• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদের দিন কাঁদছে সন্তানেরা, কখন জেল থেকে ফিরবে বাবা-মা


সাতক্ষীরা প্রতিনিধি মে ২৬, ২০২০, ০৮:৩৬ এএম
ঈদের দিন কাঁদছে সন্তানেরা, কখন জেল থেকে ফিরবে বাবা-মা

ঢাকা : সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় তিন শতক জমির ওপর একটি বসতঘর নিয়ে বিরোধ দুই ভাইয়ের। বিরোধ গড়িয়েছে জেলখানা পর্যন্ত।

বড় ভাই কামরুজ্জামানের মামলায় জেল হাজতে রয়েছেন ছোট ভাই ও তার স্ত্রী। এ অবস্থায় অন্যের জিম্মায় রয়েছে ছোট ভাইয়ের দুই অবুঝ শিশু সন্তান। ইদের দিন কাঁদছে তারা।

অবুঝ দুই শিশু মারিয়া (৮) ও মার্জিয়া (৩)। তাদের বাবা মারুফ হোসেন ও মা সাবিনা ইয়াসমিন বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন। তারা কলারোয়া সদরের সরকারি কলেজের পূর্বপাশের বাসিন্দা। মারুফ হোসেন ও কামরুজ্জামান ওই এলাকার মৃত অমেদ আলীর ছেলে।

মা-বাবা জেলখানায় থাকা অবস্থায় দুই শিশু রয়েছে কলারোয়া পৌরসভার ঝিকড়া গ্রামের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ফজলুর রহমানের জিম্মায়।

ফজলুর রহমান বলেন, কলারোয়া সরকারি কলেজের পূর্বপাশের বাসিন্দা বড় ভাই কামরুজ্জামান ও ছোট ভাই মারুফ হোসেনের মধ্যে তিন শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল দীর্ঘদিন। সেখানে একটি বসতঘর রয়েছে। যে ঘরে মারুফ বসবাস করেন। ঘরটির জমি বড় ভাই কামরুজ্জামান নিজের বলে দাবি করে আসছেন।

তিনি বলেন, ওই জায়গা নিয়ে কয়েকবার স্থানীয়ভাবে সালিশ বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে জমি মারুফ হোসেনকে দেয় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। তবে বড় ভাই কামরুজ্জামান দাবি করেন মা মৃত্যুর আগে ওই জমি তাকে টিপসই দিয়ে লিখে দিয়েছেন। ওই জমির ঘরটিতে কামরুজ্জামান তালা ঝুলিয়ে দিলে শনিবার (২৩ মে) ছোট ভাই মারুফ হোসেন তালা ভেঙে পাল্টা তালা লাগিয়ে দেন। এ ঘটনায় কামরুজ্জামান মামলা দেন।

ফজলুর রহমান বলেন, রোববার (২৪ মে) মারুফ ও তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ। তাদের দুই শিশু সন্তানকে উপজেলা চেয়ারম্যানের জিম্মায় দেয়া হয়। ইদের দিন মা-বাবার জন্য কাঁদছে দুই শিশু। ছোট মেয়ে মার্জিয়া এখনও মায়ের দুধ খায়। কোনোভাবে তাকে সামলানো যাচ্ছে না।

কলারোয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু বলেন, তারা তিন ভাই। জীবিত থাকা অবস্থায় মায়ের কাছ থেকে তিন শতক জমি লিখে নেন বড় ভাই কামরুজ্জামান। বর্তমানে নদীতে চর উঠে সেখানে ৯-১০ শতক জমি হয়েছে। সেই জমিতে কামরুজ্জামান কাউকে থাকতে দিতে চান না। মূলত এটা নিয়েই বিরোধ। এ ঘটনায় কলারোয়া থানায় মামলা হলে মারুফ হোসেন ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠায় পুলিশ। মানবিক দিক বিবেচনা করে দুই শিশু সন্তানকে ফজলুর রহমানের জিম্মায় দিয়েছি আমি।

এ বিষয়ে কামরুজ্জামান বলেন, আমার তালা দেয়া ঘরে রবিবার বিকেলে স্ত্রীকে রান্না করতে বলি। ছোট ভাই মারুফ তখন বাড়িতে ছিল। মারুফ এখানে বসবাস করতো না। তিন বছর ধরে বসবাস করছে। আমার ঘরের তালা ভেঙেছে। আমাকে মারপিট করেছে, স্ত্রীকেও মারপিট করেছে। পরে থানায় মামলা দিয়েছি। ঘরটি আমি সাত বছর আগে তৈরি করেছি। ওই ঘরটি মারুফ তার নিজের বলে দাবি করছে। তার সন্তানরা কার কাছে রয়েছে আমি জানি না।

কলারোয়া থানা পুলিশের ওসি শেখ মুনীর উল গিয়াস বলেন, বড় ভাই কামরুজ্জামান থানায় মামলা দিয়েছেন। মামলায় ছোট মারুফ ও তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে রবিবার জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!