• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
মিনির বাবা মোজাম্মেল হক কিশোর

আমার মেয়ের কিছু হলে আত্মহত্যা করব


বরগুনা প্রতিনিধি জুলাই ২০, ২০১৯, ০১:৩৩ পিএম
আমার মেয়ের কিছু হলে আত্মহত্যা করব

বরগুনা : আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হক কিশোর বলেছেন, দেশবাসী শুনে রাখেন, আমার মেয়ের কিছু হলে আমি আত্মহত্যা করব। আমার মেয়েকে চাপ দিয়ে জবানবন্দি নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আমার মেয়ে মিন্নি নির্দোষ, রিফাত হত্যার পেছনে শুরু হয়েছে নোংরা রাজনীতি। প্রশাসনের লোকেরা শোনেন, আপনারা সঠিক তদন্ত করেন তাহলে রিফাত হত্যার মূল রহস্য বেরিয়ে আসবে।

শনিবার (২০ জুলাই) সকালে বরগুনা শহরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কমপ্লেক্সে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। কিশোর বলেন, মিন্নির সঙ্গে জেলখানায় দেখা করেছি। আমার মেয়ে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে। আমার মেয়ে খুব অসুস্থ।

তিনি আরও বলেন, সারা দেশের মানুষ দেখেছেন আমার মেয়ে কীভাবে তার স্বামীকে রক্ষার জন্য সন্ত্রাসীদের সঙ্গে লড়াই করেছে। একটি প্রভাবশালী মহল আমার মেয়েকে ফাঁসিয়ে খুনিদের আড়াল করতে চাইছে। রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ১ নম্বর সাক্ষী এবং তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি শুক্রবার (১৯ জুলাই) বরগুনার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি দেন।

এদিন সন্ধ্যায় পৌনে ছয়টার দিকে আদালত প্রাঙ্গনে সাংবাদিকদের মিন্নির বাবা বলেন, নির্যাতন ও জোরজবরদস্তি করে তার মেয়ের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেয়া হয়েছে।

কিশোর অভিযোগ করেন, ভয়ভীতি দেখিয়ে তার মেয়ের কাছ থেকে সাজানো জবানবন্দি আদায় করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার মেয়ে কোনোভাবেই জড়িত নয়।

তিনি বলেন, ঢাকা থেকে আইনজীবীরা আসবে শুনে পুলিশ নির্যাতন করে তড়িঘড়ি আমার মেয়েকে দিয়ে মিথ্যা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করিয়েছে। হত্যাকাণ্ডের মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে আমার মেয়েকে গ্রেফতার করে মামলায় জড়ানো হয়েছে। এখন আবার তাকে দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও রেকর্ড করানো হলো। এর মাধ্যমে প্রকৃত সত্যকে আড়াল করার চেষ্টা হয়েছে।

মিন্নির বাবা আরও বলেন, আমি আইনি লড়াই করে সত্যটা বের করব ইনশাল্লাহ। আমার মেয়ে জীবন বাজি রেখে তার স্বামীকে রক্ষা করতে গেছে। এটাই তার অপরাধ? এসব কিছুই শম্ভু বাবুর (স্থানীয় সাংসদ ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু) খেলা। তার ছেলে সুনাম দেবনাথকে সেভ করার জন্য আমাদের বলি দেয়া হচ্ছে।

এর আগে গত মঙ্গলবার মিন্নিকে প্রায় ১৩ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ এ মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে গ্রেফতার দেখায়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির মিন্নিকে সাতদিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেন। আদালত পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পরের দিন রিফাত শরীফের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বরগুনা থানায় ১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এ ছাড়া সন্দেহভাজন অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়।

এ মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। মামলার এজাহারভুক্ত ছয় আসামিসহ ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১০ জন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!