• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
তিস্তায় হঠাৎ পানি বৃদ্ধি

আতংকিত দুই পাড়ের মা‍নুষ, খুলে দেওয়া হয়েছে জলকপাট


লালমনিরহাট প্রতিনিধি সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯, ০৪:৪৬ পিএম
আতংকিত দুই পাড়ের মা‍নুষ, খুলে দেওয়া হয়েছে জলকপাট

লালমনিরহাট : উজানের পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনের ভারি বর্ষণে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। খুলে দেওয়া হয়েছে সব'কটি জলকপাট। ফলে শুকিয়ে যাওয়া তিস্তা আবারও চিরচেনা আপন রূপ ফিরে পেলেও আতংকিত হয়ে পড়েছে।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটর। যা (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সে.মি) বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এর আগে গত সপ্তাহজুড়ে বিপদসীমার ৩৫/৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও গত সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে হঠাৎ বাড়তে থাকে তিস্তার পানি প্রবাহ। যা ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়ে পরদিন মঙ্গলবার বিকেলে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, উজানের পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনের বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে শুকিয়ে যাওয়া মৃত প্রায় তিস্তা আবারও ফুলে ফেঁপে উঠে ফিরে পেয়েছে চিরচেনা রূপ। হেঁটে পারি দেওয়া তিস্তায় চলতে শুরু করেছে নৌকা। হাঁকডাক বেড়েছে মাঝি মাল্লাদের। কর্মব্যস্ততা দেখা দিয়েছে তিস্তাপাড়ের জেলে পরিবারে।

এদিকে হঠাৎ তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি দেখে লালমনিরহাটের তিস্তার দুই পাড়ের মানুষ বন্যার আশঙ্কায় আতংকিত হয়ে পড়েছে। তবে বন্যা সতর্কিকরণ কেন্দ্রের দাবি বৃষ্টির কারণে উজানের ঢেউ ও এ অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের ফলে পানি তিস্তায় পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেলেও বন্যার আশঙ্কা নেই। বৃষ্টি কমে গেলেই তিস্তার পানি প্রবাহ কমতে শুরু করবে।

তবে হঠাৎ তিস্তায় পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলের সবজি চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করা কৃষকরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তাদের পুনরায় জমি প্রস্তুত করে ফসল বুনতে হবে। তবে আগাম সবজি চাষ করা কৃষকরা সব থেকে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তাদের সবজি ক্ষেত ডুবে গেছে।

আদিতমারী উপজেলার গোবর্দ্ধন পাসাইটারী তিস্তা চরাঞ্চলের কৃষক মানিক মিয়া জানান, নদীর কিনারে জেগে উঠা ৩ দোন (২৭ শতাংশে দোন) জমিতে আগাম জাতের আমন ধান রোপণ করেন তিনি। সেই আমন ক্ষেতে কিছু অংশ নদী ভাঙনে বিলীন হলেও বাকি অংশ পানিতে ডুবে আছে। দ্রুত পানি নেমে গেলে ধান ক্ষেতের উপকার হবে। কিন্তু বেশি সময় ডুবে থাকলে ধানক্ষেত পচে নষ্ট হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

হাতীবান্ধা উপজেলার পাটিকাপাড়া ইউনিয়নের চর হলদিবাড়ি গ্রামের আব্দুর রহমান ও আনেচ আলী জানান, তিস্তা শুকিয়ে যাওয়ায় চরাঞ্চলের জমিতে তামাকসহ বিভিন্ন সবজি চাষের জন্য জমি তৈরি করে রেখেছেন তারা। কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে তারা সবজি বীজ বপন করেননি। এরই মধ্যে পানি বৃদ্ধি পেয়ে জমি ডুবে গেছে। তাই তাদের ব্যস্ততাও কমে গেছে। পানি নেমে গেলে আবারও জমি কর্ষণ দিয়ে সবজি বীজ বপন করা হবে বলেও জানান তারা।

দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ গত সোমবার রাত থেকে বাড়তে থাকে। গতকাল মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আপাতত সবগুলো জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে রাতে আবারও পানি প্রবাহ কমে যেতে পারে বলে জানান তিনি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!