• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অভ্যন্তরীণ ঋণপত্র নজরদারির আওতায়


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ২৫, ২০১৯, ০১:১২ পিএম
অভ্যন্তরীণ ঋণপত্র নজরদারির আওতায়

ঢাকা : বৈদেশিক ঋণপত্রে (এলসি) কড়াকড়ি চলছে বেশ কিছুদিন ধরে। মূলত এটি জোরালো হয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আগে। তবে নির্বাচনের পর ডলার সঙ্কট থেকে পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। ডলার কম থাকায় চাহিদা মোতাবেক এলসি খুলতে পারছে না ব্যাংকগুলো। এমন পরিস্থিতির মধ্যে অভ্যন্তরীণ ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্র বা এলসির বিপরীতে অ্যাকসেসরিস সরবরাহের তথ্য যথাসময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনলাইন ব্যবস্থায় দিচ্ছে না অনেক ব্যাংক। অভ্যন্তরীণ এলসির এই চিত্র ঠেকাতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখানে শৃঙ্খলা জোরালো করতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, এতে বন্ড সুবিধা পেতে জটিলতায় পড়ছেন অ্যাকসেসরিস সরবরাহকারীরা। অনেক ক্ষেত্রে রফতানি পণ্য জাহাজীকরণে দেরি হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে যথাসময়ে তথ্য হালনাগাদ করতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা জানান, বন্ড সুবিধা দেওয়ার আগে অনলাইন ব্যবস্থায় তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ড্যাশ বোর্ডে তথ্য যাচাই করে বন্ড কমিশনারের কার্যালয়। এ জন্য যেকোনো ধরনের এলসি খোলার সঙ্গে সঙ্গে ড্যাশ বোর্ডে তথ্য হালনাগাদ করতে হয়। ব্যাংকগুলো বিদেশি এলসির ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক তথ্য হালনাগাদ করলেও অভ্যন্তরীণ এলসির ক্ষেত্রে তা না করায় সরবরাহকারীরা সমস্যায় পড়ছেন। এ সমস্যা থেকে বের হওয়ার জন্য ব্যাংকগুলোকে সতর্ক করা হলো।

বাংলাদেশ গার্মেন্ট অ্যাসসেসরিস অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএপিএমইএ) সভাপতি আব্দুল কাদের খান বলেন, স্থানীয় ব্যাক টু ব্যাক এলসির মাধ্যমে তৈরি পোশাক উৎপাদনে তারা সব ধরনের অ্যাকসেসরিস সরবরাহ করে থাকেন। ব্যাক টু ব্যাক এলসির বিপরীতে বন্ড সুবিধার জন্য বন্ড কমিশনার অফিসে আবেদন করলে সেখান থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ড্যাশ বোর্ডে তথ্য যাচাই করা হয়।

ব্যাংকগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্থানীয় এলসির তথ্য হালনাগাদ না করায় অনাকাঙ্ক্ষিত বিলম্বের শিকার হতে হয়। এ কারণে কখনো কখনো যথাসময়ে পণ্য জাহাজীকরণ সম্ভব হয় না। এ সমস্যা সমাধানের জন্য দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে বিজিএপিএমইএ। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে ব্যাংকগুলো দ্রুত তথ্য হালনাগাদ করলে তারা উপকৃত হবে।

২০১২ সালে এক নির্দেশনার মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্রসহ সব ধরনের বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন বিষয়ে অনলাইন রিপোর্টিং ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়। দেশের রফতানি বাণিজ্য প্রসারের সঙ্গে অ্যাকসেসরিস শিল্প প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বৃদ্ধির ফলে অভ্যন্তরীণ ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্রের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রায় লেনদেন বাড়ছে। অভ্যন্তরীণ ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্রের মাধ্যমে লেনদেনের ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনসংক্রান্ত নির্দেশনাসহ শুল্ক বা বন্ডসংক্রান্ত বিধিবিধান পরিপালনীয় হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনলাইন রিপোর্টিং ব্যবস্থায় সংরক্ষিত তথ্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করে।

তবে অভ্যন্তরীণ ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্র স্থাপনকারী ব্যাংক অনলাইন ব্যবস্থায় যথাসময়ে রিপোর্ট করে না বলে বাংলাদেশ ব্যাংক জানতে পেরেছে। পাশাপাশি ঋণপত্র সংশোধন করা হলে সে অনুযায়ী আগে রিপোর্ট সংশোধনের ব্যবস্থা নেওয়া হয় না বলেও অভিযোগ রয়েছে। অনলাইন ব্যবস্থায় অপূর্ণাঙ্গ তথ্যের কারণে ঋণপত্রের সুবিধাভোগীদের নানান সমস্যা হচ্ছে, দেশের সার্বিক রফতানি বাণিজ্য উন্নয়নের স্বার্থে, যা কাম্য নয়। এ রকম পরিস্থিতিতে সব অনুমোদিত ডিলার ব্যাংক শাখাকে অভ্যন্তরীণ ব্যাক টু ব্যাক ঋণপত্রের সার্বিক তথ্য যথাসময়ে অনলাইন ব্যবস্থায় রিপোর্ট করার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের ব্যাংকিং খাতে এক ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। নগদ টাকার টানাটানি দীর্ঘায়িত হচ্ছে। সেখান থেকে আবারো বাড়তে শুরু করেছে ব্যাংকঋণের সুদহার। বর্তমানে আবার ১৫-১৬ শতাংশ ঋণে বিনিয়োগের জন্য মূলধন নিতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!