• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অব্যবস্থাপনায় জৌলুস হারাচ্ছে হাতিরঝিল


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ৭, ২০১৬, ১২:১৪ পিএম
অব্যবস্থাপনায় জৌলুস হারাচ্ছে হাতিরঝিল

রাজধানীর মানুষের বিনোদনের জায়গা হয়ে উঠেছে হাতিরঝিল। অব্যবস্থাপনায় নান্দনিকতা হারাচ্ছে ঝিলের স্থাপনাগুলো। বিশেষ করে ঝিলের পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে সৃষ্ট সংকটের সমাধান করা যাচ্ছে না। বিশেষ করে সোনারগাঁও হোটেলের পেছনটাতে বর্জ্য নিষ্কাশন প্লান্ট ব্যবহার করা যাচ্ছে না শতভাগ। এতে করে দুর্গন্ধ ও আবর্জনায় মজে থাকছে হাতিরঝিলের বেশির ভাগ এলাকা।  সঠিক পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কাজে আসছে না বিপুল ব্যয়ে কেনা উন্নতমানের এই প্লান্টগুলো। এতে মহানগরীর প্রাণকেন্দ্রে গড়ে ওঠা হাতিরঝিলের দূষণ যেমন রোধ হচ্ছে না, তেমনি এর প্রভাবে বাড়ছে আশপাশের পরিবেশসহ দর্শনার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি। এরই মধ্যে ১৬ ডিসেম্বর থেকে ঝিলের পানিতে ছুটে চলবে ওয়াটার ট্যাক্সি। তাতে করে এই ট্যাক্সিভ্রমণ কতটা আনন্দ আর স্বাস্থ্যসম্মত হবে তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। 

পরিবেশবাদীদের মতে, মূলত সমন্বয়হীনতার কারণেই পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না। বরং দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি প্রতিষ্ঠান রাজউক, ওয়াসা, সিটি করপোরেশন, বুয়েট ও সেনাবাহিনীর কর্তাব্যক্তিরা একে অন্যের ওপর দায় চাপিয়েই দায়িত্ব সারছেন। এতে ঝিলের পরিচ্ছন্নতায় বিপুল অর্থ ব্যয় করেও সফল হচ্ছে না  কোনো উদ্যোগ। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে দীর্ঘমেয়াদে বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে রাজধানীবাসীর স্বাস্থ্য নিরাপত্তা।  লেকটিতে আকারে বড়, শক্ত ও প্লাস্টিক জাতীয় ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের জন্য চারটি স্থানে মোট ১২টি ক্লিনিক্যাল স্ক্রিন মেশিন আছে। এছাড়া পানিতে মিশে থাকা তরল বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্যও রামপুরায় একটি বৃহৎ ইনটেরিয়াম পাম্পিং সিস্টেম মেশিন রয়েছে। কিন্তু এসব মেশিনের সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সঠিকভাবে বর্জ্য পরিষ্কার করা সম্ভব হচ্ছে না। 

উল্লেখ্য, চার বছর আগে রাজধানীবাসীকে বিনোদনের ছোঁয়া দিতে এক হাজার ৯৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ৩০২ একর জমির ওপর এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। গুলশান, রামপুরা, মগবাজার, বাংলামোটরসহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল নিয়ে ৩০২ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হাতিরঝিল লেকটি উদ্বোধনের সময়ে বলা হয়েছিল, এটিকে বিশ্বের বড় শহরগুলোর ঐতিহাসিক লেক বা নদীর মতো করে গড়ে তোলা হবে। যা রাজধানী ঢাকার সৌন্দর্য ও পরিচ্ছন্নতাকে বহুগুণে বৃদ্ধির পাশাপাশি যোগাযোগেরও অন্যতম মাধ্যম হয়ে কাজ করবে। তবে চার বছর পরে এসে দেখা যাচ্ছে, এখন স্বপ্নের সেই হাতিরঝিলই রাজধানীবাসীর অন্যতম প্রধান দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য যেসব মেশিন হাতিরঝিলে আছে তা ১০ দশমিক ৪৫ কোটি ঘনফুট বর্জ্য অপসারণ করতে সক্ষম। যা সঠিকভাবে কাজ করলে এ ঝিলের পানিতে কোনো ধরনের ময়লা থাকার কথা নয়। বরং এখানকার পানি নলকূপের পানির মতোই স্বচ্ছ থাকার কথা। তবে ব্যবস্থাপনার অভাব ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা আশা করি, এ ব্যাপারে সংশ্লিস্ট কর্র্তৃপক্ষ আরো দায়িত্ববান হবেন। 

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!