• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

উত্তপ্ত হচ্ছে রাজপথ


বিশেষ প্রতিনিধি জুলাই ২, ২০১৯, ০১:৫৬ পিএম
উত্তপ্ত হচ্ছে রাজপথ

ঢাকা : শীতলতা কাটছে রাজপথের। দীর্ঘদিন পর মাঠে নামছে রাজনৈতিক দলগুলো। দীর্ঘ দেড় বছর পর আবারো হরতালের মতো কর্মসূচি ডাকা হয়েছে। গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ইস্যুতে সরকারবিরোধীরা নিজ দল, জোটের ব্যানারে প্রতিবাদ কর্মসূচি দিচ্ছে।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) সারা দেশে প্রতি থানায় বিক্ষোভ মিছিল করবে বিএনপি। সরকারবিরোধীদের মতে, এ ইস্যুতে রাজপথে নামলে জনসমর্থনও মিলবে। কারণ এই সিদ্ধান্তের ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কৃষি, বিদ্যুৎ, শিল্পকারখানা ও পরিবহন সেক্টরে। সীমিত আয়ের মানুষেরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়বে। বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, শিল্পকারখানার ওপর চাপ বাড়বে, দেশে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেবে। এই ইস্যুতে ক্ষোভের পারদ উঠেছে ব্যক্তি পর্যায়েও।

গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে ইতোমধ্যে বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে আছে বেশ কিছু সংগঠন। সরকারের এ সিদ্ধান্তের পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও অরাজনৈতিক সংগঠন।

সোমবার (১ জুলাই) বিক্ষোভ শেষে হরতালের ডাক দিয়েছে বাম রাজনৈতিক দলগুলো। আগামী ৭ জুলাই তারা অর্ধদিবস হরতাল পালন করবে। বাম জোটের হরতালে সমর্থন দেবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

গত ৩০ জুন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কমিশন জানায়, গ্যাসের দাম ৩২ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। ১ জুলাই (গতকাল সোমবার) থেকে এই দাম কার্যকর হবে। এই দাম অনুযায়ী এক চুলার জন্য গ্রাহকদের ৭৫০ টাকার বদলে ৯২৫ টাকা এবং দুই চুলার গ্রাহকদের ৮০০ টাকার বদলে ৯৭৫ টাকা করে গুনতে হবে। আবাসিকে প্রিপেইড মিটারে প্রতি ঘনমিটার ১২ দশমিক ৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। এ সিদ্ধান্তের পরই দলগুলো প্রতিক্রিয়া জানায়, অনৈতিকভাবে লাভবান হতে সরকার গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে।

সোমবার (১ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করে কয়েকটি বাম জোট ও গণসংহতি আন্দোলন। বাম জোটে ছিল সিপিবি-বাসদ, গণসংহতি আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টিসহ আটটি দল।

সমাবেশে বিক্ষোভকারীরা বলছেন, গ্যাসের দাম বাড়ানো হলে উৎপাদনশীল খাতে প্রভাব ফেলবে। জনগণের জীবন দুর্বিষহ করতেই সরকার গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে, দাম বৃদ্ধির দায় চাপাচ্ছে জনগণের কাঁধে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় সম্পাদক পরিষদের সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, গ্যাস সম্পদকে জিম্মি করে গ্যাস আমদানি করে এর সুবিধা ভোগ করবে দেশি-বিদেশি লুটেরা ব্যবসায়ীরা। তাই ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষার্থে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে জনগণকে জিম্মি করছে সরকার।

একদিকে বাজেটে কর বসিয়ে জনগণের পকেট কাটা হয়েছে, আরেক দিকে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে পকেট উজাড় করা হচ্ছে। ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের মধ্য দিয়ে এই অন্যায়, অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত ঠেকাতে হবে। গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে সিপিবির পক্ষ থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত টানা বিক্ষোভ চলবে বলে জানান তিনি।

এর আগে এই প্রতিবাদে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল করে বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠন। গতকাল দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবার কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়।

এ সময় গ্যাসের দাম বাড়ার কারণে সব ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে দাবি করে রিজভী বলেন, ১৯৯৬ সালেও আওয়ামী লীগ গ্যাসের দাম বাড়িয়েছিল। এবারও গণবিরোধী এই সরকার গ্যাসের দাম বাড়াল। মূলত ক্ষমতাসীনদের স্বজনদের লুটপাটের সুবিধার্থেই সরকারের এ সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার দেশের সব জেলা সদর ও ঢাকার প্রতিটি থানায় প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

এদিকে গত ৩০ জুন থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও অরাজনৈতিক সংগঠন গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে আসতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে। কেউ বিবৃতিতে, কেউবা সভা-সমাবেশ করে। তাদের হুঁশিয়ারি-দাবি না মানলে আরো বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!