• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঈদুল আজহায় রেমিটেন্স আসার নতুন রেকর্ড


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ১৭, ২০১৯, ১০:৪১ এএম
ঈদুল আজহায় রেমিটেন্স আসার নতুন রেকর্ড

ঢাকা : ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রায় ১৭৫ কোটি ডলারের রেকর্ড পরিমাণ রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। মুদ্রা বিনিময় হার (৮৪.৫০) অনুযায়ী যা ১৪ হাজার ৭৮৭ কোটি টাকা। বন্ধের দিনগুলো বাদ দিলেও চলতি আগস্টের প্রথম ১০ দিনে এ রেমিটেন্সে এসেছে। বিপুল অংকের এ রেমিটেন্সের বেশিরভাগই মধ্যপ্রাচ্য থেকে এসেছে। সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা, এ সময়ে তা রেকর্ড ১৮০ কোটি ডলার ছাড়ানোর ।

বিভিন্ন ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবারের মতো এবারও রেমিটেন্স গ্রহণের শীর্ষে ইসলামী ব্যাংক। ব্যাংকটি ৯ আগস্ট পর্যন্ত রেমিটেন্স পেয়েছে ১৪ কোটি ৩৭ লাখ ডলার।

এছাড়া ১০ আগস্ট পর্যন্ত অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিটেন্স এসেছে ১০ কোটি ডলার। ৯ আগস্ট পর্যন্ত ৬ কোটি ২৯ লাখ ডলারের রেমিটেন্স পেয়ে তৃতীয় স্থানে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক।

এ সময় ৫ কোটি ৬৩ লাখ ডলারের রেমিটেন্স পেয়েছে সোনালী ব্যাংক। জনতা ব্যাংক পেয়েছে ৩ কোটি ১৪ লাখ ডলার। সাউথইস্ট ব্যাংকের রেমিটেন্সও প্রায় ৩ কোটি ডলার।

জানতে চাইলে অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামস উল ইসলাম  বলেন, রেমিটেন্স পেতে ঈদের আগে শুক্র-শনিবার ছুটির দিনেও সারা দেশে ১৭৯টি শাখা খোলা রেখেছিলাম।

এছাড়া সরকারি ব্যাংকের মধ্যে প্রথমবারের মতো অগ্রণী ব্যাংক সিঙ্গাপুর থেকে বিকাশের মাধ্যমে দেশে রেমিটেন্স এনেছে। সব মিলিয়ে মাত্র ১০ দিনেই ১০ কোটি ডলার রেমিটেন্স আনা সম্ভব হয়েছে বলে জানান তিনি।

জনতা ব্যাংকের এমডি আবদুছ ছালাম আজাদ  বলেন, কোরবানির ঈদে রেমিটেন্স প্রবৃদ্ধি ভালো। অন্য ঈদের তুলনায় এবার রেমিটেন্স বেশি এসেছে। মাস শেষ হলে রেমিটেন্স আরও বাড়বে।

এদিকে ২০১৯-২০ অর্থবছর শুরু হয় রেমিটেন্স প্রবাহের সুখবর দিয়ে। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৬০ কোটি ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। রেমিটেন্সের এ অংক মাসের হিসাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এবং গত বছরের জুলাইয়ের চেয়ে ২১ দশমিক ২০ শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম  বলেন, গত অর্থবছরের ধারাবাহিকতায় চলতি অর্থবছরেও ভালো প্রবৃদ্ধি নিয়ে শুরু হয়েছে।

কোরবানির ঈদ সামনে রেখে পরিবার-পরিজনের কাছে বেশি টাকা পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এছাড়া ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেয়ার কারণেও রেমিটেন্স বাড়ছে।

এর আগে রোজা ও ঈদ সামনে রেখে মে মাসে ১৭৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার রেমিটেন্সে আসে, যা ছিল মাসের হিসাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। তার আগে ১ মাসে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স এসেছিল চলতি বছরের জানুয়ারিতে, ১৫৯ কোটি ৭২ লাখ ডলার।

সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, প্রস্তুতির অভাবে প্রবাসীদের পাঠানো অর্থের ওপর ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেয়া এখনও শুরু করা যায়নি।

যখনই শুরু করা হোক না কেন ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ জুলাই থেকেই ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা পাবেন প্রবাসীরা। তিনি বলেন, প্রণোদনা দেয়ার জন্য সিস্টেম আপডেট করতে আরও ২ থেকে ৩ মাস সময় লাগবে। এখন রেমিটেন্স পাঠালেও দুই শতাংশ প্রণোদনা, ৬ মাস পরে হলেও পাবে।

বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি হল বিদেশে থাকা বাংলাদেশিদের পাঠানো অর্থ বা রেমিটেন্স। বর্তমানে এক কোটির বেশি বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। জিডিপিতে রেমিটেন্সের অবদান ১২ শতাংশের মতো।

স্থানীয় বাজারে ডলারের তেজিভাব এবং হুন্ডি ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা পদক্ষেপের কারণে বেশ কিছুদিন ধরেই রেমিটেন্স বাড়ছে বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

প্রবাসীরা ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১ হাজার ৬৪১ কোটি ৯৬ লাখ (১৬.৪২ বিলিয়ন) ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন, যা ২০১৭-১৮ অর্থবছরের চেয়ে ৯ দশমিক ৬ শতাংশ এবং অতীতের যে কোনো বছরের চেয়ে বেশি। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৯৮ কোটি ১৭ লাখ (১৪.৯৮ বিলিয়ন) ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।

সোনালীনিউজ/এএস

 

Wordbridge School
Link copied!