ঢাকা : বই মানুষের পরম বন্ধু। বইয়ের উপকারিতা বর্ণনা করতে গেলে হয়তো আস্ত এক ‘বই’ ই লিখতে হবে। সে কথায় না যাই! আজ হোক বুক ক্যাফে নিয়ে আলোচনা। যেখানে বই পড়া, বেচাকেনা সহ খাওয়া দাওয়ার ও সুব্যবস্থা রয়েছে। চায়ের কাপে এক চুমুক দিয়ে বইয়ের মধ্যে ডুবে যাওয়ার ব্যাপারটাই তো অন্যরকম! বুকক্যাফে পাশ্চাত্যে খুব পুরনো বিষয় হলেও আমাদের দেশে এই কনসেপ্ট নিয়ে কাজ হয়েছে মাত্র কয়েকবছর হল। ইতোমধ্যে তা শহরবাসীর মধ্যে সাড়াও ফেলেছে ব্যাপক ভাবে।
বেঙ্গল বই বইপ্রেমীদের স্বর্গ বলা যায় বেঙ্গল বইকে। ২০১৭ তে যাত্রা শুরুর করার অল্প ক’দিনের মধ্যেই ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে এটি। কয়েকতলা বিশিষ্ট ভবনের প্রতিটি তলা সাজানো রয়েছে দেশী,বিদেশী, নতুন পুরনো নানা বই দিয়ে। শিশুদের জন্য রয়েছে আলাদা বিভাগ। বসে বই পড়ার জন্য রয়েছে অনেক জায়গা। চা, কফি, সিঙ্গাড়া, চপ আরো নানারকম নাস্তার ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে। বই পড়া, চা খাওয়ার পাশাপাশি নিচ তলায় রয়েছে আড্ডা দেয়ারও সুব্যবস্থা। শহরের কর্মব্যস্ততা থেকে একটু অবসর পেতে হলে ঘুরে আসতে পারেন বেঙ্গল বই থেকে। ঠিকানা : ১/৩, ব্লক ডি, লালমাটিয়া।
দীপনপুর : দীপনপুর বইপ্রেমীদের জন্য আরেকটি আরামের স্থান।ঘন্টার পর ঘন্টা এখানে বই নিয়ে কাটিয়ে দেওয়া যায় অনায়াসে। শিশুদের জন্য রয়েছে আলাদা কর্নার। এখানকার ক্যাফের নাম ‘ক্যাফে দীপাঞ্জলী।’ চা কফি সহ হালকা নাস্তার ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে। দীপনপুরের আরেকটি আকর্ষণ ‘দীপনতলা’ যেখানে সাহিত্য আসরের আয়োজন করা হয়ে থাকে। ঠিকানা : ২৩০, এলিফ্যান্ট রোড।
বাতিঘর: বাতিঘর বইপ্রেমীদের জন্য একটি অভিজাত জায়গা। বইয়ের বিশাল ভাণ্ডার যেকোন বইপাগল মানুষের মন ভালো করে দিবে অনায়াসে। ঠিকানা : বাংলামোটর, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের ৮ম তলা।
পাঠক সমাবেশ: পাঠক সমাবেশ যেন বিশাল এক বাগান। সেখানে থরে থরে ফুটে আছে বই নামের ফুল। এখানে আসলে সময় কীভাবে কেটে যাবে তা বলা দুষ্কর। এখানেও রয়েছে চা নাস্তার বন্দোবস্ত। ঠিকানা : শাহবাগ (আজিজ মার্কেটের উল্টোদিকে)।
অন্যান্য : বই পড়া বা বিক্রি মূল উদ্দেশ্য না হলেও কিছু কিছু রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠেছে যেখানে খেতে খেতে বই পড়া যায়।
বুক ক্যাফে: ছোট্ট একটি খাবার দোকান, দোকানের পেছন দিকে ছিমছাম একটি বইয়ের শেলফ। ৩/৪ তাক জুড়ে দেশের বিখ্যাত লেখকদের বই সাজানো। একগ্লাস জুস খাবার সাথে সাথে বইগুলো নেড়েচেড়ে সময় কাটাতে পারেন এখানে। ঠিকানা: আজিজ কো অপারেটিভ সুপার মার্কেট (নিচতলা)শাহবাগ।
ক্যাফে ফাইভ এলিফ্যান্ট: ছোট্ট এই রেস্টুরেন্টের মূল আকর্ষণ ‘মোমো’ হলেও দেয়ালে সাঁটানো বইয়ের তাক এই ক্যাফের সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলেছে। তবে, বইগুলো প্রায় সবই হুমায়ূন আহমেদের। ঠিকানা : ১৫৬ এলিফ্যান্ট রোড (২য় তলা), হাতিরপুল মোড়।
নর্থ ইন্ড, ধানমন্ডি : রেস্টুরেন্টটিতে দেশী বিদেশী নানা খাবারের পাশাপাশি রয়েছে ‘বুক ওয়ার্ম’ নামের কর্নার, যা সাজানো হয়েছে দেশী বিদেশী নানা বই দিয়ে।
নার্ডি বিন কফি হাউস : শহরের অভিজাত রেস্টুরেন্ট গুলোর একটি। পুরো রেস্টুরেন্ট জুড়ে রয়েছে বাংলা ও ইংরেজি ভাষার বই। এখানে খেতে খেতে বই পড়া বা পড়তে পড়তে খাওয়া দুই ই করা যাবে। ঠিকানা : আহমেদ অ্যান্ড কাজী টাওয়ার, বিল্ডিং ৩৫, রোড ২, ধানমন্ডি।
ইমপাস্তো : পিৎজা আর পাস্তার জন্য পরিচিত হলেও এদের রয়েছে এক শেল্ফ কমিক আর ম্যগাজিনের কালেকশন। যেগুলো নেড়েচেড়ে দেখতে গিয়ে আপনি চলে যেতে পারেন শৈশবে। ঠিকানা: বাড়ি নম্বর ৩৯, রোড ২, ধানমন্ডি, ঢাকা।
তাহলে আর দেরি কেন! মনের খোরাক মেটানোর সাথে হালকা পেট পূজা করতে চলে যান যেকোন একটি বুক ক্যাফেতে!
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :