• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

এক মণ ধানে মিলছে দু’টি দিনমজুর!


ঝিনাইদহ প্রতিনিধি নভেম্বর ১৩, ২০১৮, ০৩:২৪ পিএম
এক মণ ধানে মিলছে দু’টি দিনমজুর!

ফাইল ছবি

ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহে এক মণ ধান বিক্রি করে কৃষকের মিলছে দু’টি দিনমজুরের টাকা। এ বছর দাম না থাকায় এক বিঘা জমির ধান বিক্রি করে কৃষকের কোনো লাভ হচ্ছে না, পরিশ্রমই বৃথা। ফলে দিন যতই ঘনিয়ে আসছে নবান্নের উৎসব ফিকে হয়ে আসছে। ঝিনাইদহের বাজারগুলোতে ধানের দাম ৬০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৭৩৫ টাকা। এতে লোকসান গুণতে হচ্ছে কৃষকদের।

সদর উপজেলার বংকিরা গ্রামের কৃষক আব্দুল হান্নান জানিয়েছেন, এ বছর প্রতি বিঘা জমিতে ধান উৎপাদন করতে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তিনি বলেন, এক বিঘা জমির ধান কাটতে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হচ্ছে। তারপরও দিনমজুর পাওয়া যাচ্ছে না। সুযোগ বুঝে তারাও দর বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু সেই তুলনায় বাজারে ধানের দাম নেই।

তিনি বলেন, কৃষকদের ধান লাগানো বাবদ ১ হাজার ২০০ টাকা, ধান জমি থেকে বাড়িতে আনা ৮০০ টাকা, জমি চাষ ১১০০ টাকাসহ নিড়ানি, সার ও কীটনাশক দিয়ে বিঘা প্রতি খরচ দাঁড়িয়েছে সর্ব নিম্ন ৮ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে ১০ থেকে ১৭ মণ হারে ফলন হচ্ছে।

হরিণাকুন্ডুর পায়রাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক হাফিজুর রহমান জানান, তাদের এলাকায় ধান কাটা ও ঝাড়ার জন্য বিঘা প্রতি ৩ হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। কিন্তু বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় এবার কৃষকের লোকসান হবে। বংকিরা গ্রামের কৃষক বাবুল বিশ্বাস জানান, গত ৪টি আবাদ কৃষকের কেটেছে দুর্যোগে। পাকা ধান পারিতে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় গ্রামের কৃষক পরিবার বড়ই দুর্দিনে পড়েছে। দায় দেনা ও এনজিও কিস্তিতে মানুষ বেহাল অবস্থায় পড়েছে।

ঝিনাইদহের হলিধানী বাজারের ধান ব্যবসায়ী শওকত আলী মিয়া ও রফিকুল ইসলাম জানান, গত বছরের চেয়ে এবার মণ প্রতি ২০০ টাকা লোকসান দিচ্ছেন কৃষকরা। তাদের ভাষ্যমতে গত বছর ব্রি-২৮ জাতের ধান ৯২০ টাকা মণ বিক্রি হয়েছে। এবার সেই ধান বিক্রি হচ্ছে ৭৩৫ টাকা মণ। বিনা-৭ জাতের ধান গত বছর ছিল ৮০০ টাকা, এ বছর ৭৪০ টাকা।

স্থানীয়ভাবে উদ্ভাবিত সুবল লতা ধানের মণ ছিল ৯০০ টাকা, এ বছর সেই ধান বিক্রি হচ্ছে ৭১০ টাকায়। ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক জিএম আব্দুর রউফ বলেন, আমাদের দেশ মুক্ত বাজার অর্থনীতির দেশ। চাহিদার ওপর বাজার নিয়ন্ত্রিত হয়। তবে কৃষকের ধানের দাম কমে যাওয়া একটি কষ্টের খবর। তিনি বলেন আমরা কৃষি ভর্তুকি ও কৃষি যান্ত্রিকী করণের মাধ্যমে কৃষকের ধানের উৎপাদন খরচ কমানোর চেষ্টা করছি।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!