• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আদালতে অঝোরে কাঁদলেন রিফাতের মা


আদালত প্রতিবেদক জানুয়ারি ১০, ২০২০, ১২:৩৯ পিএম
আদালতে অঝোরে কাঁদলেন রিফাতের মা

ঢাকা : বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দ্বিতীয় দিন আদালতে সাক্ষ্য দেন রিফাতের মা ডেইজি বেগম। একই দিন এ মামলায় সাক্ষ্য দেন রিফাতের বোন ইসরাত জাহান মৌ ও চাচাতো বোন নুসরাত জাহান অনন্যা।

বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান তাদের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তিন সাক্ষীকেই জেরা করেন আসামিপক্ষের সাত আইনজীবী।

আদালত সূত্র জানায়, জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে রিফাত হত্যা মামলার সাক্ষ্য দেয়ার সময় অঝোরে কেঁদেছেন নিহত রিফাতের মা ডেইজি বেগম। এ সময় তাকে শান্ত থাকতে বলেন বিচারক, সেই সঙ্গে সাক্ষ্যগ্রহণ থামিয়ে তাকে শান্ত হওয়ার সময় দেয়া হয়।

কিছুটা শান্ত হওয়ার পর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এবারও ছেলে হারানোর বর্ণনা দিতে গিয়ে কাঁদতে কাঁদতে আদালতে মূর্ছা যান রিফাতের মা ডেইজি বেগম।

এর আগে বুধবার (০৮ জানুয়ারি) রিফাত হত্যা মামলার প্রথম সাক্ষ্যের দিন প্রথমে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে আদালতে অঝোরে কাঁদেন রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ। ওই দিন মূর্ছা যান তিনিও। তাকে শান্ত থাকতে বলার পাশাপাশি সাক্ষ্যগ্রহণ থামিয়ে দুবার স্বাভাবিক হওয়ার সময় দেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত প্রাঙ্গণ ত্যাগের সময় সন্তান হারানোর শোকে কাতর এবং বিমর্ষ হয়ে যান রিফাতের মা ডেইজি বেগম। তাকে দুজন স্বজন ধরে গাড়িতে তুলে দেন।

আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রিফাতের বোন ইসরাত জাহান মৌ বলেন, আমার একমাত্র বড় ভাইয়ের হত্যা মামলায় আমি আদালতে সঠিক সাক্ষ্য দিয়েছি। মিন্নির যে নয়ন বন্ডের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল, এটি আমরা জানতাম না। আমার ভাই মারা যাওয়ার পর এ বিয়ের কথা জানতে পেরেছি আমরা।

ইসরাত জাহান মৌ বলেন, মারা যাওয়ার চার-পাঁচদিন আগ থেকে মিন্নির সঙ্গে কলহ শুরু হয় রিফাতের। মিন্নির অবৈধ সম্পর্কের জেরে এই কলহ শুরু হয়। আমি ভাইয়ের হত্যাকারীদের বিচার চাই, দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই খুনিদের।

একের পর এক আসামির জামিন হওয়ার ক্ষুব্ধ মৌ বলেন, আদালতের কাছে আমাদের প্রার্থনা থাকবে যাতে অপরাধীরা আর জামিন না পায়। এভাবে অপরাধীদের জামিন হলে আমাদের হৃদয়ের রক্তক্ষরণ আরও বাড়বে।

এ বিষয়ে রিফাত শরীফ হত্যা মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মুজিবুল হক কিসলু বলেন, রিফাত হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দ্বিতীয় দিনে রিফাতের মা ও একমাত্র বোন এবং চাচাতো বোন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাদের জেরা করেন। সাক্ষ্য দিতে গিয়ে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন রিফাতের মা ডেইজি বেগম। তাকে বারবার শান্ত হওয়ার পাশাপাশি স্বাভাবিক থাকার জন্য সময় দেন আদালত।

তিনি বলেন, এরপরও আদালতে রিফাত হত্যার বর্ণনা সঠিকভাবে দিতে পেরেছেন ডেইজি বেগম। হত্যার সঠিক বর্ণনা দিয়েছেন রিফাতের দুই বোনও। আগামী ১৪ জানুয়ারি এ মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আদালত।

গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়। এরপর গত ১ সেপ্টেম্বর বিকেলে ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক; দুই ভাগে বিভক্ত করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পুলিশ। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জন।

গত ১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালত। ৮ জানুয়ারি এ মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনার শিশু আদালত।

এ মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক আসামি মো. মুসা এখনো পলাতক। এছাড়া নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ চারজন আসামি জামিনে রয়েছেন। অন্য আসামিরা কারাগারে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!