• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আতিকুলকে ১০ পরামর্শ প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের স্ত্রী রুবানার


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ২২, ২০২০, ০৫:৫১ পিএম
আতিকুলকে ১০ পরামর্শ প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের স্ত্রী রুবানার

ঢাকা: ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের স্ত্রী ও বিজিএমইএ'র সভাপতি রুবানা হক আসন্ন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলামকে ঢাকার কতিপয় সমস্যা উল্লেখ করে ১০টি সুনির্দিষ্ট পরামর্শ দিয়েছেন।

তিনি আতিকুল ইসলামের কাছে সেরা সাফল্য চেয়ে নারীবান্ধব শহর, নারীদের জন্য পাবলিক টয়লেট, ঢাকাকে ঢেলে সাজানো, জলাশয় পুনরুদ্ধার, ঢাকায় হাঁটার জায়গা, বায়ুদূষণ বন্ধে কনস্ট্রাকশন সাইটে নজর দেওয়া, মেয়রের সঙ্গে সম্পৃক্ত ২৬টি সংগঠনকে এক সুতায় গাঁথা, পলিথিনমুক্ত ঢাকা, পর্যাপ্ত মাঠ করার পরামর্শ দেন রুবানা। এছাড়া তোষামোদির ছোবলে নিজেকে নষ্ট না করার এবং আনিসুল হকের সঙ্গে তুলনা করলে মন খারাপ না করার পরামর্শ দেন তিনি।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর রাওয়া কনভেনশন হলে 'শহর নিয়ে ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা' শীর্ষক সভায় তিনি তার বক্তব্যে এই পরামর্শ দেন।

আতিকুল ইসলামকে পথভ্রষ্ট না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে রুবানা হক বলেন, আমি কখনও আনিসের পাশে তোষামোদি করার জন্য অনেক লোক জমা হতে দেইনি। আমি কোনোদিন তোষামোদকারীদের আনিসের কাছে ভিড় করতে দেইনি। আতিক ভাই আমাদের খুব শ্রদ্ধার, তাকে যেন আমরা কেউ নষ্ট না করি। আমরা কিন্তু অহেতুক তোষামোদি করি। বড় নেতার পাশে সমানে দাঁড়িয়ে থেকে তাকে কিন্তু পথভ্রষ্ট করি। এই জায়গায় আতিক ভাইয়ের প্রতি আমার অনুরোধ, আপনি কাউকে নষ্ট করতে দিয়েন না। কারণ, আপনি এখন যা করছেন তা কিন্তু ইতিহাস হয়ে থাকছে। কাজেই আপনি পথভ্রষ্ট হবেন না। কারও তোষামোদিতে তলিয়ে যাবেন না। আশা করি আপনি তোষামোদির শিকার হবেন না।

ঢাকার কয়েকটি সমস্যা তুলে ধরে রুবানা হক বলেন, নারীর জন্য এই শহর নিরাপদ না। নারীর জন্য শুধু শহর না, কর্মপরিবেশ নিরাপদ না। একজন নারী হিসেবে আমি আশা করি, নারী যেন কখনোই কোনও অবস্থায় বিব্রত বোধ না করে। আমরা কিন্তু অসহায়ত্বের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাই। কোনও নারীকে অপমান করার আগে ১৪ বার চিন্তা করা উচিত। আপনারা চিন্তা করেন না এবং আমরা কিন্তু ক্ষমা করি না। নারীদের জন্য কিন্তু এই শহরে পর্যাপ্ত পরিমাণ পাবলিক টয়লেট নেই। আমরা যেন এগুলো ভুলে না যাই।

ঢাকাকে ঢেলে সাজাতে স্বপ্ন দেখার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ঢাকাকে ঢেলে সাজাতে হলে আপনাকে প্রথমে স্বপ্ন দেখতে হবে। আমাদের কারও কথা শোনার প্রয়োজন নেই। আপনি যথেষ্ট বিচক্ষণ মানুষ, আপনি জানেন ঢাকার জন্য কী করতে হবে। কারও কথা না শুনে আপনি জলাশয়গুলো পুনরুদ্ধার করবেন। অন্তত পক্ষে যানবাহনের জায়গায় আপনি মনোযোগ দেবেন অনেক বেশি। আমরা সবাই কিন্তু ঢাকায় হাঁটতে চাই। কিন্তু, আমরা কেউ হাঁটতে পারি না। ঢাকায় হাঁটতে গেলেই দেখি এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে দূষণের মাত্রা ভয়াবহ। কোথা থেকে এতো দূষণ হয়? কনস্ট্রাকশন সাইট থেকে হয়, ওইখানে একটু নজর দিয়েন ভাই। আপনি একটু উদ্যোগ নিলে কনস্ট্রাকশন সাইটগুলো থেকে বায়ু দূষণ কমানো যাবে। আমরা ওয়ানস্টপ সার্ভিস চাই, আমি জানি আপনি ২৬টি সংগঠনের ওপর নির্ভরশীল, কিন্তু আপনি চাইলে সবাইকে এক সুতায় গাঁথতে পারেন। গাঁথার চেষ্টাটি করুন। আমরা বলছি পলিথিনমুক্ত ঢাকা চাই, কিন্তু কোথায় হচ্ছে? বনানী লেক পরিষ্কার ছিল, আবার নোংরা হচ্ছে। কেউ দায়িত্ব নিচ্ছে না। এক মেয়র কী করবেন! আমাদের দায়িত্ববোধের জায়গা কিন্তু স্পষ্ট করতে হবে। আমরা তখনই দায়িত্ববোধের জায়গাতে স্পষ্ট হবো যখন দেখবো আমরা সবাই খুশি।

আনিসের সঙ্গে আতিকুল ইসলামকে তুলনা না করার পরামর্শ দিয়ে রুবানা বলেন, দয়া করে আপনার বারবার আতিক ভাইয়ের সঙ্গে আনিসের (আনিসুল হক) তুলনা বাদ দেবেন । একেকজন মানুষ একেকরকম, কায়দা একেকরকম, ভঙ্গি একেকরকম। ঢাকা সিটি করপোরেশন চালানো কী জিনিস সেই অভিজ্ঞতা আমার এবং আমার সন্তানদের আছে। এত সহজ না। প্রচুর দুর্নীতি আছে, প্রচুর অক্ষমতা আছে। এগুলো প্রত্যেকটি মাথায় নিয়ে আনিস কাজ করেছে। কে বলে অল্প সময়ে বদলায় জীবন বা শহর? সব বদলায়, চাইলেই বদলায়। জয়ের স্লোগান যখন তুলবো তখন দাবির স্লোগান তুলতে হবে। আমরা আশা করি উনি সবকিছু বদলে দেবেন।

আজকে হয়তো আমাদের মাঠ নেই, কিন্তু প্রচুর লোকালয় আছে। এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়ি রুটি হালুয়া যেত, সব সংস্কৃতি চলে গেছে। সবাই আমরা এত বৈরিতায় ব্যস্ত, যে সমস্ত মৌলিক জায়গা আমাদের সব হারিয়ে গেছে। মাঝখানে আতিক ভাই শুরু করেছিলেন, রাস্তা বন্ধ করে সবার হাঁটা। আপনি আপনার নিজের জায়গায় নিজ শক্তি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবেন। কেউ আনিসের সঙ্গে আপনার তুলনা করলে মন খারাপ করবেন না। আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব হবে তাকে পথভ্রষ্ট না করা।

এসময় উপস্থিত ছিলেন মেয়র প্রার্থী অতিকুল ইসলাম, বিকেএমইএ'র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাতেম আলী, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ, মহিউদ্দিন আহমেদ, বিজিএমইএয়ের সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান , ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান সিনহা প্রমুখ।

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School
Link copied!