• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এই সেই ওয়াসিম


বিনোদন প্রতিবেদক জুলাই ২০, ২০১৯, ০৪:৫২ পিএম
এই সেই ওয়াসিম

ঢাকা : এই সেই ওয়াসিম । অনেক বছর ধরে প্রেক্ষাগৃহের পর্দা বা সিনেমার কোনো অনুষ্ঠানে তার উপস্থিতি নেই বললেই চলে। একসময় বাণিজ্যিক অ্যাকশন বিশেষ করে ফোক-ফ্যান্টাসি ছবির এক নম্বর আসনটি দখল করে নিয়েছিলেন এ অভিনেতা। তার নামের আগে  সে সময় লেখা হতো ‘বাংলা সিনেমার বরপুত্র’ খেতাব।

১৯৭২ সালে ঢাকাই ছবিতে ওয়াসিমের অভিষেক হয় সহকারী পরিচালক হিসেবে ‘ছন্দ হারিয়ে গেলো’ চলচ্চিত্রে। আর নায়ক হিসেবে তার যাত্রা শুরু হয় মহসিন পরিচালিত ‘রাতের পর দিন’ সিনেমার মাধ্যমে। দিন যতই যেতে থাকে ওয়াসিমের জনপ্রিয়তা ততই আকাশচুম্বী হয়। বাণিজ্যিক ঘরানার ছবির অপরিহার্য নায়ক হয়ে ওঠেন তিনি।

রাতদিন সমানে ছুটে  চলেন নতুন সিনেমায় অভিনয়ের মধ্যদিয়ে। সে সময় ওয়াসিম প্রযোজক পরিচালক সবার কাছে ছিলেন বাণিজ্যিক রেসের ঘোড়া। যিনি সুপার ডুপারহিট সব ছবি উপহার দিয়েছেন। শাবানা, ববিতা, কবরী, অলিভিয়া, সুচরিতা, অঞ্জু ঘোষ, অঞ্জনা, নূতন- সে সময়ের এসব অভিনেত্রীর সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেন তিনি।

তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে ‘ছন্দ হারিয়ে গেলো’, ‘রাতের পর দিন’, ‘দোস্ত দুশমন’, ‘দি রেইন’, ‘রাজদুলারী’, ‘বাহাদুর, ‘মানসী’, ‘সওদাগর’, ‘নরম গরম’, ‘বেদ্বীন’, ‘ঈমান’, ‘লাল মেম সাহেব’ প্রভৃতি। ‘বেদ্বীন’, ‘ঈমান’, ‘মানসী’-এ সিনেমাগুলোতে তার অভিনয় ব্যাপক প্রশংসিত হয়। তাকে নিয়ে যায় অনেক উচ্চতায়। ওয়াসিমের নায়িকাদের মধ্যে শাবানা ও অলিভিয়ার সঙ্গে তার অভিনয় দর্শক বেশি লুফে নিয়েছিলেন। ‘দি রেইন’ ও ‘বেদ্বীন’ সিনেমা দু’টি ওয়াসিমকে আন্তর্জাতিকভাবে সাফল্য এনে দিয়েছিল। ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় ছবি দু’টি পৃথিবীর ৪৬টি দেশে মুক্তি পায়।

সোনালী দিনের এই সুপারহিট নায়ক বর্তমানে কেমন আছেন জানতে চাইলে বলেন, আলহামদুলিল্লাহ্, আল্লাহ্ অনেক ভালো রেখেছেন। প্রাত্যহিক জীবনে নামাজ-কালাম পড়ে সবার দোয়ায় ভালোই সময় কেটে যাচ্ছে। এত কিছুর পরও মাঝে-মধ্যে মনটা বেদনায় ভরে ওঠে বর্তমানে আমাদের সিনেমার মন্দাবস্থা দেখে। বাংলা সিনেমার যে এত অবনতি হবে কোনোদিন কল্পনাও করিনি। এ চলচ্চিত্র থেকেই ওয়াসিমের জন্ম।

অর্থ, যশ, খ্যাতি সবই তো এখান থেকেই পেয়েছি। আজও নিজেকে এই পরিবারের সদস্য হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। এর পাশাপাশি কিছুটা দুঃখবোধও রয়েছে। আজকাল শিল্পীদের মধ্যে ভেদাভেদ আমার হৃদয়কে ভারাক্রান্ত করে তোলে। বড়-ছোট উভয়ের মধ্যে যে সম্মানবোধ আমাদের সময় ছিল সেটা আজ বিলুপ্ত প্রায়। একজন রাজ্জাক, আলমগীর, সোহেল রানা কি একদিনেই তৈরি হয়েছেন?
আজকাল তরুণ প্রজন্মের যে পরিচালকরা সিনেমা নির্মাণ করছেন তারা কি কোনোদিন লিজেন্ড এ শিল্পীদের কথা মনে করেন? তাদের জন্য কি সিনেমায় চরিত্র তৈরি করেন?

আর দেখেন, মুম্বই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আজও অমিতাভ বচ্চনকে নিয়ে ‘পা’ কিংবা ‘পিংক’-এর মতো ছবি তৈরি হয়। অথচ আমাদেরকে সরকারি কর্মচারীদের মতো অবসরপ্রাপ্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যা একজন শিল্পীর জন্য খুবই দুঃখজনক। ববিতা, কবরী, সুজাতা, সূচরিতা, শবনম, আলমগীর, সোহেল রানা, ফারুক এদের নিয়ে গল্প তৈরি করুন দেখবেন আবার দর্শক হলমুখী হবে। অভিনয়ের জন্য ওয়াসিম  শেষ কবে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন জানতে চাইলে বলেন, ছয়-সাত বছর আগে হোতাপাড়া লোকেশনে।

প্রসঙ্গত, শিক্ষাজীবনে ইতিহাস বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন ওয়াসিম। তিনি কলেজে পড়াকালীন ১৯৬৪ সালে বডি বিল্ডিংয়ের জন্য মিস্টার ইস্ট পাকিস্তান খেতাব অর্জন করেছিলেন।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!