নারায়ণগঞ্জ: ১২৮ বছরের বৃদ্ধ বন্দর আলী। গুটিগুটি পায়ে তার চলাচল। থাকেন সোনারগাঁওয়ের চরভবনাথপুর গ্রামে। বন্দর আলীর চার ছেলে ও দুই মেয়ে। এর মধ্যে এক ছেলে মানসিকভাবে অসুস্থ। বাকি তিন ছেলে কর্মঠ।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) লাঠি ভর দিয়ে এসেছেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানায়। থানায় এসেই খুঁজছেন দারোগাকে। এগিয়ে এলেন দারোগা আবুল কালাম আজাদ।
তাকে পেয়ে বন্দর আলী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, বাবা, তুমি আমাকে বাঁচাও। আমার ছেলে ও ছেলেদের বউরা আমাকে খাবার দেয় না এবং কোনো খোঁজখবরও রাখে না। আমাকে ওরা মারে।
অভিযোগটি পেয়েই তাকে নিয়ে চরভবনাথপুরে বৃদ্ধের বাড়িতে যান দারোগা আজাদ। দেখে আসেন বন্দর আলীর জীবনের করুণ দশা।
অনেকটা আবেগাপ্লুত হয়েই দারোগা আজাদ জানান, চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন হবে ১২৮ বছরের একজন প্রবীণ মানুষের শেষ জীবনের নিদারুণ কষ্টের দৃশ্য। একটি গোয়ালঘরের মতো ঘরে থাকেন তিনি। পলিথিন দিয়ে ঘেরা ওই ঘরেই তার দিনরাত কাটে।
তিন ছেলের সংসারের অবস্থা মোটামুটি ভালোই। মধ্যবিত্ত বলা চলে। কিন্তু তারা তাদের বৃদ্ধ বাবাকে কোনো খাবার দেয় না! ছেলের বউরা নাকি তাকে মারধরও করে!
ছেলে ও ছেলের বউদের কাছে বৃদ্ধ বাবা বোঝা হয়ে গেছেন। তবে আমিই বৃদ্ধ বাবাটির দায়িত্ব নিবো, যত দিন আল্লাহ তাকে বাঁচিয়ে রাখেন। একবার ভাবুনতো, আমরা কতটা অমানুষ হলে এমন বৃদ্ধ বাবাকে কষ্ট দিতে পারি?
তিনি আরো জানান, বৃদ্ধের অভিযোগ পেয়ে ওসি দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আমি ফোর্সসহ বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আশপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। ঘটনার সত্যতাও মিলে, কিন্তু তার ছেলেদের বাড়িতে না পাওয়ায় তাদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।
সোনালীনিউজ/এইচএন
আপনার মতামত লিখুন :