• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাবি ক্যাম্পাস


ঢাবি প্রতিনিধি জুন ২০, ২০১৭, ১২:৫০ পিএম
ঈদের ছুটিতে ফাঁকা ঢাবি ক্যাম্পাস

ঢাকা : স্বপ্ন-টানে দিলাম পাড়ি; অচিন পথে, আপন ছাড়ি পেছন ফেলে উঠান-বাড়ি, প্রিয়মুখ আর স্মৃতির সারি মন বলে চল ফিরে আবার, স্বপ্ন যাবে বাড়ি আমার ।

গানটি মনের মধ্যে বাজতেই বাড়ির প্রতি আমাদের এক অন্য রকম আবেগ জেগে ঊঠে । অন্তরে ভেসে উঠে প্রিয় গ্রাম, চেনাপথ, আর প্রিয় মানুষদের ছবি। তাইতো কোলাহল ব্যস্ত নাগরিক জীবন ছেড়ে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরার জন্য বরাবরই আমাদের দুর্বলতা কাজ করে। আর ঈদের সময়টুকুতে এই দুর্বলতার মাত্রাটা যেনো একটু বেশিই ছাড়িয়ে যায় । প্রিয়জনদের সাথে ঈদের আনন্দটুকু ভাগাভাগি করে নিতে সবাই ছুটে চলি চিরচেনা গ্রামের পথে ।

নাড়ির টানে বাড়ি ফেরার আকুতি অন্যসব শহুরে নাগরিকের মতোই ছুঁয়ে গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো শিক্ষার্থীদের মাঝে । ঈদকে সামনে রেখে সবাই ছুটে চলেছে বাড়ির পথে ।উদ্দেশ্য প্রিয় মানুষদের প্রিয়মুখগুলো দেখা এবং তাদের সাথে ঈদ করা। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের প্রায় পুরোটাই এখন ফাঁকা ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ টি আবাসিক হলের প্রায় সব কটি হলই প্রায় একেবারে ফাঁকা । অধিকাংশ শিক্ষার্থীই ইতোমধ্যে বাড়ি চলে গেছে। যারা এখনো যাননি তাদের অনেকেই দু’এক দিনের মধ্যে চলে যাবেন বলে জানায় । বন্ধ হয়ে গেছে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের খাবারের মেসগুলো।

ইসলাম ধর্মব্যতীত অন্যান্য ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র আবাসিক হল জগন্নাথ হলের অবস্থাও ভিন্ননয় । দীর্ঘছুটি পরিবারের সাথে কাটাতে ইতোমধ্যেই এই হলের অনেক শিক্ষার্থীই হল ছেড়েছে ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, ভিসিচত্বর, কার্জনহল, পলাশীমোড় এবং বিজয় একাত্তর হলের সামনেসহ যেসব জায়গাগুলো সর্বদা শিক্ষার্থীদের প্রাণচাঞ্চল্যেমুখর হয়ে থাকতো তা এই অল্প কয়েক দিনে অনেকটাই কমে গেছে । চোখে পড়েনা শিক্ষার্থীদের চিরচেনাআড্ডা ।

ক্যাম্পাস ফাঁকা হওয়ার সবচেয়ে বেশি প্রভাবলক্ষ করা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘পাবলিকলাইব্রেরি’র ভিতরে একটু ঢুমারলেই । আগে যেখানে লাইব্রেরীতে একটি সিট পাওয়ার আশায় ভোর থেকেই শিক্ষার্থীদের দীর্ঘক্ষণ লম্বালাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যেত, সেখানে এখন ভিতরে সিট খালি থাকছে অহরহ। নেই কোন লম্বালাইন ।

গ্রীষ্ম কালীন ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গত ১ জুন থেকে ছুটি ঘোষণা করে । তবে কিছু বিভাগ এই ছুটির মধ্যেই সেমিস্টার পরীক্ষা নিয়ে নেয় । ফলে ইচ্ছা থাকা স্বত্বেও ছুটির শুরুতে বাড়ি যেতে পারেননি আবাসিক হলগুলোর শিক্ষার্থীদের একটি বিরাটঅংশ । আবার কেউ কেউ টিউশনি, পার্টটাইম চাকরি এবং রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশ নেয়ার কারণে বাড়িতে একটু দেরী করেই যাচ্ছেন ।

সোমবার বিকেলে হাজী মুহম্মদ মুহসিন হলের সামনে এই প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় ওই হলের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদ এর সাথে, যে বাড়ির পথে রওয়ানা দিয়েছে মাত্র । ছুটি ঘোষণার এতোদিন পর বাড়ি যাওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করতেই তার উত্তর ‘টিউশনি করাই এজন্য একটু দেরী করেই বাড়ি যাওয়া হচ্ছে ।’

তাছাড়া আরো যারা একটু দেরী করেই বাড়ি যাচ্ছেন তাদের একজন বিজয় একাত্তর হলের ৩য় বর্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী আবু ইউনুছ । তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিয়মিত অংশ নেয়ার কারণে এবার একটু দেরীতেই বাড়ি যেতে হচ্ছে । তবে আশা করি যথা সময়ে বাড়ি গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সাথে ঈদ করতে পারবো।’

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অফিসগুলোতে আগামী ২২ জুন থেকে ছুটি শুরু হবে । ফলে, অফিসগুলোর যেসব কর্মকর্তা–কর্মচারীরা ক্যাম্পাসে থাকেন তাদের সবাই ২২ তারিখের পরেই ক্যাম্পাস ত্যাগ করবেন বলে জানা যায় ।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!