চিঠি কেন আসে না,
আর দেরি সহে না,
ভুলেছ কি তুমি আমাকে...
১৯৯৩ সালে 'প্রিয় শত্রু' সিনেমায় প্রসেনজিতের সাথে এই গানটিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি। পরিচিত হয়েছিলেন ওপার বাংলায়। আর দেশে অভিনয় করেছেন অসংখ্য সিনেমায়। বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম সাড়া জাগানো জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীর নাম পারভীন সুলতানা দিতি।
দেশীয় চলচ্চিত্রে দিতির আগমন ঘটে ১৯৮৪ সালে নতুন মুখের সন্ধানের মাধ্যমে। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র উদয়ন চৌধুরী পরিচালিত ‘ডাক দিয়ে যাই’ হলেও সেটি অনিবার্য কারণে মুক্তি পায়নি। দিতি অভিনীত মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র ছিল আজমল হুদার ‘আমিই ওস্তাদ’। এরপর দিতি প্রায় দুই শতাধিক ছবিতে কাজ করেছেন।
একের পর এক সিনেমায় অভিনয় করে নিজেকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া এই অভিনেত্রীর অভিনীত সিনেমাগুলো হচ্ছে- হীরামতি, দুই জীবন, ভাই বন্ধু, উছিলা, লেডি ইন্সপেক্টর, খুনের বদলা, আজকের হাঙ্গামা, স্নেহের প্রতিদান (১৯৯৯), শেষ উপহার, চরম আঘাত, স্বামী-স্ত্রী, অপরাধী, কালিয়া, কাল সকালে(২০০৫, মেঘের কোলে রোদ (২০০৮), আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা (২০০৮), মুক্তি (২০১৪), কঠিন প্রতিশোধ (২০১৪), তবুও ভালোবাসি (২০১৩), পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী (২০১৩), হৃদয় ভাঙ্গা ঢেউ (২০১১), মাটির ঠিকানা (২০১১), নয় নম্বর বিপদ সংকেত (২০০৭) দূর্জয় (১৯৯৬) সুইট হার্ট, ধূমকেতু (নির্মানাধীন)।
অসংখ্য নাটক টেলিফিল্মেও অভিনয় করেছেন দিতি। নাটক পরিচালনার পাশাপাশি রান্নাবিষয়ক অনুষ্ঠানও উপস্থাপনা করেছেন। অভিনয়ের বাইরে মাঝে-মধ্যে গান গাইতেও দেখা গেছে তাকে। প্রকাশিত হয়েছে তার একক গানের অ্যালবামও। বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি।
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীকে ভালোবেসে বিয়ে করে সংসার বেঁধেছিলেন দিতি। তাদের সংসারে লামিয়া ও দীপ্ত নামের দুই সন্তান রয়েছে। সোহেল চৌধুরীর মৃত্যুর পর চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের সাথে তার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। কিন্তু সে বিয়েও খুব বেশিদিন টেকেনি।
১৯৬৫ সালের ৩১ মার্চ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে জন্মগ্রহণ করেন গুণী এই অভিনয়শিল্পী। মাত্র ৫১ বছর বয়সে ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হন তিনি। বেশ কিছুদিন অসুস্ততায় ভুগে ২০১৬ সালের ২০ মার্চ প্রয়াত হন অভিনেত্রী দিতি। সদা হাস্যোজ্জ্বল এ নায়িকার অসময়ে চলে যাওয়া চলচ্চিত্র অঙ্গন থেকে শুরু করে দর্শক-ভক্তরাও সহজে মেনে নিতে পারেননি। আজও দিতির স্মৃতি সবার মাঝে অম্লান।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :