• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আ. লীগ বাকশালের মতোই ১১ বছর যাবত শাসন চালাচ্ছে


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ২৫, ২০২০, ০৮:২২ পিএম
আ. লীগ বাকশালের মতোই ১১ বছর যাবত শাসন চালাচ্ছে

ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গড়া ‘বাকশাল’-এর মতোই গত ১১ বছর ধরে বাংলাদেশ এক দলীয় শাসন চলছে।

শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

২৫ জানুয়ারি ‘বাকশাল’ প্রতিষ্ঠার দিন উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে বিএনপি। এ সময় ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আজকে দেশে যা চলছে, তার জন্য মূলত দায়ী ১৯৭৫ সালের একদলীয় শাসন ‘বাকশাল’। আজকে যা চলছে, তা ওই ১৯৭৫ সালের একদলীয় শাসনের চিন্তা-চেতনা ও ধ্যান-ধারণার প্রতিফলন। বাকশাল গঠন করে স্বাধীনতার চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা— সবকিছু তারা ধূলিসাৎ করে দিয়েছিল। বাকশালের মতোই গত ১১ বছর ধরে দেশে এক দলীয় শাসন চলছে।

তিনি আরো বলেন, ১৯৭৫ সালের এই দিনে লাখো শহীদের রক্ত দিয়ে লেখা ১৯৭২ সালের সংবিধানকে চূর্ণ বিচূর্ণ করে আওয়ামী লীগ দেশ এক দলীয়, এক নায়কত্ব, কর্তৃত্ববাদী এবং ফ্যাসিবাদী একটি সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিল। এটা ছিল জাতির সঙ্গে সরাসরি বিশ্বাস ঘাতকতা। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক সংকটের জন্য দায়ী হলো ১৯৭৫ সালের বাকশাল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, পাকিস্তান সৃষ্টির পর টানা ২৪ বছর এ দেশের কোটি কোটি মানুষ সংগ্রাম করেছে, ত্যাগ স্বীকার করেছে, জুলম-অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছে। অবশেষে ঔপোনিবেশিক শাসন থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করার জন্য ১৯৫২ সালে মাতৃভাষার জন্য রফিক, শফিক, সালাম, বরকত, জব্বার জীবন দেয়। সেদিন থেকে বাঙালির অধিকার আদায়ের আন্দোলন শুরু হয়।

ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ১৯৫৪ সালে ঐক্যবদ্ধ বাঙালিরা তিন জাতীয় নেতা শেরেবাংলা একে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা সম্বলিত ২১ দফা দাবির পক্ষে পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীকে পরাজিত করে বিরাট বিজয় অর্জন করে। এর পর শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ৬৮ সালে আগরতলা মামলার মধ্য দিয়ে ১৯৬৯ সালের গণ অভ্যুত্থান, এ সবই ছিল সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার আন্দোলন।

তিনি আরো বলেন, এ দেশের মানুষ হাজার প্রতিকুল অবস্থার মধ্যেও কোনো দিন আপস করেনি। ১৯৭০ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে এ দেশের মানুষ গণতন্ত্র এবং ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য পূর্ব পাকিস্তানের ১৫৯টি আসনের মধ্যে ১৬৭ আসনে জয়যুক্ত করে সারা পাকিস্তানে জাতীয় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে সাহায্য করে। কিন্তু এই বিজয় পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী মেনে নিতে পারেনি। তারা বন্দুকের নল দিয়ে জনগণের রায়কে ছিনিয়ে নিতে চেয়ছে। অবশেষে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়।’

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, কিন্তু স্বাধীনতার মাত্র চার বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সংসদে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল কায়েক করে স্বাধীনতার মূল যে চেতনা বহুদলীয় গণতন্ত্র, সেটাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে ফেলা হয়। আজ সেই ২৫ জানুয়ারি। এই দিনটি বাংলাদেশের রাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। আজকে যারা তরুণ, তাদের কাছে হয়তো বিষয়টি সেভাবে আমরা তুলে ধরতে পারিনি। বিষয়টিকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই আজকের এই সংবাদ সম্মেলন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্যাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু ও শকত মাহমুদসহ নেতাকর্মীরা।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!