• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এক বিলিয়ন ডলার রপ্তানির টার্গেট নিয়েছে ওয়ালটন


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ৩০, ২০১৮, ০৫:৪৫ পিএম
এক বিলিয়ন ডলার রপ্তানির টার্গেট নিয়েছে ওয়ালটন

ঢাকা : ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত প্রযুক্তি পণ্য ও খুচরা যন্ত্রাংশ রপ্তানির মাধ্যমে ২০২৮ সালের মধ্যে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের টার্গেট নিয়েছে দেশের ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন। এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আন্তর্জাতিক ব্যবসা ইউনিটকে শক্তিশালী করা হয়েছে। ইউরোপ, আমেরিকার মতো উন্নত দেশগুলোতে নিজস্ব অফিস স্থাপনের পাশাপাশি নিয়োগ দিচ্ছে বিশ্ব ইলেকট্রনিক্স বাজারের বিপণন বিশেষজ্ঞদের। নিয়মিত অংশ নিচ্ছে উন্নত দেশগুলোর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মেলায়। সেই সঙ্গে গ্লোবাল আরএনডি ও ডিজাইন সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানটি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশি পণ্যের বিশাল সম্ভাবনাময় বাজার রয়েছে। এমনকি বিশ্ব ইলেকট্রনিক্স পণ্যের বাজারে নেতৃত্ব দেয়ার যথেষ্ট সামর্থ্য রয়েছে বাংলাদেশের। বিশ্বের অনেক ব্র্যান্ডই চীন থেকে পণ্য কিনে আমেরিকা ও অন্যান্য দেশগুলোতে বিক্রি করছে। কিন্তু, সাম্প্রতিককালে আমেরিকা ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা তৈরি হওয়ায় সেসব ব্র্যান্ড এখন অন্যান্য এশিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপনের দিকে ঝুকছে। বাংলাদেশের এই সুযোগ লুফে নেওয়ার সামর্থ্য রয়েছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বাজার বিশেষজ্ঞরা।

সূত্রমতে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটনের সুবিশাল পণ্য উৎপাদন কারখানা পরিদর্শন করছেন। তারা ওয়ালটনের তৈরি উদ্ভাবনী ডিজাইন ও উচ্চ গুণগতমানের কম্প্রেসার, ফ্রিজ, এয়ার কন্ডিশনারসহ বিভিন্ন পণ্যে দেখে সন্তুষ্ট হচ্ছেন। অনেকেই ইতিমধ্যে ওয়ালটনের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপনের আগ্রহ দেখিয়েছেন।

জানা গেছে, আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিজনেস কনফারেন্স ও পণ্য প্রদর্শনীতে নিয়মিত অংশ নিচ্ছে ওয়ালটন। চীনের ক্যান্টন ফেয়ার, নাইজেরিয়ার লাগোস ফেয়ার, সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইলেকট্রনিক্স ফেয়ারসহ অতি সম্প্রতি জার্মানির চিলভেন্টা প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে ওয়ালটন। কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স এবং হোম অ্যাপ্লায়ান্সের বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মেলা বার্লিনে ‘আইএফএ ফেয়ার’ ও লাস ভেগাসে ‘সিএসই ফেয়ার’ এ অংশ নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

জার্মানি, যুক্তরাজ্য, চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, তাইওয়ান, থাইল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গেøাবাল আরএনডি সেন্টারের পাশাপাশি শাখা অফিস স্থাপন করছে ওয়ালটন। সেই সঙ্গে নিয়োগ দিচ্ছে বিভিন্ন দেশের বিপণনে দক্ষ কর্মীদের। যারা বিশ্ববাজারে ওয়ালটন তথা বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে।

ওয়ালটনের আন্তর্জাতিক ব্যবসা ইউনিটের প্রধান এডওয়ার্ড কিম বলেন, নিঃসন্দেহে ওয়ালটন বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স বাজারে শীর্ষ ব্র্যান্ড। এখন সময় হয়েছে- বিশ্ব বাজারেও শক্তিশালী অবস্থান তৈরির। ওয়ালটনের টার্গেট- ২০২৮ সালের মধ্যে এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য রপ্তানির। এর মধ্যে ২০২২ সালের মধ্যে ১’শ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করতে সক্ষম হবে বলে তিনি আশাবাদী।

কিম আরো বলেন, বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়িক অংশীদারদের সঙ্গে টেকসই সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারে ওয়ালটন ব্র্যান্ডের দীর্ঘমেয়াদি উপস্থিতি নিশ্চিত করার চেষ্টা চালাচ্ছি। এক্ষেত্রে বৈশ্বিক অংশীদারদের সর্বোচ্চ গুণগতমানের পণ্য সরবরাহের নিশ্চয়তা দেয়ার পাশাপাশি ওইএম (অরিজিনাল ইক্যুইপমেন্ট ম্যানফ্যাকচারার) এর মাধ্যমে বিজনেস ভলিউম বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছি। এ ধরনের নতুন ও উদ্ভাবনী ধারণাই ওয়ালটনকে ধাপে ধাপে বিশ্বব্যাপী শীর্ষস্থানীয় ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড হিসেবে গড়ে তুলবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

ওয়ালটনের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম বলেন, বাংলাদেশের রপ্তানি আয় অতিমাত্রায় গার্মেন্ট, চামড়া ও পাট পণ্যের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু, ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তি পণ্য এবং এর যন্ত্রাংশ রপ্তানির মাধ্যমে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ব্যাপকহারে বাড়ানোর যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। ওয়ালটন আন্তর্জাতিকমানের ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত ইলেকট্রনিক্স ও এর যন্ত্রাংশ বিশ্বের ইলেকট্রনিক্স বাজারে পৌঁছে দিচ্ছে। তবে, বিশ্ববাজারে শতভাগ সফলতা পাওয়ার ক্ষেত্রে সরকার ও অন্যান্য পক্ষের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!