• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিক্ষোভে পুলিশের বাধা

আ.লীগ ভোট ডাকাতি করে রাষ্ট্রদ্রোহিতা করেছে


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ৩০, ২০১৯, ০১:০৮ পিএম
আ.লীগ ভোট ডাকাতি করে রাষ্ট্রদ্রোহিতা করেছে

ঢাকা : একাদশ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ভোট ডাকাতি করে ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতা’ করেছে বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

রোববার (২৯ ডিসেম্বর) বিকালে ‘ভোট ডাকাতির বর্ষপূর্তি’ উপলক্ষে এই বিক্ষোভ সমাবেশে ফ্রন্টের নেতা জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব এ অভিযোগ করেন।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ফুটপাতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের উদ্যোগে ‘ভোট ডাকাতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ’ লেখা সংবলিত কালো ব্যানার টানিয়ে এই বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়। বিক্ষোভ সমাবেশে ফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণে শেষ মুহূর্তে তিনি আসতে পারেননি বলে জানান নেতৃবৃন্দ। ফ্রন্টের সিনিয়র নেতা আ স ম রব বলেন, ‘কোনো গ্রামে যদি ডাকাত পড়ে, চোর পড়ে মানুষ কী করে? মানুষ ঘেরাও করে চোর ধরে, ডাকাত ধরে। সারা বাংলাদেশের ভোট চুরি করেছে, দেশের ১৬ কোটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ডাকাতদের ধরতে হবে। ভোট ডাকাতি করা রাষ্ট্রদ্রোহিতা। জনগণের ভোট ডাকাতি করা সংবিধান বিরোধী কাজ।’

তিনি বলেন, যেখানেই যাই জনগণ বলে আমাদের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। আমাদের ভোট পুনরুদ্ধার করতে হবে। রাষ্ট্রক্ষমতা থেকে এদের বিদায় করতে হবে, বিতাড়িত করতে হবে। জনগণের সরকার যদি কায়েম করতে হয়, মুক্তিযুদ্ধের সরকার যদি কায়েম করতে হয়, জাতীয় সরকার যদি কায়েম করতে হয় তাহলে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করতে হবে। আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এই ভোট ডাকাত, ভোট চোরদের বাংলাদেশের মাটি থেকে বিদায় করি।

তিনি বলেন, এখানে অনেক আইনজীবী আছেন তাদের বলব, এই ভোট ডাকাতদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ডাকাতি যারা করেছে তাদেরকে সবাই চেনেন, তাদের চিহ্নিত করেন। রাস্তাঘাটে, পথে-প্রান্তরে যেখানে পারেন দেখলে জনগণকে বলেন, এই চোর যায়, ডাকাত যায়। চোর চোর ধর, ডাকাত ডাকাত ধর ধর। কী নির্লজ্জ বেহায়া, লজ্জা-শরম নাই ওদের। ওরা (আওয়ামী লীগ) ভোট ডাকাতি করে বলে যে, আমরা ডাকাতি করি নাই। চোরে চুরি করলে মাথা নত করে থাকে আর এরা চুরি করে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়। এদের মাথা থামায়ে দিতে হবে। গ্রামে, মহল্লায়, পাড়ায় বাংলাদেশে কোথাও চোরদের বড় গলায় কথা বলার কোনো সুযোগ নাই, তাদের কথা বলার কোনো অধিকার নাই। এদেরকে ঝেঁটে বিদায় করতে হবে।

বিক্ষোভ সমাবেশের পর আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বে শতাধিক নেতা-কর্মী নিয়ে মিছিল শুরু হলে পুলিশ কদম ফোয়ারের আগে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে মিছিলটিকে আটকিয়ে দেয়। এসময় ৪/৫ মিনিট নেতা-কর্মীরা সরকারের ভোট ডাকাতির বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। পরে নেতৃবৃন্দ কর্মসূচি শেষ করে চলে যায়।

ডাকসু ভবনের কাছে ককটেল বিস্ফোরনের ঘটনা উল্লেখ করে সাবেক ভিপি আ স ম আবদুর রব বলেন, আজকেও ডাকসু ভবনের পেছনে কয়েকটা ককটেল ফাটানো হয়েছে। কারা ফাটায়? প্রক্টর সাহেব জানেন না, ভাইস চ্যান্সলার জানেন না, রেজিস্ট্রার জানেন না। এই ডাকসু থেকে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলিত হয়েছে। পৃথিবীর কোনো দেশে স্বাধীনতার পূর্বে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করা হয় নাই একমাত্র বাংলাদেশ ছাড়া। জাতীয় সংগীত হয় নাই, দেশের সীমানা নির্ধারিত হয় নাই, সরকারপ্রধান নির্ধারিত হয় নাই, সেনাবাহিনী প্রধান নির্ধারিত হয় নাই একমাত্র বাংলাদেশ ছাড়া।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, আমরা স্পষ্টভাষায় বলে দিতে চাই, যে ভোট ডাকাতির নির্বাচন ২৯ ডিসেম্বর হয়েছে, সেই নির্বাচন আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। একথায় স্পষ্টভাষায় বলতে হবে যে, সত্যিকার জনগণের প্রতিনিধি ছাড়া এদেশে শাসন করার অধিকার কেউ রাখে না এবং এদেশের সত্যিকার মালিক হচ্ছে জনগণ, এদেশের সকল ক্ষমতার উৎস হচ্ছে জনগণ।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, জনগণের ওপর অবিচল আস্থা রেখে এদেশে পুনরায় আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে জনগণের অধিকার, জনগণের আমানত স্বাধীনতা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেব। আসুন আজকে আমরা নতুন নির্বাচন করে, নির্বাচনের মাধ্যমে সেই গণতন্ত্র একটি শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এদেশের মানুষের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দেব। ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করে না, তারা একটি বিশ্বাসে রাজনীতি করে যে, এদেশের মানুষকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে হবে, সত্যিকার স্বাধীনতা দিতে হবে, অর্থনৈতিক সাম্য দিতে হবে।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আমরা কর্মসূচি দেব। পাটকল শ্রমিক যদি কেউ মারা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ওপর যদি অত্যাচার আরো বাড়ে, নারী নির্যাতন না কমে, গুম-খুন বন্ধ না হয়, আর আপনার (সরকার) মতো ফরটুয়ান্টি গভর্নমেন্ট যদি চলে না যায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে আমরা সামনে আসছি।

তিনি বলেন, আজ আমাদের ধিক্কার জানাবার দিন। বাঙালি জাতির ইতিহাসে এত বড় কলঙ্কের তিলক কখনো লাগেনি যেটা ২৯ তারিখ রাতে লেগেছে। পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো দেশে কোনো ভোটে এত বড় চুরি হয় নাই গতকালের ভোট আজকে হয়ে যায়। এই ভোট বাতিল করতে হবে, সংসদ বাতিল করতে হবে, সরকার পদত্যাগ করতে হবে, চলে যেতে হবে সরকারকে। এজন্যই আমাদের আন্দোলন, সেই শপথ নেয়ার জন্য আমরা আজকে দাঁড়িয়েছি।

আ স ম রবের সভাপতিত্বে মোশতাক আহমেদ ও জাহাঙ্গীর আলম মিন্টুর পরিচালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে গণস্বাস্থ্য সংস্থার ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির আবদুুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, কাজী আবুল বাশার; গণফোরামের অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, জগলুল হায়দার আফ্রিক; জেএসডির তানিয়া রব, সানোয়ার হোসেন তালুকদার; নাগরিক ঐক্যের শহিদুল্লাহ কায়সার, বিকল্পধারার অধ্যাপক নুরুল আমিন ব্যাপারী ও শাহ আহমেদ বাদল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!