• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

আজ শহীদ জননী জাহানারা ইমামের মৃত্যুবার্ষিকী


নিউজ ডেস্ক জুন ২৬, ২০১৯, ১২:৪৬ পিএম
আজ শহীদ জননী জাহানারা ইমামের মৃত্যুবার্ষিকী

শহীদ জননী জাহানারা ইমাম

ঢাকা : শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ বুধবার। ১৯৯৪ সালের ২৬ জুন না ফেরার দেশে পাড়ি জমান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার এই সেনানী। জাহানারা ইমাম মুক্তিযোদ্ধার গর্বিত মা, বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও সংগঠক ছিলেন। তার নেতৃত্বেই গত শতকের নব্বইয়ের দশকে গড়ে

ওঠে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলন। ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ব্যানারে করা সেই আন্দোলনই নতুনভাবে দেশের মানুষকে জাগিয়ে তোলে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে। যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকারদের বিচারে আনার জন্য জাহানারা ইমামের ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। মুক্তিযুদ্ধ সময়ের ডায়েরি একাত্তরের দিনগুলি তার এক অনন্য সৃষ্টি।

১৯২৯ সালের ৩ মে অবিভক্ত বাংলার মুর্শিদাবাদ জেলার সুন্দরপুর গ্রামে জাহানারা ইমাম জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলায় তার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল আলীর তত্ত্বাবধানে তিনি রক্ষণশীলতার বাইরে এসে আধুনিক শিক্ষা শুরু করেন। স্বামী প্রকৌশলী শরীফ ইমামও তাকে লেখাপড়ায় অনুপ্রেরণা দিয়েছেন।

১৯৪৫ সালে কলকাতার লেডি ব্রাবোর্ন কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাইভেট পরীক্ষার্থী হিসেবে বাংলায় এমএ পাস করেন।  তার কর্মজীবন শুরু হয় শিক্ষকতার মাধ্যমে। ১৯৫২ থেকে ১৯৬০ পর্যন্ত তিনি সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন। এর পর ফুলব্রাইট স্কলার হিসেবে তিনি আমেরিকা থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়ে ১৯৬৬ সালে ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৬৮ সালে তা ছেড়ে দিয়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ছেলে রুমী ও স্বামীকে হারান।
মুক্তিযুদ্ধে ছেলে রুমীর আত্মত্যাগ এবং নিজের অবদানের জন্য আখ্যায়িত হন শহীদ জননী হিসেবে। ১৯৯২ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির আহ্বায়ক হন। এ সময় একাত্তরের ঘাতক ও দালালদের বিচারের দাবিতে গড়ে তোলা হয় গণআদালত। অসুস্থ অবস্থায়ও তিনি একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কার্যক্রমে উৎসাহ দিয়ে এসেছেন। ১৯৯৪ সালের ২৬ জুন দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান স্টেটের ডেট্রয়েট শহরের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।

তার রচিত উল্লেখযোগ্য কিছু গ্রন্থ- গজকচ্ছপ (১৯৬৭), সাতটি তারার ঝিকিমিকি (১৯৭৩), বিদায় দে মা ঘুরে আসি (১৯৮৯), জাগ্রত ধরিত্রী (১৯৬৮), তেপান্তরের ছোট্ট শহর (১৯৭১), নদীর তীরে ফুলের মেলা (১৯৬৬), বীরশ্রেষ্ঠ (১৯৮৫), একাত্তরের দিনগুলি (১৯৮৬), অন্য জীবন (১৯৮৫), জীবন মৃত্যু (১৯৮৮), শেক্সপীয়রের ট্রাজেডি (১৯৮৯), নিঃসঙ্গ পাইন (১৯৯০), বুকের ভিতরে আগুন (১৯৯০), নাটকের অবসান (১৯৯০), দুই মেরু (১৯৯০), প্রবাসের দিনলিপি (১৯৯২), ক্যান্সারের সঙ্গে বসবাস (১৯৯১)। জাহানারা ইমাম বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পুরস্কার/পদকে ভূষিত হন- বাংলাদেশ লেখিকা সংঘ সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৮), কমর মুশতরী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৮), বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯১), আজকের কাগজ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মুক্তিযোদ্ধা পুরস্কার (বাংলা ১৪০১ সনে), নারী গ্রন্থ প্রবর্তনা (১৯৯৪), স্বাধীনতা পদক (১৯৯৭), রোকেয়া পদক (১৯৯৮),  অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার (২০০১) ইত্যাদি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!