• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

‘আমিন আমিন ধ্বনী’তে শেষ হলো সুন্নাতে ভরা ইজতেমা


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ৫, ২০১৮, ০৬:৪৭ পিএম
‘আমিন আমিন ধ্বনী’তে শেষ হলো সুন্নাতে ভরা ইজতেমা

ঢাকা : লাখো মুসল্লির অশ্রু সজল নয়নে আমিন-আমিন ধ্বনীতে আখেরি মোনাজাতের মধ্যদিয়ে শেষ হলো দাওয়াতে ইসলামীর তিনদিনের সুন্নাতে ভরা ইজতেমা। জুমার নামাজ শেষে অনুষ্ঠিত হয় আখেরি মোনাজাত। মুসল্লিরা রবের প্রার্থনায় দুই হাত তুলে কান্নায় আবেগ তাড়িত হয়ে পড়েন। এ সময় আমিন আমিন ধ্বনীতে ইজতেমা ময়দানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। ইসলামের জীবন বিধান মেনে সারাবিশ্বে নেকীর দাওয়াত পৌঁছে দিতে মহান রবের সাহায্য কামনা করা হয়। দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধি, বিশেষ করে ফিলিস্তিন, রোহিঙ্গাসহ বিশ্বের নির্যাতিত মুসলমানদের হেফাজত কামনা করে আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন মুবাল্লিগে দাওয়াতে ইসলামী মোহাম্মদ কামাল আত্তারী। এর আগে জুমার নামাজে ইমামতি করেন সংগঠনটির মুবাল্লিগ হাফেজ মাওলানা সেলিম আত্তারী। জুমার পূর্বে দাওয়াতি কার্যক্রমসহ সার্বিক বিষয়ে বয়ান দেন দাওয়াতে ইসলামীর সভাপতি মুফতি জহিরুল ইসলাম মুজাদ্দেদী। ইজতেমার দোয়ায় সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্যসহ লাখো আশেকে রাসূল শামিল হন।

শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) শেষ দিনে সকাল থেকে জুমার নামাজের আগ পর্যন্ত দাওয়াতে ইসলামীর মুবাল্লিগগণ কোরান-হাদিসের আলোকে ইসলামের মৌলিক বিষয়ে বয়ান দেন। তার মধ্যে ইসলামী শরীয়তের বিধি বিধান, নামাজের গুরুত্ব ও বেনামাজির শাস্তি, আজান-ইকামত ও নামাজ পড়ার নিয়ম-পদ্ধতি, মা-বাবার প্রতি সন্তানের হক, জুলুম-অত্যাচারের পরিণতি, নামাজের গুরুত্ব ও বেনামাজির ভয়াবহ পরিণতি ইত্যাদি। এসব বিষয় নিয়ে একে একে বয়ান দেন দাওয়াতে ইসলামীর মুবাল্লিগ মোহাম্মদ রাশেদ আত্তারী, মোহাম্মদ জুনাইদ আত্তারী, মোহাম্মদ ফারুক আত্তারী, মোহাম্মদ সোহেল আত্তারী, মোহাম্মদ রফিক কাদেরী আত্তারী, মোহাম্মদ জাকির আত্তারী, সাইফুল ইসলাম ও আলফে সানি আত্তারী প্রমুখ। মাদানি চ্যানেলে লাইভের মাধ্যমে বিশেষ বয়ান, দোয়া-মোনাজাত করেন দাওয়াতে ইসলামীর আন্তর্জাতিক সদস্য আল্লামা আব্দুল হাবিব আত্তারী। মুসল্লিদের সুবিধার্থে বয়ান বাংলা থেকে আরবি, উর্দু ও ইরেজিতে ভাষান্তর করে শোনানো হয়। বয়ানের ফাঁকে ফাঁকে চলে হামদ ও নাতের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা এবং দোয়া মোনাজাত।

আল্লাহ পাকের নির্দেশিত পথে প্রিয় নবী (স.) এর নি:শর্ত অনুসরণের আহ্বান জানিয়ে দাওয়াতে ইসলামীর মুবাল্লিগণ বলেন, আল্লাহর হাবিব (স.) এর জীবনাদর্শ অনুসরণেই মানবতার মুক্তির সনদ নিহিত। ইসলামের জীবন বিধান মেনে চলা গেলে এবং প্রিয় রাসুলের সুন্নাতের রঙ্গে রাঙ্গায়িত হয়ে মোত্তাকি হতে পারলেই আপনার দুনিয়া-আখেরাতের মুক্তি মিলবে। আর প্রিয় হাবিবের প্রতি সর্বোচ্চ ভালোবাসাই ঈমানের পূর্বশর্ত। আল্লাহ পাক ও তার প্রিয় রাসূলের সৃষ্টির জন্যই হতে হবে আমাদের নিয়্যত, চিন্তাধারা, কর্মকাণ্ড সবকিছুই।’ বিশ্বের প্রত্যেকটি মানুষের কাছে ইসলামে নেকীর দাওয়াত পৌঁছে সুন্দর পৃথিবী গড়ে তোলার আহবান জানান তারা।

শরীয়ত মতে যথাযথভাবে নামাজ আদায়ের আহ্বান জানিয়ে তারা আরো বলেন, আল্লাহ পাক ও তার রাসূল (স.) যেভাবে নামাজ আদায় করতে বলেছেন ঠিক সেভাবেই নামাজ পড়তে হবে। নামাজেই যত প্রশান্তি। লোক দেখানো নামাজে হবে না। বরং শেষ বিচারে এর পরিণতি হবে ভয়াবহ, রয়েছে কঠিন শাস্তি।

‘সন্তানকে ইসলামের আলোয় আলোকিত করতে হবে। সুসন্তানের আমল নিজের জন্য তো বটে, তার মা-বাবার জন্যও নাজাতের অছিলা হবে- বলেন দাওয়াতে ইসলামীর মুবাল্লিগরা।

দাওয়াতে ইসলামীর মিশন ও ভিশন তুলে ধরেন সংগঠনটির মুবাল্লিগ রফিকুল ইসলাম কাদেরী। তিনি বলেন, আমিরে আহলে সুন্নাত আবু বিলাল মোহাম্মদ ইলিয়াছ আত্তার কাদেরীর (দা. ব) নেতৃত্বে দ্বীনি ও অরাজনৈতিক সংগঠন দাওয়াতে ইসলামী বাংলাদেশ, ভারতসহ সারাবিশ্বে ইসলামের নেকীর দাওয়াত পৌঁছে দিচ্ছেন। সবাইকে এই দাওয়াতি কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

দাওয়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সভাপতি মুফতি জহিরুল ইসলাম মুজাদ্দেদী সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আল্লাহর রহমতে সুন্দরভাবে তিনদিনের সুন্নাতেভরা ইজতেমা শেষ হয়েছে। ইজতেমার আয়োজনে সহযোগীতার জন্য সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সিভিল এভিয়েশন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, পীর মাশায়েখ ও আশেকে রাসূল (স.)দের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ইজতেমায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ বয়ান হয়েছে। বাস্তবজীবনে একে কাজে লাগানো গেলে তাহলেই স্বার্থকতা। আসুন প্রত্যেক মানুষের কাছে আমরা ইসলামের নেকীর দাওয়াত পৌঁছে দেই।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!