• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আমিনুল ইসলাম বুলবুলের জবানিতে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ


ক্রীড়া প্রতিবেদক মে ২১, ২০১৯, ০৮:২৩ পিএম
আমিনুল ইসলাম বুলবুলের জবানিতে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ

ছবি সংগৃহীত

ঢাকা: বাংলাদেশ আইসিসি ট্রফিতে অংশ নিয়েছিল ১৯৭৯, ১৯৮২, ১৯৯০ ও ১৯৯৪ সালে। এর কোনটিতে আমরা ব্যর্থ আবার কোনটিতে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত টিকিট পেতে পেতেও পাইনি। আমার ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিল ১৯৮৮ সালে। আমি ১৯৯০, ১৯৯৪ এবং ১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফিতে অংশ নিয়েছিলাম। ১৯৯৭ আইসিসি ট্রফি জিতে আমরা ১৯৯৯ বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পাই। তবে বিশ্বকাপ টিকিট পেতে বাংলাদেশকে ভয়ঙ্কর চাপের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। কারণ এরআগে আমরা ১৯৯০ এবং ১৯৯৪ সালের আইসিসি ট্রফি জয়ের খুব কাছে গিয়েও ফিরে এসেছি।

১৯৯৭ সালে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের যে দলটি গিয়েছিল সেটি ছিল অভিজ্ঞ এবং পরিণত। এর এক বছর আগে ১৯৯৬ সালে আমরা মালয়েশিয়াতেই এসিসি ট্রফি খেলেছি। এটা আমাদেরকে বাড়তি সুবিধা দিয়েছিল। ওই সময় বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটও ছিল দারুন জমজমাট। তখন ঘরোয়া লিগে খেলতে আসতেন অর্জুনা রানাতুঙ্গা, ওয়াসিম আকরাম, সনাৎ জয়াসুরিয়া এবং নিল ফেয়ারব্রাদারের মতো জনপ্রিয় ক্রিকেটাররা। আন্তর্জাতিক এসব তারকারা দারুনভাবে সাহায্য করেছিলেন স্থানীয় ক্রিকেটারদের।

দুই বছর আগে আইসিসি ট্রফি জিতে আসা দলটির সঙ্গে ১৯৯৯ বিশ্বকাপের দলে অনেক পরিবর্তন চলে আসে। সবাই এটা ভাবতে থাকেন যে, তারা ১২০ মিলিয়ন মানুষের স্বপ্নের সারথি। আমরাই প্রথম বাংলাদেশের কোন ক্রীড়া ইভেন্টে বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছি। অবশেষে ১৯৯৯ সালে স্বপ্ন সত্যি হলো। বাংলাদেশের মানুষের শুভ কামনা নিয়ে আমরা ইংল্যান্ড পৌঁছালাম বিশ্বকাপের এক মাস আগে। একজন অধিনায়ক হিসেবে আমি যখন অন্য সব অধিনায়কের সঙ্গে ছবি তুলছিলাম তখন খুব রোমাঞ্চ অনুভব করছিলাম। সেটা আরও দ্বিগুন হলো যখন আমরা বাকিংহাম প্যালেসে ইংল্যান্ডের রানীর সঙ্গে দেখা করলাম।

আমাদের শেষ ম্যাচ ছিল নর্দাম্পটনশায়ারে পাকিস্তানের বিপক্ষে। ওই রাতের আগে জানলাম, আমাদের সঙ্গে ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত থাকা কোচ গর্ডন গ্রিনিজ পরের দিন মাঠে আসবেন। কথা মতো তিনি এলেন এবং আমাদের সবার উদ্দেশ্যে উদ্দীপনামূলক বক্তব্য দিলেন। আমরা পাকিস্তানের ওপর কৃর্তত্ব প্রতিষ্ঠা করে জিতলাম ৬২ রানে। ম্যাচের পরপরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ব্যক্তিগতভাবে ফোন দিলেন।

পাকিস্তানের সঙ্গে এই জয় আমাদের টেস্ট স্ট্যাটাস পাইয়ে দিতেও বড় ভূমিকা রাখে। ওই জয়ের পর স্টেডিয়ামে উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশীরা মাঠে ঢুকে পড়ে। আমাদের কাঁধে তুলে নেয়। আমরা তাদের কাছে সুপার হিরোয় পরিণত হই। এরপর বাংলাদেশ টিম ম্যানেজম্যান্ট এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত বাংলাদেশীদের পক্ষ থেকে আমাদের বিশাল সংবর্ধনা দেওয়া হয়। পরের দিন ইস্ট লন্ডনেও আমাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয় যেটি বাংলাটাউন নামেও পরিচিত। ঢাকায় পৌঁছানোর পর বাংলাদেশের জনগণ আমাদের ভালবাসায় সিক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রীসভার সদস্যরাও আমাদের অভিনন্দন জানান।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আরআইবি/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!