• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
দাবি না মানলে গণঅভ্যুত্থান

উজ্জীবিত ঐক্যফ্রন্ট, বাড়ছে পরিধি


বিশেষ প্রতিনিধি অক্টোবর ২৬, ২০১৮, ০২:৩২ পিএম
উজ্জীবিত ঐক্যফ্রন্ট, বাড়ছে পরিধি

ঢাকা : রাজপথের প্রথম কর্মসূচি সিলেটে সমাবেশ করেই আশাবাদী হয়ে উঠেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সমাবেশকে সামনে রেখে সিলেটের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে যে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়েছিল তার পরও নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণের উপস্থিতির জন্য অভিভূত হয়েছেন ফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ অক্টোবর) এমনটাই জানিয়েছেন ফ্রন্টের নেতারা। তারা বলেন, সিলেটের সমাবেশে বিপুল জনসমাগম দেখে সরকার ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। আর তাই চট্টগ্রামে ফ্রন্টের সমাবেশের অনুমতি দিতে গড়িমসি শুরু করেছে।

ফ্রন্টের নেতারা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সামনের দিনগুলোতে ফ্রন্টের বাইরে থাকা রাজনৈতিক দলগুলো পর্যায়ক্রমে সরকারবিরোধী একছাতার নিচে সমবেত হবে। প্রথম সমাবেশ শেষে অনুভূতি কী জানতে চাইলে ফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বাংলাদেশের খবরকে বলেন, ফ্রন্ট জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে কাজ করছে। তার প্রাথমিক সুফল সিলেটে পাওয়া গেছে।

শিগগিরই দেশের জনগণ ফ্রন্টের ছায়াতলে সমাবেত হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, সামনের দিনগুলোতে ফ্রন্টের পরিধি বাড়বে। সহসাই সরকার ফ্রন্টের ৭ দফা দাবি মেনে নেবে। অন্যথায় সরকারের বিরুদ্ধে দেশে গণঅভ্যুত্থান হতে বাধ্য।

এদিকে গতকাল রাতে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের বাসায় বৈঠক করেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠককালে ড. কামাল বঙ্গবীরকে ফ্রন্টে যোগ দেওয়ার অনুরোধ করেছেন। শিগগিরই তিনি ফ্রন্টে যোগ দেবেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ফ্রন্টের আহ্বায়ককে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গণফোরামের এক নেতা বাংলাদেশের খবরকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মন্ত্রিসভায় স্থান দেওয়ার নাম করে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের টোপ দিয়ে রেখেছিল সরকার। কিন্তু আসলে যে সরকার তাদের সঙ্গে প্রতারণা করবে তা ইতোমধ্যে তারা টের পেয়েছেন। তারই অংশ হিসেবে ফ্রন্টের বাইরে থাকা রাজনৈতিক দলগুলো ফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।

ইতোমধ্যে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের শরিক লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সভাপতি ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদের প্রতিনিধি হিসেবে এলডিপির মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাৎ হোসেন সেলিম সিলেটের সমাবেশে যোগ দিয়েছেন।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান বলেন, গত ১৩ অক্টোবর বিএনপি, গণফোরাম, নাগরিক ঐক্য ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সমন্বয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর সরকার বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটে ভাঙনের চেষ্টা করেছে। কিন্তু সরকার সফল হয়নি। বরং গত ২৪ অক্টোবর সিলেটের সমাবেশে ২০-দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর নেতারা অংশ নিয়েছেন। তারা বক্তব্য দিয়েছেন। পর্যায়ক্রমে সরকারবিরোধী সব রাজনৈতিক দল ফ্রন্টের ছায়াতলে সমবেত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান।

এদিকে ফ্রন্টের নেতারা বলেন, ফ্রন্টের প্রথম রাজনৈতিক সমাবেশকে সামনে রেখে সরকারের পক্ষ থেকে উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড করা হয়েছে। কিন্তু ফ্রন্ট উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডে পা না দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করেছে। একই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে দেওয়া বক্তব্যে বলেছেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করা হবে।

আসলে তিনি যা বলেন, তা যে করেন না তার প্রমাণ সিলেটে পাওয়া গেছে। ফ্রন্ট শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করলেও সমাবেশ শেষে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য খন্দকার মুক্তাদির চৌধুরীসহ ৪০ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে।

গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, সরকার সিলেটের সমাবেশ বানচাল করতে অনেক অপচেষ্টা চালিয়েছে। সমাবেশের ২-৩ দিন আগে থেকে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সিলেট শহর জুড়েই যেন অঘোষিত সান্ধ্য আইন জারি করে রেখেছিল। পাইকারি হারে ধরপাকড় চালিয়েছে। কিন্তু সফল হয়নি। জনগণ যে সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে তা সমাবেশের মাধ্যমে প্রমাণ হয়েছে। সামনের দিনগুলোতে যে সমাবেশগুলো আসছে তাতে জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন বলেন, সিলেটে ফ্রন্টের সমাবেশকে ঘিরে গত কয়েক দিন ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। এর পরও সমাবেশের দিন গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এতে সরকার আতঙ্কিত হয়ে সমাবেশের পর বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য খন্দকার মুক্তাদির চৌধুরীসহ ৪০ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে।

শিগগিরই সরকারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান হবে এবং সরকার পালানোর পথ খুঁজে পাবে না বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন জেএসডির এই সাধারণ সম্পাদক।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!