেছি। আমাদের আলোচনা সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। একইসঙ্গে নেপালের উপ-প্রধানমন্ত্রীকে আবারো বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছি।

তিনি এসেছেন শনিবার, চলে যাবেন সোমবার। তাই তাকে বলেছি এই সুন্দর বাংলাদেশ দেখার জন্য আরো বেশি সময় নিয়ে আসতে। তিনিও আমাকে নেপালে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আমিও একটি সময় নির্ধারণ করে নেপাল সফরে যাবো।

আইনমন্ত্রী বলেন, নেপালের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী শনিবার রাতে বাংলাদেশে এসেছেন। আজ তিনি আমার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এসেছেন। আমরা দুজনেই প্রথমে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করছি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নেপাল সরকার ও জনগণ যে অকুণ্ঠ সমর্থন আমাদের দিয়েছে সেটার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছি।

নেপালের উপ-প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে অত্যন্ত সুন্দর ও সুসম্পর্ক রয়েছে। আমাদের এই সম্পর্ক দিনদিন আরো ভালো হচ্ছে।

আজ বিচার ও আইন বিষয়ে খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। একইসঙ্গে জুডিশিয়াল অ্যাডমিনিস্টিরিয়াল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট সহযোগিতা প্রয়োজন হলে করা হবে। এছাড়া বাংলাদেশ থেকে নেপাল সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ও পরিবহন ব্যবস্থা চালু হলে উভয় দেশের জনগণ লাভবান হবেন বলেও জানান তিনি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!