• ঢাকা
  • বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

অবশেষে ভারমুক্ত হচ্ছে ভিকারুননিসা


নিজস্ব প্রতিবেদক সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯, ০১:০৬ পিএম
অবশেষে ভারমুক্ত হচ্ছে ভিকারুননিসা

ঢাকা : রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে নতুন অধ্যক্ষ ফওজিয়া রেজওয়ানের সরকার কর্তৃক নিয়োগ কেন আইন কর্তৃত্ব বহির্ভূত হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। তবে এতে তার অধ্যক্ষ পদে যোগ দিতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবি।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর)  সকালে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের অবকাশকালীন দ্বৈত বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রিট আবেদনকারী ড. ইউনুছ আলী আকন্দ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত।

এর আগে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ ভিকারুননিসায় বিশেষ কমিটি গঠন সংক্রান্ত বিধান চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ফওজিয়ার নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সোমবার তিনি সম্পূরক আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত আদেশের জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেন।

এসময় প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাজমুল ইসলাম খান। এর মধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিস থেকে হাইকোর্টের নির্দেশনা অবহিত করার পর তারা (সভাপতি ও নতুন অধ্যক্ষ) ফিরে যান।

আবেদনের পক্ষে তিনি নিজেই আদালতে শুনানি করেন ইউনুস আলী আকন্দ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত। ইউনুছ আলী আকন্দ প্রতিষ্ঠানটির একজন অভিভাবক। সর্বশেষ নিয়মিত গভর্নিং বডিতে তিনি অভিভাবক কোটায় সদস্য ছিলেন।

গত বছর প্রতিষ্ঠানের নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার পর উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মুখে ভিকারুননিসার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌসসহ তিন শিক্ষককে সরিয়ে দেয়া হয়। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান কলেজ শাখার সহকারী অধ্যাপক হাসিনা বেগম।

প্রতিষ্ঠানের পূর্ণকালীন অধ্যক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলে নিজে প্রার্থী হওয়ার জন্য দায়িত্ব ছেড়ে দেন হাসিনা বেগম। পরে প্রতিষ্ঠানেরই আরও দু’জন শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পান, তারা হলেন- কেকা রায় চৌধুরী ও ফেরদৌসী বেগম। এখন ফেরদৌসী বেগম ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে আছেন।

গত এপ্রিলে অধ্যক্ষ নিয়োগের প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত করা হয়। এতে আইডিয়াল স্কুল ও কলেজের ইংরেজির এক শিক্ষক অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগের লক্ষ্যে সুপারিশপ্রাপ্ত হন। কিন্তু স্কুলের একটি গ্রুপ অনিয়মের অভিযোগ তুলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মন্ত্রণালয় ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে।

রিটকারী ইউনুছ আলী বলছেন, ১৯৭৯ সালের শিক্ষক সার্ভিস রেগুলেশনস অনুযায়ী, ভিকারুননিসায় অধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষমতা গভর্নিং বডির হাতে। এ বিধান অনুসরণ না করে সরকার মাউশির একজন কর্মকর্তাকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। ফলে তা ‘আইনসম্মত হয়নি’।

তিনি বলেন, ‘সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইন ছাড়া কিছু করা যাবে না। কিন্তু সরকার আইন ছাড়াই প্রেষণে বা ডেপুটেশনে নিয়োগ দিয়েছে। ১৯৭৯ সালের শিক্ষক সার্ভিসেস রেগুলেশনসে প্রেষণে বা ডেপুটেশনে নিয়োগের বিধান নাই।’ ওই নিয়োগের আদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- সেই মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে আবেদনে।

রুল হলে তা বিচারাধীন অবস্থায় ওই নিয়োগ আদেশের ওপর স্থগিতাদেশও চাওয়া হয়েছে। শিক্ষা সচিব, ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান, ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ, ঢাকার জেলা প্রশাসকসহ ১১ জনকে এ আবেদনে বিবাদী করেছেন ইউনুছ আলী।

সোমবার তিনি শুনানিতে তার যুক্তি তুলে ধরার পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আইন দেখে তিনি কথা বলতে চান। সেজন্য সময় দরকার। এ সময় ইউনুছ আলী বলেন, মঙ্গলবার নতুন অধ্যক্ষের যোগদান করার কথা।

রাষ্ট্রপক্ষকে সময় দেয়া হলে তিনি হয়তো নতুন দায়িত্বে যোগ দিয়ে ফেলবেন। পরে আদালত বলেন, মঙ্গলবার বিষয়টি আদেশের জন্য থাকবে। আর নতুন অধ্যক্ষ মঙ্গলবার বেলা ১১টা পর্যন্ত যাতে যোগ দিতে না পারেন, রাষ্ট্রপক্ষ তা নিশ্চিত করবে।

ঢাকার ডিসিকে আইনি নোটিশ : এদিকে রোববার ঢাকার ডিসিকে একটি আইনি নোটিশ দিয়েছেন অ্যাড. ইউনুছ আলী আকন্দ।

তিনি চিঠি জারির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভিকারুননিসায় গভর্নিং বডি গঠনের লক্ষ্যে সৎ, যোগ্য ও অরাজনৈতিক একজন প্রথম শ্রেণির অফিসারকে প্রিসাইডিং অফিসার নিয়োগ অথবা ২০১৭ সালের ২২ এপ্রিলে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাচন পরিচালনাকারী তৎকালীন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেনকে প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ করেন।

সোনালীনিউজ/এএস

Wordbridge School
Link copied!