• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আশুরার তাৎপর্য ও আমাদের করণীয়


ধর্ম ডেস্ক সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৭, ১২:১৮ পিএম
আশুরার তাৎপর্য ও আমাদের করণীয়

ঢাকা: আবদুল্লাহ্‌ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হিজরতের পর দেখলেন মদীনার ইহুদীগণ আশুরার রোজা পালন করছে। তিনি এর উদ্দেশ্য সম্পর্কে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলে তারা জবাব দিল- ইহা একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনে আল্লাহ্‌ তাআলা মূসা (আঃ) এবং তার জাতিকে মুক্তি দিয়েছিলেন, আর ফেরাউন এবং তার অনুসারীদেরকে (নীল নদে) ডুবিয়ে মেরেছিলেন। তাই তার শুকরিয়া স্বরূপ মূসা (আঃ) এদিন রোজা পালন করেছিলেন। আমরাও তার অনুসরণ করে থাকি।

রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: হযরত মূসা (আঃ)এর অনুসরণের ব্যাপারে তোমাদের চাইতে আমরাই বেশী হক্বদার ও অগ্রগামী। অতঃপর রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ দিবসে রোজা পালন করেন। (বুখারী ও মুসলিম)

এই মহান হাদীস থেকে কয়েকটি শিক্ষা:
১) এই হাদীস থেকে আশুরা তথা মুহার্‌রমের ১০ তারিখের মর্যাদা প্রমাণিত হয়। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর অনুসরণ ও তাঁর নির্দেশের আনুগত্য করে এদিন রোজা রাখা মুস্তাহাব। মহান নবী মূসা (আঃ)-এর অনুসরণ এবং এদিন মুমিনদের মুক্তিদান ও শত্রুদের ধ্বংস সাধনের জন্য মহান আল্লাহ্‌র শুকরিয়া আদায় করে রোজা পালন করা বাঞ্চনীয়।

মুহার্‌রম মাসের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট হল, এর মাধ্যমে আরবী বর্ষ গণনা শুরু হয়েছে। কুরআনে বর্ণিত সম্মানিত চারটি মাসের মধ্যে মুহার্‌রম অন্যতম।

আল্লাহ্‌ বলেন:
(إنَّ عِدَّةَ الشُّهُوْرِ عَنْدَ اللهِ اثْناَ عَشَرَ شَهْراً فِيْ كِتاَبَ اللهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّماَواَتِ وَ الأرْضَ، مِنْهاَ أرْبَعَةٌ حُرُمٌ ) অর্থাৎ নিশ্চয় আল্লাহ্‌র বিধান ও গণনায় আকাশমন্ডলি ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকে মাস বারটি। তম্মধ্যে চারটি সম্মানিত। (সূরা তওবা-৩৬)

উল্লেখ্য যে মুহার্‌রম মাসের রোজা আল্লাহ্‌র নৈকট্য লাভের অন্যতম মাধ্যম। মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরশাদ করেন: রামাযনের পর উত্তম রোজা হল- আশুরার রোজা। (মুসলিম) তিনি আরও বলেন: এ দিনের রোজা বিগত এক বছরের পাপ বিমোচন করে। (মুসলিম)

এদিনের রোজার ব্যাপারে সালাফে সালেহীন অত্যন্ত আগ্রহী ছিলেন। এমনকি শিশুদেরও এদিন রোজা রাখতে উদ্বুদ্ধ করতেন। তাদেরকে বিভিন্ন প্রকার খেলনা দিয়ে ভুলিয়ে রাখতেন। অতঃপর ক্ষুধার তাড়নায় কান্নাকাটি করলে খেতে দিতেন। এবং এভাবে তাদেরকে রোজার প্রতি অভ্যস্থ করে তুলতেন। (বুখারী ও মুসলিম)

ইসলাম পূর্ব জাহেলিয়াত যুগেও এ দিনের রোজা সকলের নিকট পরিচিত ছিল। মা আয়েশা (রাঃ) বলেন: জাহেলী যুগে কুরাইশগণ আশুরার রোজা পালন করত। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও এ-রোজা রাখতেন। অতঃপর মদীনায় হিজরত করে নিজে রোজা রাখার সাথে সাথে সবাইকে এ দিনের রোজা পালনের নির্দেশ দিলেন। (বুখারী ও মুসলিম)

আশুরার রোজার ক্ষেত্রে উত্তম হলো- মুহার্‌রমের ৯ (নয়) এবং ১০ (দশ) অথবা ১০ (দশ) এবং ১১ (এগার) তারিখ রোজা রাখা। এ বিধান শুধু ইহুদীদের বিরোধিতা করার জন্য। কেননা তারা কেবল ১০ তারিখেই রোজা রাখত। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: আগামী বছর যদি বেঁচে থাকি, তবে অবশ্যই ৯ তারিখ রোজা রাখব। (মুসলিম)

২) বংশ, দেশ ও যুগের পার্থক্য থাকলেও মুমিনগণ পরস্পরের ভাই। মুমিনদের যে কোন শত্রু আমাদের শত্রু । এ কারণে, আশুরা দিবসে মূসা (আঃ) ও তাঁর জাতির মুক্তি এবং ফেরাউন ও তার জাতির ধ্বংসে আমরা খুশি প্রকাশ করি। আল্লাহ্‌র কৃতজ্ঞতা প্রকাশার্থে রোজা পালন করে থাকি। এটা ইসলাম ধর্মের সৌহার্দ ও সম্পৃতির বিরাট প্রমাণ। আল্লাহ্‌ বলেন: মুমিনগণ তো পরস্পরের ভাই। (সূরা হুজুরাত-১০)

তিনি আরও বলেন: (مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللهِ وَالَّذِيْنَ آمَنُوْا مَعَهُ أشِدَّاءُ عَلىَ الْكُفَّارِ رُحَماَءُ بَيْنَهُمْ) আল্লাহ্‌র রাসূল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁর সহচরগণ, কাফেরদের প্রতি কঠোর কিন্তু নিজেদের মধ্যে পরস্পর সহানুভূতিশীল। (সূরা মুহাম্মদ-২৯)

সুতরাং প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত মুমিনদের বিজয়ে আনন্দ প্রকাশ করা, তাদের দুঃখে দুঃখিত হওয়া এবং প্রতিটি বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া।

৩) প্রকৃতপক্ষে হযরত মূসা (আঃ) এর খাঁটি অনুসারী হলেন মুসলমানগণ। খৃষ্টান বা ইহুদীরা নয়। কেননা তারা আল্লাহ্‌র বিধানকে ইচ্ছামত পরিবর্তন করেছে। নবী-রাসূলদের নিয়ম-নীতির বিরুদ্ধাচরণ করেছে এবং শেষ নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে। এ কারণেই মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইহুদীদের লক্ষ্য করে বলেছেন- মূসা (আঃ) এর অনুসরণের ব্যাপারে তোমাদের চাইতে আমরাই অধিক হক্বদার। তিনি আরো বলেন: দুনিয়া এবং আখেরাতে আমিই ঈসা (আঃ) এর অধিক নিকটবর্তী।

আল্লাহ্‌ তায়ালা বলেন: (إنَّ أوْلَى الناَّسِ بِإبْراَهِيْمَ لَلَّذِيْنَ اتَّبَعُوْهُ وَهَذاَ النَّبِيُّ والَّذِيْنَ آمَنُواْ مَعَهُ، واللهُ وَلِيُّ الْمُؤْمِنِيْنَ) নিশ্চয় মানুষের মধ্যে যারা ইব্রাহীমের অনুসরণ করেছিল তারা, আর যারা এই নবীর প্রতি ঈমান এনেছে তারা ইব্রাহীমের ঘনিষ্টতম বন্ধু; আর আল্লাহ্‌ হচ্ছেন মুমিনদের বন্ধু। (আল ইমরান-৬৮)

৪) খারাপ লোকের নিকট হক আছে বলে উহা গ্রহণ করা চলবে না, এরূপ ধারণা ভুল। কেননা হিকমত বা জ্ঞান মুমিনের হারানো সম্পদের মত মূল্যবান, যেখানেই পাবে তা গ্রহণ করার জন্য সেই অধিক হক্বদার। একারণে, কুরাইশ ও ইহুদীদের আশুরা দিবসে রোজা রাখা সত্বেও রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এদিন রোজা পালন করেছিলেন। অবশ্য তাদের থেকে নিজেদের বৈশিষ্ট আলাদা করার জন্য তিনি আশুরার আগে বা পরে একদিন মিলিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ থেকে একটি শিক্ষা পাওয়া যায় যে, প্রতিটি মুসলিমের উচিত স্বীয় নীতি ও ব্যক্তিত্বকে কাফেরদের চাইতে উত্তম ও উন্নত বৈশিষ্টের অধিকারী করা।

৫) আল্লাহ্‌ তায়ালা যখন কোন জাতির জন্য সাহায্য, নিরাপত্তা ও শান্তি নিশ্চিত করেন, তখন তাদের উপর আবশ্যক হয়ে যায়- আনুগত্য ও সৎকর্মের মাধ্যমে তাঁর শুকরিয়া আদায় করা। কোন ক্রমেই উচিত নয় সীমালংঘন করা, অবাধ্য হওয়া, ফরজ আমল বিনষ্ট করা, হারাম (অবৈধ) কাজে লিপ্ত হওয়া এবং ইসলামী শরীয়তকে পরিত্যাগ করে কাফের-মুশরিকদের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তোলা।

মনে রাখবে, কৃতজ্ঞতা নিয়ামতের স্থায়িত্বকে মজবুত করে এবং অকৃতজ্ঞতা, অসন্তুষ্টি ও গজব নিয়ে আসে। ফেরাউনের বিশাল রাজত্ব নানাপ্রকার নিয়ামতরাজীতে পরিপূর্ণ ছিল, ছিল সেখানে ভরাট নীল নদ প্রবাহিত । কিন্তু সে আল্লাহ্‌কে অস্বীকার করল। ফলে আল্লাহ্‌ তাকে ধ্বংস করলেন, ডুবিয়ে মারলেন। এবং পূণ্যাত্মা মুমিন মূসা (আঃ) ও তাঁর সম্প্রদায়কে মুক্তি দিলেন। তাই তাঁরা এই মুক্তি দিবসে আল্লাহ্‌র শুকরিয়া আদায় করলেন রোজা নামক ইবাদতের মাধ্যমে।

এ থেকে একটা বিরাট শিক্ষা পাওয়া যায়: আল্লাহ্‌র শুকরিয়া শুধু মুখে মুখেই হয় না বরং আসল শুকরিয়া হল ইবাদতের মাধ্যমে তাঁর নৈকট্যলাভে সচেষ্ট হওয়া। আল্লাহ্‌ তায়ালা বলেন: (اعْمَلُواْ آلَ داَوُدَ شُكْراً) হে দাঊদ পরিবার! কৃতজ্ঞতা আদায়ের জন্য আমল করে যাও। (সাবা-১৩)
মা আয়েশা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর রাত জেগে নামাযের আধিক্য দেখে আশ্চর্যবোধ করলে রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বলেছিলেন: আমি কি আল্লাহ্‌র শোকর গোজার বান্দা হব না? (বুখারী)

৬) সর্বাবস্থায় আল্লাহ্‌র উপর পূর্ণ আস্থা রাখা। কেননা বিজয় তাঁরই হাতে

। (মুদ্দাস্‌সির-৩১) আল্লাহ্‌ মুমিনদের সাহায্যকারী এবং কাফেরদের আঘাতকারী। ফেরাউন যখন আল্লাহর অবাধ্য হল এবং তাঁর বন্ধুদের নির্যাতন করল তখন তার প্রতাপ, প্রভাব কোনই কাজে এল না। আল্লাহ্‌ ঘোষণা করেন: আল্লাহ্‌ মানুষের জন্য তাঁর রহমত থেকে যা খুলে দেন, তা ফেরাবার কেউ নেই এবং তিনি যা বারন করেন, তা দেয়ার কেউ নেই তিনি ব্যতীত। (ফাতের-২) এবং কিছুতেই আল্লাহ্‌ কাফেরদেরকে মুসলমানদের উপর বিজয় দান করবেন না। (নিসা-১৪১)

৭) আশুরার ক্ষেত্রে ইহাই হল রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সুন্নত। হকের বিজয়ে আনন্দিত হওয়া, আল্লাহ্‌র শুকরিয়া আদায়ে রোজা পালন করা। কিন্তু উল্লেখিত সুন্নতের বিরোধী একদল লোক রয়েছে, যারা এই দিনগুলোতে নিজেদের প্রতি জুলুম করে, নিজেদের শরীরে প্রহার করে, মাতম-বিলাপ করে, মার্সিয়া-ক্রন্দন করে। তারা দাবি করে, আমরা হযরত হুসাইন (রাঃ) এর প্রতি শোক প্রকাশার্থে এরূপ করে থাকি।

আমাদের পূর্বপুরুষদের সহযোগিতার অভাবে তিনি শহীদ হয়েছেন। তাই এর মাধ্যমে আমরা সেই পাপের প্রায়াশ্চিত্ত করছি। কেমন মূর্খতা শুলভ কথা! এর চাইতে লজ্জাকর, মিথ্যা এবং উদ্ভট কথা আর কি হতে পারে? এরূপ আকিদা তো খৃষ্টানদের! তারা বিশ্বাস করে থাকে- বাবা আদম (আঃ) নিষিদ্ধ বৃক্ষ থেকে ফল খাওয়ার কারণে আদম সন্তানের পাপ হয়েছে। তার প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য ঈসা মসীহ্‌ নিহত হয়েছেন। এরূপ বিশ্বাস কি আল্লাহ্‌র ন্যায় নীতি সম্পর্কে অজ্ঞতার প্রমাণ নয়? অথচ তিনি ঘোষণা করেন:(ولاَ تَزِرُ واَزِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَى ) অর্থাৎ একজন অপরজনের পাপের বোঝা বহন করবে না। (বনী ইসরাঈল-১৫)

এভাবে পাপ মোচনের ব্যবস্থা কি ইসলামে রয়েছে? এরূপ বিলাপ, আহাজারী বা শোকমিছিল তো জাহেলী যুগের কাজ এবং কাবীরা গুনাহ্‌র অন্তর্গত। ইসলামের সাথে এর দূরতমও সম্পর্ক নেই। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: কপাল চাপড়ানো, পরিধেয় বস্ত্র ছেঁড়া এবং জাহেলী যুগের লোকদের মত মাতম করা ইত্যাদী যে করে সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়। (বুখারী ও মুসলীম)

হায়! এরা যদি হক্ব বুঝতো। হযরত আলী এবং হুসাইন (রাঃ) কে সত্যই ভালবাসতো, তবে অবশ্যই তাঁদের অনুসরণে তাওহীদের পথে চলত, আল্লাহ্‌র কুরআন এবং রাসূলের সুন্নাত আঁকড়ে ধরত, সাহাবায়ে কেরামকে ভালবাসতো। আল্লাহ্‌র কসম, এটাই হল হযরত আলী এবং হুসাইন তথা আহলে বাইতের (রাঃ) আকিদা-বিশ্বাস এবং কর্মপদ্ধতি।

رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالْإِيمَانِ وَلَا تَجْعَلْ فِي قُلُوبِنَا غِلًّا لِلَّذِينَ آمَنُوا
হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদেরকে এবং ঈমানে অগ্রনী আমাদের ভ্রাতাগণকে ক্ষমা কর. এবং ঈমানদারদের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে কোন বিদ্বেষ রেখো না। (সূরা হাশর-১০)

তাই আসুন আমরা যেন আশুরার গুরুত্ব সঠিক ভাবে বুজে আমল করার তৌফিক যেন আল্লাহ সুবানাহুতালা আমাদের দান করুন। এবং সকল প্রকার বিদআতি কাজ পরিহার করে সুন্দর ভাবে যেন পরকালের কাজ করতে পারি মহান মালিক যেন আমাদের সেই তৌফিক দান করুন।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!