• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

এক টুকরো কাপড়ে বের হলো মাথাবিহীন কিশোরীর পরিচয়


নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি অক্টোবর ৯, ২০১৯, ০৯:৪৩ পিএম
এক টুকরো কাপড়ে বের হলো মাথাবিহীন কিশোরীর পরিচয়

নারায়ণগঞ্জ: লাশের পাশে পড়ে থাকা এক টুকরো কাপড়ের মাধ্যমে উদ্ধার করা অজ্ঞাত কিশোরীর গলিত লাশের পরিচয় পেয়েছে পুুুলিশ। কাপড়টি পাবার পর থেকেই তৎপর হয়ে ওঠে পুলিশ। এরপর বের হয়ে আসে লাশের পরিচয়। অজ্ঞাত ওই কিশোরীর নাম জান্নাতুল জেবা (১৪)। তার বাড়ি ঢাকার যাত্রাবাড়ীর কোনাপাড়া এলাকায়। সে স্থানীয় একটি স্কুলে ৮ম শ্রেণিতে লেখাপড়া করতো।

বুধবার অজ্ঞাত পরিচয় লাশের পরিচয় পেয়ে সাংবাদিকদের কাছে এমন তথ্য জানিয়েছিলেন মামলার তদন্তকারী অফিসার সোনারগাঁ থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম আজাদ। এর আগে গত ৪ অক্টোবর (শুক্রবার) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের পিয়ারনগর এলাকার ঝোপ থেকে অজ্ঞাত কিশোরীর গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গলিত হাত-পা ও মাথাবিহীন কিশোরীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

সোনারগাঁ থানা পুলিশের এসআই আবুল কালাম আজাদ জানান, গত ৪ অক্টোবর সন্ধ্যায় এলাকাবাসীর খবরের ভিত্তিতে উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের পিয়ারনগর এলাকার একটি ঝোপের ভেতর থেকে অজ্ঞাত নারীর হাত-পা ও মাথাবিহীন গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে সোনারগাঁ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হলে মামলার তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর লাশের পাশে থাকা বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করা হয়। লাশ উদ্ধারের সময় কিশোরীর গায়ে পরিহিত জামা-কাপড়ের টুকরো ও জুতা নিয়ে দেশের বিভিন্ন থানায় যোগাযোগ করা হয় কোথাও নিখোঁজের জিডি ও অভিযোগ দায়ের হয়েছে কীনা? খুঁজতে গিয়ে জানতে পারি ঢাকার ডেমরা থানায় এক স্কুলছাত্রী নিখোঁজ রয়েছে।

সেই সূত্র ধরে লাশের জামা-কাপড় ও জুতা নিয়ে নিখোঁজ মেয়ের বাসায় গেলে তার বাবা-মা মেয়ের উদ্ধার করা জামা-কাপড় ও জুতা দেখে চিনতে পারেন এবং সে তাদের নিখোঁজ মেয়ে বলে জানান। তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার চরমানিকদা গ্রামে। তার বাবার নাম দিদার। তারা ঢাকার ডেমরা কোনাপাড়া এলাকায় মোশাররফের বাড়ির ভাড়াটিয়া। জান্নাতুল জেবা ঢাকার ডেমরা কোনাপাড়া এলাকার মান্নান উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

তিনি আরও জানান, জান্নাতুল জেবা ৩০ সেপ্টেম্বর রাত ১২টায় নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় তার বাবা ডেমরা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করেন। আমরা জেবার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি সে কেন বাসা হতে বের হলো এবং কার ডাকে বের হলো? এমনকি তাদের কোনো শত্রু আছে কি না সব কিছু তথ্য নিয়ে নির্মম হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের জন্য কাজ করছি। এছাড়া হত্যকারীদের গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে।

এদিকে লাশের পরিচয় পাওয়ার পর নিহত জেবার মা ছুটে আসেন সোনারগাঁ থানায়। সেখানে নিহতের মা মানছুরা বেগম বলেন, ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে কে বা কারা আমার মেয়েকে ফুঁসলিয়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গেছে। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও আমরা আমাদের মেয়েকে পাইনি। পুলিশের মাধ্যমে মঙ্গলবার রাতে জানতে পাই কে বা কারা আমার মেয়েকে সোনারগাঁয়ে নিয়ে এসে হত্যা করেছে, আমি এর ন্যায়বিচার চাই, আমি এর ন্যায়বিচার চাই।

সোনারগাঁ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, অজ্ঞাত ওই কিশোরীর লাশের পরিচয় পাওয়া গেছে। মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই আবুল কালাম আজাদ খুব অল্প সময়ের মধ্যেই অজ্ঞাত নারীর পরিচয় পায় এবং নিহতের স্বজনদের খুঁজে বের করে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছে। ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

সোনালীনিউজ/এইচএন

Wordbridge School
Link copied!