• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

আলু চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকরা


ভোলা প্রতিনিধি জানুয়ারি ১০, ২০১৯, ১২:৩৮ পিএম
আলু চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকরা

ভোলা : ভোলার কৃষকরা দিন দিন আলু চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। গত তিন বছর ধরে আলু চাষ করে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এ বছর আলু চাষ করেননি কেউ কেউ। তবে লোকসান পুষিয়ে নিতে অনেকেই আলু চাষ শুরু করছেন।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক বছর আগেও ভোলায় আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং পোকামাকরের আক্রমণ কম হওয়ায় আলুর বাম্পার ফলন হতো। তাই কৃষকরা আলু চাষে ব্যাপক আগ্রহী হয়ে ওঠে। কিন্তু গেলো ২/৩ বছর ধরে অসময়ে বৃষ্টিপাত এবং পোকার আক্রমণের কারণে আলু চাষের পর ফলন কম হয়। আবার ক্ষেতে জ্বলা, কারেন্ট, দাউদসহ নানা রোগ দেখা দেয়। তাতে কীটনাশক দিয়েও কোনো কাজ হয় না। গত বছর লোকসান হওয়ায় এবার অনেকেই আলু চাষ করেনি।

সদর উপজেলার ইলিশা এলাকার আলু চাষি আলী আশ্রাফ জানান, গত বছর এনজিও ও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এক একর জমিতে আলু চাষ করি। ৮০ হাজার টাকা লোকসান হয়েছে। পরে ধান ও সবজি চাষ করে এখনও দেনা পরিশোধ করতে পারিনি। তাই এ বছর আলু চাষ করিনি।

রাজাপুরের চাষি মো. মহিউদ্দিন বলেন, গত দুই বছর আলু চাষ করে অনেক টাকা দেনা হয়েছি। দেনাদারের ভয়ে এখনও পালিয়ে বেড়াই। আগের টাকা পরিশোধ না করতে পারায় নতুন করে কেউ টাকা দেয় না তাই আর আলু চাষ করবো না।

দক্ষিন দিঘলদী গ্রামের চাষি আব্দুল রহমান বলেন, গত বছর আলু চাষ করে দেড় লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। তাই এ বছর আলু চাষ করবো না। অন্য চাষিরা আলু চাষ করছেন। যদি তারা এ বছর লাভবান হয় তাহলে আগামী বছর আলু চাষ করবো।এদিকে টানা কয়েক বছর ধরে আলুর ফলন খারাপ হওয়ার পরও লোকসান পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে ভোলার ইলিশা, বাপ্তা ও রাজাপুর ইউনিয়নে আলুর আবাদ শুরু করেছেন কৃষকরা। তারা আশা করছেন যদি ভালো ফলন হয় তাহলে লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন।

ভোলা সদর চর আনন্দ গ্রামের আলু চাষি সামছুদ্দিন ও মিজান বলেন, গত বছর আলু আবাদ করেছিলাম। কিন্তু বৃষ্টিতে আবাদ নষ্ট হয়। পরে বিভিন্ন এনজিওর থেকে ঋণ নিয়ে আবার নতুন করে আবাদ করি। দুইবারে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা খরচ হয়। আলু বিক্রি করেছি ৯০ হাজার টাকা। বাকি প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা লোকসান হয়। গত বছরের লোকসান পুষিয়ে ওঠার আশায় এ বছর আবারও নতুন করে ৪ একক জমিতে আলু আবাদ করছি। আল্লাহ যদি লাভ দেন তাহলে লাভ হবে।

ভোলা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ দেবনাথ বলেন, গত কয়েক বছর আলু আবাদের সময় বৃষ্টি হওয়ায় আবাদ নষ্ট হয়েছে। দ্বিতীয় বার আবাদ করলেও বাজারে আলুর দাম কম হওয়ায় অনেক কৃষকের লোকসান হয়েছে। তাই এ বছর আলু আবাদে কৃষকদের আগ্রহ কম। তাছাড়া আমরা কৃষদের আলুর লোকসান পোষানোর জন্য অন্য ফসল আবাদের জন্য পরামর্শ দিচ্ছি।

ভোলা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ভোলা জেলায় আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ হাজার ৮০০ হেক্টর জমি। আর আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে । উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার মেট্রিক টন। এ বছর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৬ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমি। আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৩৮ হাজার মেট্রিক টন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!