• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
তফসিল ঘোষণা পর্যন্ত নির্বাচনকালীন সরকারের অপেক্ষা

আলোচনায় নির্বাচনকালীন সরকার


বিশেষ প্রতিনিধি অক্টোবর ৯, ২০১৮, ০৫:৩১ পিএম
আলোচনায় নির্বাচনকালীন সরকার

ঢাকা : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর বেশি দেরি নেই। যদিও তফসিল ঘোষণা করা হয়নি তবে সংবিধান অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বরের শেষে অথবা জানুয়ারির প্রথম দিকে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। বর্তমানে রাজনৈতিক অঙ্গনে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হচ্ছে নির্বাচনকালীন সরকার। আর তফসিল ঘোষণার ওপর নির্ভর করছে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের দিনক্ষণ। তফসিল ঘোষণার দুই-একদিন আগে বা পরে নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হবে। সংশ্লিষ্ট একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্রমতে, নির্বাচনকালীন সরকার কবে গঠন করা হবে, সেই সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য কত জন থাকবেন, কারা কারা থাকবেন নির্বাচনকালীন সরকারে এসব বিষয় নিয়ে ইতোমধ্যেই ভেতরে ভেতরে আলোচনা চলছে। তবে সব প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে তফসিল ঘোষণা পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে।

নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমান মন্ত্রিসভা, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল, বিরোধী দলের নেতা এবং আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। এরপর তিনি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবেন। এজন্য অচিরেই ১৪ দলের বৈঠক আহ্বান করা হবে বলে জানা গেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের কথা জানিয়েছেন। গত ৩ অক্টোবর আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের আগে বিষয়টি নিয়ে আমরা ক্যাবিনেটে (মন্ত্রিসভায়) আলোচনা করব। জোটের শরিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করব। ইতোমধ্যে দুই-একটি দলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। বাকি দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে এরপর সিদ্ধান্ত নেব।’

এদিকে চলতি বছর ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী নভেম্বরের প্রথম দিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলেও ইসি থেকে জানানো হয়েছে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে কাছাকাছি সময়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হবে। সে অনুযায়ী চলতি অক্টোবরের শেষদিকে অথবা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের যেকোন দিন নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কেউ কিছু বলছেন না। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিভিন্ন সময় বলে এসেছেন অক্টোবরের শেষদিকে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন হবে।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের সময়ের ব্যাপারে সংবিধানে নির্দিষ্ট কিছু বলা নেই। কবে নাগাদ এ সরকার গঠন হবে সে ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারছি না।’

আওয়ামী লীগ ও সরকার সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কবে হবে তার ওপর নির্ভর করছে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরও এ সরকার গঠন হতে পারে। কারণ, এই সরকার গঠনের ব্যাপারে সংবিধানে নির্দিষ্ট কোনো সময়ের কথা বলা নেই।
পরিস্থিতি বিবেচনা করে সুবিধাজনক সময়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হবে। সে ক্ষেত্রে নভেম্বরের প্রথম দিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হলে এর দুই-একদিন আগে বা পরে হবে নির্বাচনকালীন সরকার। এমনটাই চিন্তা-ভাবনা করছেন ক্ষমতাসীন দলের নীতিনির্ধারকরা। গত নির্বাচনে ইসির নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার তিনদিন আগে ২০১৩ সালের ২১ নভেম্বর নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর মতে, বর্তমানে যে দলগুলো সরকারে আছে সেই দলগুলোর নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়েই এই সরকার গঠন করা হবে। সরকারের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টি (জাপা) থেকে আরও দুই একজনকে নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভায় যুক্ত করা হতে পারে। জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদও এই মন্ত্রিসভায় থাকতে পারেন।

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র থেকে আরও জানা যায়, নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা কত হবে এ বিষয়টি নিয়েও উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা রয়েছে। তবে এই সংখ্যা ২৫ থেকে ৩০ সদস্যের বেশি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বর্তমান মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত, উপদেষ্টাসহ সদস্য সংখ্যা ৫৯ জন। অর্থাৎ নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা বর্তমান মন্ত্রিসভার অর্ধেকে নেমে আসবে বা তারও কম হতে পারে।

বিগত নির্বাচনের আগে যে নির্বাচনকালীন সরকার হয় তাতে মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন ২৯ জন। তখন ওই মন্ত্রিসভায় সংসদে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্য থেকে ৬ জন মন্ত্রী এবং ২ জন প্রতিমন্ত্রীকে নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!