• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আ.লীগের মনোনয়নপত্র জমা দিলেন জাহাঙ্গীর হোসেন বাবর


এম সুজন আকন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট নভেম্বর ১২, ২০১৮, ০৬:০৭ পিএম
আ.লীগের মনোনয়নপত্র জমা দিলেন জাহাঙ্গীর হোসেন বাবর

ঢাকা: নোয়াখালী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য ও নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ি) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী তরুণ প্রজন্মের প্রিয় মুখ জাহাঙ্গীর হোসেন বাবর নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

রোববার (১১ নভেম্বর) বিকাল সাড়ে ৪টায় ধানমণ্ডির আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলীয় মনোনয়নপত্র জমা দেন।

এর আগে গত শুক্রবার (৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মাননীয় সভানেত্রীর ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ি) আসনের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন তিনি।

জাহাঙ্গীর হোসেন বাবর বলেন, আশা করি দলীয় মনোনয়ন নিয়ে আমি এলাকার উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে পারবো। আমি বিশ্বাস করি গণতন্ত্রের মানসকন্যা ও পরিবর্তনের অগ্রদূত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুরদর্শিতায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে সমৃদ্ধির পথে। তার স্বপ্নের বাংলাদেশ ও ভিশন ২০২১ গঠনে আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধ হই এবং যোগ্য প্রতিনিধি নির্বাচিত করে সমৃদ্ধ করে তুলি আমাদের প্রাণের সেনবাগ-সোনাইমুড়িকে।

এছাড়া আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সেনবাগ, সোনাইমুড়িতে ব্যাপক গণসংযোগ করেছেন নোয়াখালী জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য ও নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ি) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী জাহাঙ্গীর হোসেন বাবর।

তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সেনবাগ, সোনাইমুড়ি এলাকায় বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের লিফলেট বিতরণ করে নৌকার পক্ষে ভোট চান।

এ সময় মি. বাবর উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট চান সবার কাছে।

উল্লেখ, জাতীয় শ্রমিক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, পাকিস্তান ন্যাশনাল এসেম্বলির সাবেক সদস্য ও বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের সাবেক সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু প্রবর্তিত নোয়াখালী জেলার গর্ভনর জননেতা নুরুল হক সাহেবের দৌহিত্র এবং যোগ্য উত্তরসূরি জাহাঙ্গীর হোসেন বাবর ১৯৯০ এর গণঅভ্যুত্থানে নোয়াখালী জেলার অন্যতম বিপ্লবী সংগঠক ছিলেন এবং চৌমুহনী সরকারী এস এ কলেজের ছাত্রলীগের একজন অকুতোভয় সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

জাহাঙ্গীর হোসেন বাবরের সংক্ষিপ্ত পরিচিত-
বাঙ্গালী জাতির স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের আর্মস এন্ড এ্যমুনেশন এফোর্সের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন শুদ্ধচারী পাঠক ও বিশুদ্ধচারী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে নোয়াখালীর অন্যতম সংগঠক নুরুল হক সাহেব ছিলেন পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বন্দুকের অন্যতম নিশানা। যাকে এবং যার পরিবারকে হন্য হয়ে খোঁজা হয়েছে পুরো নোয়াখালীতে।

অকুতোভয় নুরুল হক তার পরিবারকে খুব সাবধানে পাঠিয়ে দেন ভারতের আগরতলায়। তার মেয়ে রহিমা খানম সেসময় ৮ মাসের গর্ভবতী। পুরো ১৫০ মাইল, রিকশা কিংবা পথে হেটে এতটা পথ অতিক্রম করেন তার স্বামী ইঞ্জি: দেলোয়ার হোসেন, তার সন্তান তারেক ও ফয়সাল এর হাত ধরে। ইঞ্জি: দেলোয়ার হোসেন ছিলেন সেনবাগের ৮ নং বীজবাগ ইউনিয়নের সফরআলী মিজি বাড়ীর (বর্তমানে আব্দুর রব চেয়ারম্যান বাড়ী) মরহুম আলী আহমেদের একমাত্র পুত্র সন্তান। ভারত পৌছে নুরুল হক মুক্তিযোদ্ধা ট্রেনিং এ চলে গেলেন এবং ইঞ্জিঃ দেলোয়ার হোসেন দুই দেশের সীমানায় নিয়োজিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র সরবরাহে। দেশে যুদ্ধ চলছে, ভারত থেকে অস্ত্র যাচ্ছে, মুক্তিযোদ্ধা ট্রেনিং চলছে এমন এক সময়ে ৩০ মে ১৯৭১ এর এক কাক ডাকা ভোরে উদয়পুর সরকারী হাসপাতালে জন্মগ্রহন করেন জাহাঙ্গীর হোসেন বাবর।

চারিদিকে খাদ্যাভাব। দেশের জন্য সবার মন উতলা। কখনো খেয়ে না খেয়ে বেড়ে উঠতে থাকেন জাহাঙ্গীর হোসেন বাবর। দেশ স্বাধীন হলো, স্বাধীন দেশে ৫ মাসের শিশু জাহাঙ্গীর হোসেন বাবরের দেশে প্রবেশ। স্বাধীনতা পরবর্তীকালীন সময়ে খুব দ্রুত দেশের রাজনৈতিক অবস্থা দিন দিন উত্তপ্ত হচ্ছে। বড় হয়ে তুমি কি হতে চাও? প্রশ্নটা জিজ্ঞেস করতেই ছোট্ট বাবরের চট জলদি উত্তর-আমি নানা ভাইয়ের (জননেতা নুরুল হক) মত হব। শুনে জননেতা নুরুল হকের ঠোটের কোণে হাসি। চোখেআর্শীবাদ।

তার আর্শীবাদ যে বৃথা যায়নি, তার শেকড় জাগতে শুরু করলো ১৯৯০ এর গণঅভ্যুত্থানে। নোয়াখালী জেলার অন্যতম বিপ্লবী সংগঠক ছিলেন নানা নুরুল হকের আদর্শে আদর্শিত জাহাঙ্গীর হোসেন বাবর। এই গণঅভ্যুত্থানের একটি দিনও বাড়িরপথ মাড়াননি তিনি। ছিলেন নোয়াখালীর রাজপথে, শ্লোগান আর মুষ্টিবদ্ধ প্রতিজ্ঞায় জয় নিয়েই ফিরেছেন।

চৌমুহনী সরকারী এস এ কলেজের ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। রাজনৈতিক প্রতিকূলতায় রাজনীতি আর সমাজ সেবা নিয়ে নিজেকে এতটাই ব্যস্ত রাখতেন যা নিয়ে পরিবার বাধ্য হলো তাকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দিতে। ইচ্ছারবিরুদ্ধে তার যাত্রা, বিদেশের পথে।

ফিনল্যান্ড, সুইডেন, ডেনমার্ক, জার্মানী, ফ্রান্স, ইতালী, সুইজারল্যান্ড এ গিয়ে তিনি মিশে যান প্রবাসীদের মাঝে। যারা সুস্থ ধারার রাজনীতিতে বিশ্বাসী। ইতালীতে তিনি ২০০২ সালে প্রবাসী যুবক বাংলাদেশীদের নিয়ে গড়ে তুলেন একটি রাজনৈতিক দল, যারা ইতালীতে নিজ দেশের সকলের সুযোগ সুবিধা নিয়ে কাজ করেন। ওয়ান ইলেভেনের প্রেক্ষাপটে ইতালীর রোম অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক রোমে আন্তর্জাতিক অন্যান্য সংগঠনকে সাথে নিয়ে রোমের রাস্তায় রাস্তায় প্রতিবাদ করে আন্তর্জাতিকভাবে চাপ সৃষ্টি করেন।

একাধারে তিনি দায়িত্ব পালন করেন লা তানা দেল লুপ্পোলো সার্দেনিয়া, ইতালী এর সভাপতি, Caracol সার্দেনিয়া, ইতালী এর সভাপতি, বাংলা ক্লাব, কালিয়ারী, ইতালী এর সভাপতি, Re fondazioneSiniatra, ইতালী এর সদস্য, Socialist Party, Switzerland, Member, ইতালি, ফিনল্যান্ড এর পরে সুইজারল্যান্ডেও এই ধারা অব্যাহত রাখেন। নিজের দেশের মানুষকে নিয়ে প্রবাসে একত্রিত হয়ে নিজেদের অধিকার আর সুযোগ নিয়ে কাজ করার এক নজিরবিহীন উদাহরণের সৃষ্টি করেন তিনি।

সুযোগ ছিলো ইউরোপের দেশগুলোর নাগরিক হবার, এক সুখময় জীবন গড়ার। যার রক্তে মিশে আছে রাজনীতি আর সমাজসেবা, তাকে আর সেখানে বেঁধে রাখা যায়নি। দীর্ঘ ১৬ বছর প্রবাস জীবন শেষে তিনি ফিরলেন বাংলাদেশে। তার মাতৃভূমিতে। কষ্টে অর্জিত অর্থ দিয়ে গড়ে তুললেন সানরাইজ ইঞ্জিনিয়ারিং ডক ইয়ার্ড ও বাবর ট্রেডার্স, যা বর্তমানেবাংলাদেশের অন্যতম একটি জাহাজ, ড্রেজার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান।

সানরাইজ ইঞ্জিনিয়ারিং ডক ইয়াড ও বাবর ট্রেডার্স, দীর্ঘ ৩ বছর ধরে অত্যন্ত সুনামের সাথে দেশীয় কর্মী দিয়ে তাদের নিজস্ব ডকইয়ার্ডেই তৈরি করছেন ওয়ার্কবোট, কেবিন জাহাজ, ড্রেজার সহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের জাহাজ। ব্যবসার পাশাপাশি তিনি নিয়মিত ভাবেই তার জন্মস্থান নোয়াখালীতে যান। পাশাপাশি তিনি ঢাকাতেই গড়ে তুলেছেন ঢাকাস্থ নোয়াখালী যুব ও ছাত্র সংগঠন।

সদা হাসি মুখে দিনের কর্মব্যস্ততা শুরুর আগে তিনি এখনো কলের গান শুনেন। তার মতে-কলের গানে তিনি এক অভূতপূর্ব সংগীতের হাহাকার অনুভব করেন। ব্যস্ততার পাশাপাশি তিনি একজন লেখক। তার লেখা অনেকগুলো নাটক, টেলিফিল্ম ইতিমধ্যেই বিভিন্ন টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়েছে। মাঝে মাঝে হাসিমুখটি নিয়ে উপস্থিত হন টিভির পর্দায়, তার সাবলীল অভিনয় নিয়েই। শখ করেই তিনি গড়ে তুলেছেন ড্রিম মাল্টিমিডিয়া নামে একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। যা বেশ সুনামের সাথে দেশের বিভিন্ন চ্যানেলে কাজ করে যাচ্ছে।

ব্যক্তিজীবনে জাহাঙ্গীর হোসেন বাবর এক ছেলে ও এক মেয়ে সহ স্ত্রী, মা, ভাইকে নিয়ে রাজধানী ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বসবাস করেন।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!