• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আমরা রহমতের কতটুকু অংশীদার হতে পারলাম


 ধর্মচিন্তা ডেস্ক মে ১৬, ২০১৯, ০৪:২৩ পিএম
আমরা রহমতের কতটুকু অংশীদার হতে পারলাম

ঢাকা: আমরা রহমতের কতটুকু অংশীদার হতে পারলামমোহাম্মদ নূরুল মোস্তফা : দেখতে দেখতে আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গেল রহমতের প্রথম দশক। আজ দিন শেষে সূর্য অস্ত গেলে মাহে রমজানের রহমত দশকের সমাপ্তি হয়ে শুরু হবে মাহে রমজানের মাগফিরাতের দশক। রহমত না পেলে মাগফিরাত লাভের আশা করা যায় না, আবার মাগফিরাত না ফেলে নাজাতের আশা করা যায় না। বুঝা গেল, রমজানের প্রতিটি আমল একটির সাথে অন্যটি সম্পৃক্ত।

আমাদের আমল-আখলাকে, চিন্তা-চেতনায়, ইবাদত-বন্দেগিতে আল্লাহর রহমতের কতটুকু অংশীদার হতে পেরেছি সেটাই এখন আমাদের ভেবে দেখা উচিত। আজকের এ দিনে তথা ৬২০ খ্রিস্টাব্দের ১০ রমজান হাবিবে খোদা সাল্লাল্লাহু ‘আলায়হি ওয়াসাল্লামের প্রিয় বিবি হযরত মা খাদিজাতুল কুবরা রাদিআল্লাহু তা‘আলা আন্হা তার গৃহে ইন্তিকাল করেন।

এ সময় প্রিয়নবী (সা.) তার পাশে ছিলেন। আজ এ বছরের রোজার ১০ দিন চলে যাচ্ছে অথচ আমরা কতটুকু লাভবান হলাম? নাকি ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যেই রয়ে গেলাম। আমরা যেন ঐসব লোকের মধ্যে গণ্য হতে পারি, যাদের জীবন আল্লাহর করুণায়, পুণ্যে ও আনুগত্যের মধ্যেই অতিবাহিত হয়েছে। মক্কার কাফির-মুশরিকরা যখন কোনোভাবেই হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলায়হি ওয়া সাল্লামকে ইসলাম প্রচার করা থেকে নিবৃত্ত করতে পারছিলেন না, তখন তারা তাকে এবং তাঁর লোকজন ও তাঁর শুভাকাক্সক্ষী গোত্রগুলোকে বয়কট করে। প্রিয়নবী (সা.) সবাইকে নিয়ে আবু তালিব গিরি সংকটে অবস্থান করলেন।

প্রায় তিন বছর সেই গিরি সংকটে দারুণ কষ্টের মধ্যে দিন কাটল। হযরত খাদিজা (রা.) তার সন্তানদের নিয়ে স্বামীর পাশেই ছিলেন। বয়কটের অবসান হলে সবাই গৃহে ফিরলেন। এই সময় একদিন তিনি ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়লেন এবং ইন্তিকাল করলেন। তাকে গোসল করানোর পর কাফন পরিয়ে জান্নাতুল মু‘আল্লা গোরস্থানে দাফন করা হয়। প্রিয় নবী (সা.) নিজ হাত মুবারক দিয়ে তাকে কবরে শোয়ায়ে দেন। হযরত খাদিজা (রা.) উপাধি ছিল তাহিরা।

সম্মানিত বংশে জন্মগ্রহণকারী খাদিজা (রা.) অত্যন্ত সম্ভ্রান্ত ও ঐশ্বর্যশালী নারী ছিলেন। হাবিবে খোদা (সা.)’ এর সঙ্গে তাঁর শাদী মুবারক সম্পন্ন হয় ৫৯৫ খ্রিস্টাব্দে। তখন তার বয়স ৪০ বছর এবং প্রিয়নবীর (সা.) ২৫। প্রিয় নবী (সা.) শাদি করার পর থেকেই প্রায়শ মক্কার কা‘বা শরিফ থেকে প্রায় ৩ মাইল উত্তর-পূর্বে অবস্থিত হেরা গুহায় অবস্থান করতেন। মাঝে মধ্যেই হযরত খাদিজা (রাদি.) সেখানে স্বামীর সঙ্গে থাকতেন। ৬১০ খ্রিস্টাব্দে, হিজরি পূর্ব ১২ সালে, ২৭শে রমজান লাইলাতুল ক্বদরে বিশ্বনবীর জীবনে এক শুভ লগ্নের আবির্ভাব হলো। এমন সময় আল্লাহ পাকের নির্দেশে আল্লাহর বাণী নিয়ে হেরা পর্বতে অবতরণ করলেন জিব্রাইল ফেরেশতা। তিনি বিশ্বনবীকে বললেন, পড়–ন আল্লাহর নামে।

ঘর্মাক্ত, ক্লান্ত, শ্রান্ত, জ্ঞানদীপ্ত আল্-আমিন জিব্রাইল ফেরেশতার সাথে সাথে পড়লেন:(১) ইকরা বিসমি রাব্বিকাল্লাযী খলাক। ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় গৃহে প্রত্যাবর্তন করে নবীকরীম (সা.) খাদিজাকে বললেন, আমার শরীর বস্ত্রাবৃত কর, বস্ত্রাবৃত কর। একটু পরেই বিবি খাদিজার গৃহে দ্বিতীয়বার অহী নাজিল হলো। খাদিজাই স্বতঃস্ফূর্ত মধুর স্বরে বললেন, স্বামী! আমিই প্রথম সাড়া দিচ্ছি আপনার আহŸানে। আমিই ঘোষণা করছি ’লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ।” অর্থাৎ মা খাদিজাই প্রথম মুসলমান। এ মহান বিদূষী মহিলা নবুয়্যাতের দশম বর্ষে পবিত্র রমজান মাসের ১০ তারিখে আজকের এ দিনে  ইন্তেকাল করেন। “ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।” আল¬াহ যেন আমাদেরকে মা খাদিজার মতো নেককার বান্দাদের মধ্যে শামিল করে নেন, আমিন।

সোনালীনউজ/ঢাকা/এসআই

Wordbridge School
Link copied!