• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

এই কারণে জিততে পারল না ক্রোয়েশিয়া


ক্রীড়া ডেস্ক জুলাই ১৬, ২০১৮, ০৮:৪৫ পিএম
এই কারণে জিততে পারল না ক্রোয়েশিয়া

ঢাকা: সব হারই লজ্জার নয়। কিছু কিছু হারের মধ্যেও লুকিয়ে থাকে গৌরব। রোববার রাতে মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার পরাজয়ও ঠিক তাই। বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে না উঠলেও মানুষের মন জিতেছেন লুকা মডরিচরা। হেরেও তাই বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে গেলেন না ক্রোটরা।

কিন্তু কেন হারতে হল রাকিতিচ, মান্দজুকিচদের? প্রথমার্ধের শুরু থেকেই বিপক্ষ রক্ষণে ক্রমাগত আক্রমণ শানিয়ে গিয়েছেন তাঁরা। তবে গোলের মুখ খোলা যায়নি। আর ফ্রান্স যখনই সুযোগ পেয়েছে তার বেশির ভাগই কাজে লাগিয়েছে। এখানেই বড় তফাত হয়ে গেছে।

ভাগ্যের খেলাও রয়েছে। ফুটবলমহলে মজা করে বলাবলি হচ্ছে,  ফ্রান্স করেছে দুই গোল আর ক্রোয়েশিয়া চার। প্রথমার্ধে ফ্রান্সের দুই গোলেই রয়েছে ভাগ্য। প্রথমে মান্দজুকিচের আত্মঘাতী গোল ও তারপর বক্সের মধ্যে পেরিসিচের হ্যান্ডবল। যার সুবাদে পেনাল্টি পায় ফ্রান্স এবং গোল করেন গ্রিজম্যান। খানিকটা রসিকতার সুরে তাই ক্রোয়েশিয়ার গোলকে বলা হচ্ছে চার!

মজা বাদ দিলে যা পড়ে থাকছে, তা হলো ভাগ্যদেবীর বিজয়মালা এদিন ক্রোয়েশিয়ার জন্য ছিল না। সেজন্যই বিশ্বকাপ ফাইনালে নজিরবিহীন ভাবে আত্মঘাতী গোলের শিকার হতে হয়েছে। বক্সের মধ্যে হ্যান্ডবলের ব্যাপারও তাই। পেরিসিচ ইচ্ছাকৃত ভাবে বল হাত লাগাননি। রেফারি শুরুতে পেনাল্টিও দেননি। ফরাসি ফুটবলাররা হাত দেখিয়ে হ্যান্ডবল দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন রেফারিকে। খেলা থামিয়ে রেফারি তখন ‘ভিএআর’ পদ্ধতির সাহায্য নেন। এই প্রথমবার বিশ্বকাপ ফাইনালে প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে দেওয়া হলো পেনাল্টি। ফুটবলমহলে অনেকেই এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। বলা হচ্ছে, পেরিসিচ বলে হাত দেননি। বল এসে হাতে লেগেছে। যা দুর্ঘটনাবশত হয়েছে। জিততে গেলে যে ‘চান্স ফ্যাক্টর’ প্রয়োজন হয়, তা এদিন ছিল না ক্রোয়েশিয়ার।

দ্বিতীয়ার্ধে ফ্রান্সের দুই গোলের নেপথ্যে অবশ্য ভাগ্য ছিল না। ছিল পল পগবা,  কিলিয়েন এমবাপ্পের দুরন্ত স্কিলের ঝলক। তবে দায় এড়িয়ে যেতে পারে না ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণও। তৃতীয় গোলের ক্ষেত্রে ডানদিক থেকে এমবাপ্পের ক্রস পান গ্রিজম্যান। তিনি একেবারেই অরক্ষিত ছিলেন। গ্রিজম্যানের থেকে বল পান পগবা। মডরিচ তাঁকে দ্বিতীয় বার শট নেওয়া থেকে আটকাতে পারেননি। পগবা শট নেওয়ার আগে মডরিচ বুঝতেই পারেননি বল ঠিক কোথায়। এমবাপ্পেও গোলের সময় অনেকটা ফাঁকা জায়গা পেয়েছিলেন। তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানানোর মতো কেউ ছিলেন না। দুর্বল রক্ষণের মাসুল দিতে হয়েছে ক্রোটদের। ফরাসি রক্ষণ কিন্তু ক্রোয়েশিয়ার ঘনঘন আক্রমণেও বড় ভুল করেনি।

ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশঁমের ট্যাকটিকাল সিদ্ধান্তও বড় ভূমিকা নিয়েছে ফাইনালে। মাঝমাঠে একবারেই প্রত্যাশিত ছন্দে ছিলেন না এন’গোলো কঁন্তে। পেরিসিচ, মান্দজুকিচরা বারবার টপকে যাচ্ছিলেন তাঁকে। এটা লক্ষ্য করে দ্বিতীয়ার্ধে তাড়াতাড়ি তাঁকে তুলে নেন দেশঁম। নামান স্টিভেন এন’জোঞ্জিকে। তাঁর রক্ষণাত্মক গুণাবলির জন্য পগবা ও এমবাপ্পে নিজেদের সৃষ্টিশীল ফুটবল মেলে ধরার সুযোগ পান। দু’জনের গোল আসে ৫৮ মিনিটে স্টিভেন নামার পরই।

মডরিচ-রাকিতিচরা লড়েছেন, হার-না-মানা অদম্য মানসিকতা দেখিয়েছেন, কিন্তু বিপক্ষ গোলে খুব একটা শট মারতে পারেননি। নেওয়া শটের মধ্যে আটটাই গিয়েছে বাইরে। গোলবার লক্ষ্য করে ছিল মোটে তিন শট। অথচ, বলের দখলে ক্রোয়েশিয়া (৬১ শতাংশ) এগিয়ে ফ্রান্সের (৩৯ শতাংশ) থেকে। নিখুঁত পাসের ক্ষেত্রেও ফ্রান্সের (৭৫ শতাংশ) চেয়ে এগিয়ে ক্রোয়েশিয়া (৮৩ শতাংশ)। কিন্তু বল দখলে রাখাই তো শেষ কথা নয়। তা কাজে লাগানোই আসল। ফ্রান্স এখানেই বাজিমাত করে দিয়েছে।

সোনালীনিউজ/আরআইবি/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!