• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অর্থ ও সম্পত্তির লোভে ছেলে মাকে হত্যা করেছে


সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২০, ০৭:৩৬ পিএম
অর্থ ও সম্পত্তির লোভে ছেলে মাকে হত্যা করেছে

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জ শহরে রাশিদা খানম ওরফে নাজমা বেগম (৬৫) নামে এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। শহরের মুজিব সড়কের চৌরাস্তা মোড়ের পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন টিঅ্যান্ডটি কলোনিতে মঙ্গলবার সকালে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত রাশিদা খানম যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মরহুম তোজাম্মেল হক মাস্টারের স্ত্রী।

পুলিশ ও পরিবারের লোকজনের প্রাথমিক ধারণা, নিহতর পলাতক বড় ছেলে নাহিদ ইমরান লিয়ন (৩৫) অর্থ ও সম্পত্তির লোভে মাকে হত্যা করেছে। ঘটনার পর থেকে লিয়ন পলাতক রয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ আলামত হিসাবে রক্তমাখা একটি গরু জবাই করা ছুরি উদ্ধার করেছে।

নিহতের ছোট ভাই রানা খাঁন জানান, দুলাভাই মারা যাওয়ার পর থেকে বড় ছেলে লিয়ন, তার স্ত্রী নাইমা ইসলাম পিংকি ও ছোট ছেলে নাসিন ইমরানের স্ত্রী তাজরিন সুলতানা তুলিকে সঙ্গে থাকতেন তিনি। ছোট ছেলে নাসিন চাকরির সুবাদে ঢাকায় থাকেন। 

তিনি জানান, সকালে পিংকি তার স্বামী, শাশুড়ি এবং জাকে বাসায় রেখে ছেলেকে স্কুলে পৌঁছে দিতে যান। ফিরে এসে দেখেন শাশুড়ি রাশিদা খানমের গলাকাটা লাশ তার শয়ন কক্ষের বিছানায় পড়ে আছে। এ সময় তার চিৎকারে আশপাশের প্রতিবেশীরা ছুটে এসে ঘটনা দেখে পুলিশে খবর দেয়।

তিনি আরও জানান, পিংকি সকালে তার স্বামী লিয়নকে বাসায় রেখে বের হলেও পরে আর তার কোন খোঁজ পায়নি। লিয়ন একজন নেশাগ্রস্ত ও জুয়াড়ি। সম্প্রতি জুয়া খেলে তার অনেক টাকা ঋণ হয়েছে। এই টাকার জন্য প্রায়ই সে তার মায়ের কাছে অর্থ দাবি করে আসছিল। তার মা এ অর্থ দিতে অস্বীকার করলে তাকে বকাঝকা ও গালমন্দও করে। এ অবস্থায় এ দিন সকালে সে আবারও তার মায়ের কাছে অর্থ দাবি করে। তিনি এ অর্থ দিতে অস্বীকার করায় দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়।

সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম ও সদর থানা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আকতার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

পুলিশ সুপার হাসিবুল আলম সাংবাদিকদের জানান, এ হত্যাকাণ্ডের সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। এ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। ছুরিতে ঘাতকের হাতের ছাপ পাওয়া গেছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটন করা হবে। এ ছাড়া হত্যাকারীকেও অচিরেই গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আকতার জানান, আলামত জব্দ করে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সময় নিহতের বড় ছেলে লিওন বাড়িতেই ছিলেন। পরে তিনি পালিয়েছেন। এ ঘটনায় তাকে প্রাথমিক ভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে।

সদর থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) নূরুল ইসলাম জানান, লিয়নের স্ত্রী পিংকি ও নিহতর ছোট ছেলে নাসিন ইমরানের স্ত্রী তাজরিন সুলতানা তুলিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে সদর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সদর থানার ওসি আবু দাউদ জানান, এ ঘটনায় নিহতর পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ মামলা করতে আসেনি। তারা এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোনালীনিউজ/টিআই

Wordbridge School
Link copied!