• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অবাধে মাছ নিধন, দেশি প্রজাতি বিলুপ্তির আশঙ্কা


ঝালকাঠি প্রতিনিধি আগস্ট ২৮, ২০১৮, ০৪:৪৩ পিএম
অবাধে মাছ নিধন, দেশি প্রজাতি বিলুপ্তির আশঙ্কা

ছবি: সোনালীনিউজ

ঝালকাঠি : ঝালকাঠির বিশখালী ও সুগন্ধাসহ সব নদ-নদীতে ছোট ফাঁসের জাল দিয়ে অবৈধভাবে মাছ ধরা হচ্ছে। এ ছাড়া চাঁই-বুচনা, (বাঁশের তৈরি ফাঁদ) কারেন্ট জাল, চাক জাল, বেহুন্দি জাল, গড়া জাল, বেড়া জাল ও ভাসা জাল দিয়েও উন্মুক্ত জলাশয় থেকে অবাধে মাছ ধরছেন পেশাদার ও মৌসুমী মৎস্য শিকারীরা।

ফলে মিঠা পানির অনেক দেশি প্রজাতির মাছ ইতিমধ্যেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। নিষিদ্ধ এসব ফাঁদ ও জাল ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা না হলে অচিরেই দেশি প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষেশজ্ঞরা।

এদিকে নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও বর্ষা মৌসুম এলেই দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন হাট-বাজারে ফাঁদ ও জাল বিক্রি বেড়ে যায়। এমনকি নিষিদ্ধ এসব পণ্য বিক্রির জন্য জেলায় অন্তত: ত্রিশটি প্রসিদ্ধ স্থান রয়েছে। যেখানে শুধু নিষিদ্ধ ফাঁদ ও জাল বিক্রি হয়। এসব ফাঁদ ও জালের ফাঁস আধা ইঞ্চি থেকে পৌনে এক ইঞ্চির মধ্যে। যা ব্যবহার মৎস্য সংরক্ষণ আইনে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

গত রবিবার ও সোমবার জেলার বিষখালী, সুগন্ধা, গাবখান, জাঙ্গালীয়া, হলতা নদ ঘুরে জেলেদের এসব নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করে মাছ ধরতে দেখা গেছে। তবে বেশিরভাগ জেলেই নদীতে কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জেলে জানান, হালকা ও বহনে সুবিধার জন্য কারেন্ট জাল ব্যবহার করি। এ জাল নদীতে ফেলা ও তোলা অনেক সহজ। তবে কারেন্ট জালে প্রয়োজনীয় মাছ ছাড়াও অনেক জলজ প্রাণির মৃত্যু হয়। এ ছাড়া বেহুন্দি জাল, গড়া জাল ও বেড়া জালে অনেক মাছের পোনা ধরা পড়ে যা বিক্রি বা খাওয়ার অযোগ্য।

তারা আরও জানান, কারেন্ট জাল ও ফাঁদ নিষিদ্ধ হলেও বাজারে অবাধে তা বিক্রি হচ্ছে। তাই আমরা কিনে তা সহজেই ব্যবহার করছি। জাল ও ফাঁদ ব্যবসায়ীদের কিছু হয় না। নদীতে অভিযান চালিয়ে আমাদের সবকিছু কেড়ে নিয়ে কারাদন্ড দেওয়া হয়।

ঝালকাঠি ও পিরোজপুর জেলাকে ভাগ করেছে আটঘর-কুড়িয়ানা খাল। এই খালে ভাসমান নৌকার হাটের পাশেই প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে প্রতি সপ্তাহের শুক্র ও সোমবার এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় চাঁই-বুচনা ও জাল বিক্রির হাট বসে। এ ছাড়া ঝালকাঠির রাজাপুর, নলছিটি ও কাঁঠালিয়া উপজেলায় অন্তত ৩০টি স্থানে এই মাছ ধরার ফাঁদ ও জাল প্রকাশ্যে বিক্রি হয়। একটি গোল চাঁই ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়। এ ছাড়া বড় আকারের একটি ময়ূরপঙ্খী বুচনা ৩০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হয়।

ভীমরুলি থেকে আটঘর হাটে আসা চাঁই বিক্রেতা সুমন মিয়া বলেন, ‘বর্ষা মৌসুম শুরু হলেই চাঁই-বুচনার চাহিদা বেড়ে যায়। তাই মৌসুম শুরুর আগেই বাঁশ সংগ্রহ করে চাঁই তৈরি শুরু করেন কারিগররা। ২০০-২৫০ টাকা মূল্যের একটি বাঁশ দিয়ে ৫ থেকে ৭টি ছোট চাঁই অথবা বড় আকারের ২-৩টি বুচনা তৈরি করা যায়। গ্রামের প্রতিটি পরিবারই চাঁই-বুচনা সংগ্রহে রাখেন।

অন্যদিকে ১৮ থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ পালন করা হচ্ছে। মৎস্য বিভাগের হিসাব অনুযায়ী দেশে মাছের উৎপাদন বেড়েছে। এ বছর ঝালকাঠিতে চাহিদার চেয়ে ৫৬০ টন মাছ বেশি উৎপাদিত হয়েছে বলে জানায় জেলা মৎস্য বিভাগ।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!