• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ

আ.লীগের কমিটিতে কাউন্সিলরদের পদে না রাখার সিদ্ধান্ত


বিশেষ প্রতিনিধি সেপ্টেম্বর ১২, ২০২০, ০২:২৪ পিএম
আ.লীগের কমিটিতে কাউন্সিলরদের পদে না রাখার সিদ্ধান্ত

ঢাকা : আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের কমিটিতে দুই সিটিতে দলীয় সমর্থন নিয়ে নির্বাচিত কাউন্সিলরদের পদে না রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

দলটির ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এসএ মান্নান কচি বলেন, ‘বিষয়টা সত্যি। আমরা নিজেরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি কাউন্সিলরদের নগর আওয়ামী লীগের কমিটিতে রাখব না।’

এ খবরটি জানাজানি পর ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির দল সমর্থিত কাউন্সিলরদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, কেন্দ্রীয় সিনিয়র নেতাদের কাছে এ খবরের সত্যতা জানতে চাইছেন তারা। ক্ষুব্ধ কাউন্সিলররা নিজেদের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠকও করছেন।

তারা বলছেন, কাউন্সিলর তো একটা দায়িত্ব। কাউন্সিলর হওয়ার কারণে দলীয় পদ থেকে বঞ্চিত করে রাজনীতি করার সুযোগ কেড়ে নেওয়া কতটা যৌক্তিক হবে।

সম্প্রতি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের সর্বস্তরের কমিটি করার নির্দেশ দিলে ঢাকা মহানগর কমিটি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। এর পরপরই কাউন্সিলরদের কমিটিতে না রাখার বিষয়টি জানাজানি হয়।

ঢাকা উত্তর-দক্ষিণের অন্তত এক ডজন কাউন্সিলরের ভাষ্য, আওয়ামী লীগে যারা এমপি তারা জেলা-উপজেলায় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। অনেক উপজেলা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক আবার উপজেলা চেয়ারম্যান পদেও রয়েছেন। এমপি-উপজেলা চেয়ারম্যানরা দলীয় পদে থাকতে পারলে ঢাকার কাউন্সিলররা কেন সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। শুধু ঢাকার কাউন্সিলরদের বেলায় এ নীতি অনুসরণ কেন করা হবে?

তারা আরও বলেন, নগরের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব না দেওয়া হলেও অন্তত কম গুরুত্বপূর্ণ পদে তাদের রাখা হোক। তাহলে সাংগঠনিক কাজে অংশ নিতে পারবেন তারা। এতে রাজনীতি চাঙা হবে। তা না হলে রাজনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দেওয়া হবে কাউন্সিলরদের। এটা দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনাকে বিশেষ বিবেচনায় নেওয়ারও অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।

এসএম মান্নান কচি বলেন, ‘ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ নিজেরা একটা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে যে, কাউন্সিলরদের নগরের গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা হবে না। তারা থানা-ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করবেন। কাউন্সিলরদের বিরাট দায়িত্ব তো রয়েছেই। সবাইকে দুই-তিনটা দায়িত্ব দেওয়া হলে বাকিরা কী করবেন?

তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সাবেক ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ অন্য নেতাদের বেশি অন্তর্ভুক্ত করব ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের দুই অংশের কমিটিতে। কাউন্সিলরদের থানা-ওয়ার্ড পর্যায়ে দায়িত্ব দেওয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগে অনেক নেতাকর্মী, সবাইকে সুযোগ দিতে হবে। কাউন্সিলর সবাইকে পদ দিলে অন্য কাউকে পদ দেওয়া যাবে না। কারণ এ কমিটির পদ তো সংখ্যায় সীমিত।’ একটা খসড়া কমিটি এরই মধ্যে তারা জমা দিয়েছেন জানিয়ে কচি বলেন, শিগগিরই চূড়ান্ত কমিটি ঘোষণা করা হবে।

মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় দক্ষিণে গত কমিটির দায়িত্বে থাকা এক কাউন্সিলর বলেন, ‘আমরা কাউন্সিলররা এই দলের বাইরের কেউ নই। কাউন্সিলর হয়ে যাওয়া মানে কি আমাদের আর রাজনীতি করার সুযোগ থাকবে না? দলে পদ-পদবি বঞ্চিত থাকলে আমাদের রাজনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দেওয়ার মতো ঘটনা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কাউন্সিলর সবাইকেই পদ দিতে হবে ব্যাপারটি তা-ও নয়। আবার সবাইকে গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ারও দাবি করছি না। গতবার নগর কমিটিতে দায়িত্ব পালন করেছি। এবার থানা বা ওয়ার্ডে দায়িত্ব দেওয়া হলে তো রাজনীতিতে পিছিয়ে যেতে হবে।’

উত্তরের এক কাউন্সিলর বলেন, এক কাউন্সিলরের সঙ্গে বিরোধের জের ধরেই কাউন্সিলরদের নগর কমিটির বাইরে রাখতে চান এসএম মান্নান কচি। দক্ষিণের আরেক কাউন্সিলরের অভিযোগ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদের পরামর্শেই মূলত এ নীতি অনুসরণ করেছেন দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘কমিটি চূড়ান্ত করা হলে এবং ঘোষণা করা হলে দেখা যাবে কে আছে, কে নেই। এ ব্যাপারে এখনই কিছু বলতে চাই না আমি। শিগগিরই কমিটি ঘোষণা করা হবে।’

উত্তরের সাধারণ সম্পাদক খসড়া কমিটি জমা দেওয়া হয়েছে জানালেও দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এখনো খসড়া কমিটি জমা দেওয়া হয়নি।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!