• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

আচ্ছা বাবা, আমাদের দেশে শান্তি ফিরবে কবে?


সাবরিন টুম্পা এপ্রিল ৪, ২০১৯, ০১:১৫ পিএম
আচ্ছা বাবা, আমাদের দেশে শান্তি ফিরবে কবে?

ঢাকা : বাবা! খুব জানতে ইচ্ছে করে। গোটা দেশের মানুষগুলো ভালো আছে তো! চারিদিকে শুধু আগুন আর আগুন। প্রথমে চকবাজার তারপর  বনানী আর এখন গুলশান। আচ্ছা বাবা শান্তির দেশে এতো আগুন কেন? খুব জানতে ইচ্ছে করে কেউ কি আসবে! আবারো এই দেশে শান্তি নিয়ে। ঠিক ওই মহান নেতার মতো!  

আচ্ছা বাবা! সেদিনের সেই পাগলটা, ওই  যে রাস্তায় পড়ে ছিলো, তাকে কেউ খেতে দিয়েছিলো তো! আচ্ছা রাস্তার ওই পথশিশুটার কি খবর? সে তার হারিয়ে যাওয়া বাবা মাকে খুঁজে পেয়েছে তো? খুব জানতে ইচ্ছে করে, যারা এতিম অসহায়  যাদের পৃথিবীতে বাবা মা নেই তাদের দায়িত্ব কে নেবে? সেদিন পত্রিকায় দেখেছিলাম ক্লাস ফোর এর ওই মেয়েটা ধর্ষনের কারনে অন্তঃসত্ত্বা। ও ওর সঠিক বিচার পাবে তো? আচ্ছা বাবা!

শুনেছি আমাদের দেশ অনেক আগেই স্বাধীন হয়েছে, তাহলে আমরা স্বাধীনভাবে চলতে পারিনা কেন? চারপাশে এতো আগুন  কেন? কেন এতো ধর্ষণ? বাবা আমিও যে একটা মেয়ে! আমিও ওদের ভয় পাই। বাবা! প্রতিবেশী দাদা দাদীরা এতো বড় ফ্লাট বাসা থাকতে বৃদ্ধাশ্রমে কেন? তাদের সন্তানেরা কোথায়? আচ্ছা বাবা যারা নির্মমভাবে মানুষ খুন করে তারা শাস্তি পায় না কেন? বাবা! পবিত্র ভালবাসার দামে মানুষ এখন নোংরা শরীর  কিনে তাই না! আচ্ছা বাবা! আমার বান্ধবী মিনা সেদিন যৌতুকের দায়ে মারা গিয়েছিল কেন?

বাবা, দেশ কি সত্যিই স্বাধীন? হা হা হা! এই দেশের মানুষ কতইনা আজব তাই না বাবা! এই দেশের মানুষ এতোই বিবেকবান যে, অসহায় মানুষেরা বিপদে পড়লে তারা এগিয়ে আসেনা। বরং তারা চেষ্টা করে একটা সেলফি নিয়ে ফেইসবুকে স্টাট্যাস দিয়ে ফেমাস হওয়ার জন্য। কিন্তু কেউ নাঈমের মতো সুপার হিরো হতে চায়না। বাবা তুমি শুনলে হয়তো হাসবে, ওরা অনেকেই নাঈমের মতো সুপারহিরো হতে পারেনি বলে আফসোস করেছিল। কারণ তাদের থেকে পাঁচ হাজার ডলার হাত ফসকে পড়ে গেল। হায় আফসোস! হায় মানুষ! উপরে মানুষ পুড়ছে আর নিচে মানুষেরা স্বপ্ন দেখছে। হায় দেশ! হায় মানুষ!

বাবা জানো! এই দেশে এখনো বেড়েই চলেছে অত্যাচার, খাদ্য ভেজাল, সুদ, ঘুষ আর প্রশ্নপত্র ফাঁস। সেদিন নির্বাচনে ভোট দিতে গিয়ে দেখি আমার ভোট দেওয়া হয়ে গিয়েছে। এতো সুবিধা তো আমরা কেউ চাইনি! আমরা চেয়েছি একটুখানি স্বাধীনতা। থাকবোনা এই দেশে। যেই দেশে স্বজন হারানোর ব্যথা কেউ বুঝে না। যেই দেশে ক্লাস ফোর এর মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা। থাকবোনা এই দেশে যেই দেশে দাউ দাউ করে আগুন চলে। যেই দেশে মানুষের বিবেকগুলো সেলফি তুলতে ব্যস্ত।

বাবা! আমি শেষ বারের মতো আবার জানতে চাই, বাবা আমি এ দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার আগে আরেকবার জানতে চাই এই দেশ কবে স্বাধীন হবে? কবে আবার এই বাংলার আকাশে স্বাধীনতার পতাকা উড়বে?

লেখক: শিক্ষার্থী

 

*** প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব ভাবনার প্রতিফলন। সোনালীনিউজ-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে লেখকের এই মতামতের অমিল থাকাটা স্বাভাবিক। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য সোনালীনিউজ কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না। এর দায় সম্পূর্ণই লেখকের।

Wordbridge School
Link copied!