• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আজ কোয়ারেন্টিন শেষ খালেদার, সাক্ষাৎ চান নেতারা


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ৮, ২০২০, ০১:৪০ এএম
আজ কোয়ারেন্টিন শেষ খালেদার, সাক্ষাৎ চান নেতারা

ঢাকা : বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হোম কোয়ারেন্টিন শেষ হচ্ছে বুধবার (০৮ এপ্রিল)।  

গত ২৫ মার্চ বিএসএমএমইউ হাসপাতাল থেকে খালেদা জিয়া মুক্তি পেয়ে গুলশানের বাসভবনে ফিরোজায় ওঠেন। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকিতে ২৬ মার্চ থেকে তার হোম কোয়ারেন্টি শুরু হয়। সেই হিসাবে ৮ এপ্রিল (বুধবার) ১৪ দিন পূর্ণ হবে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শারীরিক অবস্থার তেমন উন্নতি না হলেও, মানসিকভাবে আগের তুলনায় ভালো আছেন খালেদা জিয়া। এখনো তিনি হুইল চেয়ারে চলাফেরা করছেন। নতুন করে কোনো রোগ হয়নি। তবে পারিবারিক পরিবেশে থাকার কারণে দিন-দিন মানসিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। খাবারের প্রতি রুচিও কিছুটা বেড়েছে। বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়েদা রহমানের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে। তিনি কোয়ারেন্টিনে থাকার কারণে শুধুমাত্র নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে বোন সেলিমা ইসলাম এবং ভাইয়ের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা এবং ব্যক্তিগত ডাক্তাররা তাকে দেখতে গেছেন।

খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম বলেন, বুধবার খালেদা জিয়ার কোয়ারেন্টি শেষ হবে। তার শরীরের অবস্থা ভালো না। এখনও দাঁড়াতে বা হাঁটতে পারছেন না। এক কথায় তার শরীরের অবস্থা আগের মতোই আছে। তেমন কোনও উন্নতি হয়নি। তবে মানসিক অবস্থা আগের চাইতে একটু ভালো।

তিনি আরও বলেন, তার চিকিৎসা চলছে। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে পরবর্তীতে অন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারপক্ষে এখনও কোথাও মুভ করা সম্ভব নয়।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসক দলের সদস্য বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন  বলেন, ডা. জোবায়েদা রহমানের তত্ত্বাবধায়নে ম্যাডামের চিকিৎসা চলছে। তার আগের চিকিৎসার সঙ্গে মিল রেখে কিছুটা পরিবর্তন করে নতুন চিকিৎসা হচ্ছে। আগে তো তার নিয়মিত ফলোআপ হতো না, এখন সেটা নিয়মিত হচ্ছে। দুই বছরের বেশি সময় তিনি অসুস্থ, সেখানে থেকে অবস্থার পরিবর্তনের জন্য তার আধুনিক চিকিৎসার প্রয়োজন। তবে বর্তমান সামগ্রিক পরিস্থিতি মাথায় রেখে আমরা তার চিকিৎসা শুরু করেছি।

এদিকে কোয়ারেন্টিনে থাকার কারণে মুক্তির পর দলের অনেক নেতাই চেয়ারপারসনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেননি। কোয়ারেন্টিন মেয়াদ শেষ হলে সীমিত পরিসরে তার সঙ্গে দেখা করতে চান দলের সিনিয়র নেতারা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতারা বলছেন, আমরা নিজেরাও সবাই এখন স্বেচ্ছায় হোম কোয়ারেন্টিনে আছি। তারপরও খালেদা জিয়ার হোম কোয়ারেন্টিন শেষ হলে সীমিত পরিসরে তার সঙ্গে দেখা করতে যাব। যদিও এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে ম্যাডামের ইচ্ছার ওপরে।

আগামী শনিবার (১১ এপ্রিল) দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে হলে সেখানে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। কারণ খালেদা জিয়া এখনও পুরোপুরি পরিবারের তত্ত্বাবধায়নে রয়েছেন। সেখানে দল কীভাবে তার চিকিৎসা বা অন্যান্য বিষয়ে সহযোগিতা করতে পারে সেটা তারও চিন্তাভাবনার দরকার আছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, ম্যাডামের মুক্তির পর আমরা কয়েকজন তাকে দেখতে গিয়েছিলাম। স্থায়ী কমিটির কয়েকজন এখনো তার সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। স্বাভাবিকভাবে তার হোম কোয়ারেন্টিন শেষ হলে আমরা দেখতে যেতে পারি। তবে তিনি বা ডাক্তাররা এ বিষয়ে কী বলেন তার ওপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

এই নেতা আরও বলেন, ম্যাডাম মুক্তি পেয়েছে এতেই খুশি। কারণ তিনি কারাগারে যাওয়ার পর থেকে তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে। অনেক সময় তাদের ঘিরেই দলের রাজনীতি চলতে থাকে। এখন কিছুটা হলেও সেই অবস্থার পরিবর্তন হবে।

এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সূত্রে জানা গেছে, সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে খালেদা জিয়ার এইভাবে মুক্তিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কয়েকজন নেতা অন্তুষ্ট। কিন্তু এখানে বিএনপির কিছু করার নেই। কারণ তার মুক্তির বিষয়ে পরিবার সরকারের সঙ্গে সমোঝাতা করেছে, এখানে দলের কোনো ভূমিকা ছিল না।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!