• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সবচেয়ে বেশি আটক করেছে দুদক


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ২০, ২০১৬, ১২:৫৫ পিএম
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সবচেয়ে বেশি আটক করেছে দুদক

গত সপ্তাহে চট্টগ্রামে ঘুষ নেয়ার সময় বিটিসিএল’র তিন কর্মকর্তাকে আটক করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসময় তাদের কাছ থেকে কোটি টাকা মূল্যের এফডিআরের কাগজ ও সঞ্চয়পত্র জব্দ করা হয়। তারই কয়েকদিন আগে প্রায় ২৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সোনালী ব্যাংকের নারায়ণগঞ্জ শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক মো. আব্দুস সামাদকে গ্রেফতার করেছে দুদক।

এভাবেই গত মার্চ মাস থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনের জালে আটকা পড়েছেন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাসহ ২৪৫ জন অভিযুক্ত। আর এ পর্যন্ত গ্রেফতার হওয়া আসামিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আটক হয়েছেন অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে। এই অভিযোগে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন ১৬২ জন। 

এছাড়া, দলিলের রেকর্ডে নাম পরিবর্তন ও ভুয়া দলিল সাজানোর অভিযোগে গত ৫ মাসে ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভুয়া কাবিনের অভিযোগে ২ জন, অবৈধ লেনদেনের অভিযোগে ১ জন, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ৬ জন, অর্থ পাচারের অভিযোগে ৩ জন, জালিয়াতি করে প্লট পাইয়ে দেয়ার অভিযোগে ১ জন, দুদকের পরিচালক পরিচয়ে ভুয়া ভিজিটিং কার্ড ছাপানোর অভিযোগে ১ জন, ভুয়া ব্যাংক গ্যারান্টির অভিযোগে ২ জন, পাসপোর্ট প্রতারণার অভিযোগে ২ জন, জাল সনদ ও ভুয়া ঠিকানা দিয়ে চাকরি নেয়ার অভিযোগে ২৪ জন, সমবায় সমিতি, কোম্পানি ও সরকারের রাজস্বের টাকা ক্ষতিসাধনের অভিযোগে ৪ জন, অর্পিত সম্পত্তি নিজ দখলে নেয়ার অভিযোগে ১ জনকে গ্রেফতার করে দুর্নীতি দমন কমিশন। 

এছাড়া, গত ৫ মাসে আরো বেশকিছু অভিযোগে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিকে গ্রেফতার করে সংস্থাটি। এরমধ্যে সরকারের খাস জমি দখলের অভিযোগে ১ জন, মালামাল আত্মসাতের অভিযোগে ১ জন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্দকৃত চাল ও ভিজিএফের খাদ্য আত্মসাতের অভিযোগে ৩ জন, সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগে ৫ জন ও ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে ৫ জনকে আটক করে দুদক। 

সূত্র মতে, গত মার্চে বেসিক ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে রাজধানী থেকে ৫ জনকে গ্রেফতারের মাধ্যমে শুরু হয় দুদকের এই গ্রেফতার অভিযান। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে জনপ্রতিনিধিরাও রয়েছেন। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দুদকের পরিচালক, উপ-পরিচালক ও সহকারী উপ-পরিচালকের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে আটক হয়েছেন তারা। দুদকের সূত্র অনুযায়ী এপর্যন্ত সর্বোচ্চ সংখ্যক গ্রেফতার হয় এপ্রিল মাসে। ওই মাসে দুদকের পরিচালিত অভিযানে ৮৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। 

এছাড়া, মে মাসে ৭১ জন, জুন মাসে ৯ জন, জুলাই মাসে ২৯ জন এবং আগস্ট মাসে এ পর্যন্ত্ত ৪১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ মাসেই পাবনা জেলা থেকে ১৯ পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদে চাকরি নেয়ার অপরাধে ২০১৪ সালের ৬ই জানুয়ারি সিরাজগঞ্জ থানার একটি মামলার আসামি তারা। 

সম্প্রতি রাজধানীর মতিঝিল থেকে রূপসা সার্ভেয়াসের চিফ সার্ভেয়ার ও ম্যানেজিং পার্টনার মো. শাহজাহান আলীকে আটক করে দুদক। ২০১৫ সালের ২৩শে নভেম্বর পল্টন থানায় করা একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ৫৭ কোটি ৭২ লাখ ৩৩ হাজার ৬৪ টাকা আত্মসাতে সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে। অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে জীবন বীমা করপোরেশনের সাবেক ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার মো. নূরুল ইসলাম ভূঞাকেও ময়মনসিংহের খাগডহর বাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়।

এছাড়াও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ৩,৮৮,৯৬,৫০৪ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ থেকে মো. গোলাম ফারুক নামের একজনকে গ্রেফতার করে দুদক। দুদক সূত্র বলছে, গ্রেফতারকৃতদের অধিকাংশই অনেক আগের করা মামলায় আটক হয়েছেন। এরই মধ্যে নতুন অভিযোগের ভিত্তিতে বেশ কয়েকটি মামলা করেছে দুদক। শিগগিরই এসব মামলার অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা হবে। দুদক 

সূত্র জানায়, এ জন্য পাঁচ বছর মেয়াদী কৌশলগত একটি কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে দুদক। যাতে প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতার উন্নয়ন, কার্যকর তদন্ত ও অনুসন্ধান কার্যক্রম, কার্যকর বিচার প্রক্রিয়ার জন্য দৃঢ় প্রসিকিউশনসহ আটটি বিষয়ে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যসেবা খাত, বেসরকারি ব্যাংকসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সেবাখাত এর আওতায় থাকবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এএম

Wordbridge School
Link copied!