• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ অনিশ্চিত


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ১৭, ২০১৯, ০২:০৫ পিএম
উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ অনিশ্চিত

ঢাকা : আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। গত মঙ্গলবার দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভা করেছে বিএনপি। সভার সিদ্ধান্ত- তারা আর সরকারের ‘পাতানো’ নির্বাচনে যেতে চায় না। ওই নির্বাচনে অংশ নিয়ে শুধু ‘ভোট ডাকাতি’কে বৈধতা দেওয়া ছাড়া কোনো ফল দেখছেন না দলটির নীতিনির্ধারকরা।

তৃণমূল নেতাকর্মীরাও ফলাফলবিহীন নির্বাচনের বিপক্ষে। তবে তাদের জোট (২০-দলীয় জোট) ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বিএনপি।

বৃহস্পতিবার (১৭ জানুয়ারি) ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সভা হবে।  

একাধিক সূত্রের খবর, ঐক্যফ্রন্টের কেউ কেউ আসন্ন নির্বাচনেও অংশ নেওয়ার পক্ষে। তারা অনানুষ্ঠানিক মতামতও প্রকাশ করেছেন। তাদের যুক্তি- দেশ-বিদেশের কাছে প্রমাণিত হয়েছে গত ৩০ ডিসেম্বর এই দেশে প্রশ্নবিদ্ধ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মানুষের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিয়ে সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে দ্বিতীয় দফায় প্রশ্নবিদ্ধ করা উচিত। শরিকদের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে এ নিয়ে শলাপরামর্শও হয়েছে।

এদিকে ২০-দলীয় জোটের শরিক দলগুলো শুধু উপজেলা নির্বাচনই নয়, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনেই যাওয়ার পক্ষে নয়। তাদের এই মতের পক্ষে একাধিক যুক্তিও উপস্থাপন করা হয়েছে জোটের বর্তমান শীর্ষ নেতার কাছে।

লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) সম্পাদক পর্যায়ের এক নেতা বলেন, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারলে, ভোটারের ভোট রক্ষার নিশ্চয়তা দিতে না পারলে শুধু শুধু নির্বাচনে অংশ নিয়ে লাভ নেই। বরং নির্বাচন ঘিরে শত শত নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেফতার, জেলে পুরা এবং কোটি কোটি টাকা নষ্ট হয়। তার মতে, নির্বাচনে যাওয়ার আগে রাজনৈতিক শক্তি সঞ্চয় করার দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।

আনিসুল হকের মৃত্যুতে পদ শূন্য হওয়া ঢাকা উত্তরের মেয়র পদে উপ-নির্বাচন এবং নতুন যুক্ত হওয়া ১৮টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর নির্বাচনের জন্য ২০১৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোটের দিন রেখে তফসিল দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। স্থানীয় দুই ব্যক্তির আপিলে নির্বাচনে স্থগিতাদেশ আসে।

গতকাল বাদীর আইনজীবী আদালতে না আসায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়ের পদে উপ-নির্বাচন ও সম্প্রসারিত অংশের কাউন্সিলের নির্বাচন নিয়ে রুল খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর ফলে ওই নির্বাচনের ওপর হাইকোর্টে স্থগিতাদেশ উঠে যাচ্ছে এবং ভোট আয়োজনে আইনগত কোনো বাধা থাকছে না বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।  

এই আদেশের খবরে ঢাকা উত্তরে ভোটের আলোচনা শুরু হয়েছে। এদিকে মেয়াদ শেষ হয়ে আসছে উপজেলা চেয়ারম্যানসহ অন্যদের। আগামী মার্চে নির্বাচন।

বিএনপি নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে জানান, ৫ বছর আগে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল বিএনপি-জামায়াত। তাদের প্রত্যাশার কাছাকাছি প্রাপ্তি ছিল। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের ফলে যে হতাশা জমেছিল ওই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তা কেটে যায়। নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রস্তুতিও নেয়। কিন্তু বিজয়ী অধিকাংশ প্রতিনিধিই নিজ চেয়ারে বসতে পারেননি। উল্টো মামলা-জেলজুলুমের শিকার হয়েছেন। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে নতুন করে হিসাব-নিকাশে নেমেছে দলটি। মতামত নিচ্ছে জোট শরিকদেরও।

গত মঙ্গলবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভা হয়েছে। তাতে আলোচনা হয়েছে স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে। একাধিক সদস্যই আসন্ন উপজেলা নির্বাচন বর্জনের পক্ষে মত দিয়ে বলেছেন, নির্বাচনের মাঠে রেখে সরকার বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, হামলা-মামলা দিয়ে হতাশাগ্রস্ত করছে। আর্থিক ক্ষতির অঙ্কটাও অনেক। বিভিন্ন দিক বিচার করে তাই নির্বাচনে না যাওয়াই উচিত হবে। তারপরও ২০-দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মতামত নেওয়ার পরামর্শ আসে সভা থেকে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!