• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
পৌর মেয়রের বিরুদ্ধে দুদকে একাধিক অভিযোগ

একটি টয়লেট নির্মাণে সোয়া ৫ লাখ টাকা লোপাট


গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৯, ০৯:২৫ পিএম
একটি টয়লেট নির্মাণে সোয়া ৫ লাখ টাকা লোপাট

গোপালগঞ্জ : থানায় একটি টয়লেট নির্মাণে সোয়া পাঁচ লাখ টাকা খবরসহ বিভিন্ন কারণে গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর পৌরসভার মেয়র আতিয়ার রহমান মিয়ার বিরুদ্ধে দুদকে একাধিক দুর্নীতি অভিযোগ দায়ের করেছে পৌরসভার কয়েকজন বাসিন্দা।

এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই দুর্নীতি কমিশন তদন্ত শুরু করেছে। কয়েকজন অভিযোগকারীকে ফরিদপুর দুদক নোটিশ করে নিয়ে তাদের বক্তব্য গ্রহন করেছে বলে জানা গেছে। এর পরেই বিভিন্ন ব্যাংকে রাখা বিপুল অংকের টাকা আতিয়ার মিয়া সরিয়ে নিয়েছে বলে ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।

পৌরসভার ছয়জন নাগরিকের স্বাক্ষরিত অভিযোগ পত্রে অবৈধ ভাবে অর্জিত টাকায় কেনা নম্বরসহ তিনটি গাড়ি, মৌজা ও দাগ নম্বরসহ অবৈধ ভাবে সরকারি জমি দখল, অগ্রণী ব্যাংক, সোনালি ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও এশিয়া ব্যাংক সমূহের হিসাব নম্বরসহ উল্লেখ করা হয়েছে।

মধুমতি ব্যাংকেও তার একটি ডিপোজিট একাউন্ট রয়েছে বলে জানান একজন অভিযোগকারী। ঢাকায় থাকা তার ২য় স্ত্রী হাসিনা বানুর নামে ঢাকার রিং রোডের এশিয়া ব্যাংক শাখায় বিপুল পরিমান টাকার কথাও অভিযোগে বলা হয়েছে।  থানার একটি টয়লেট নির্মাণে ব্যয় দেখানো হয়েছে ৫,১০.৩০০ টাকা। তার প্রিয় লোক কাইয়ুম শেখের নামে ২৮মে দুই লাখ সাতাশ হাজার ষোল টাকার একটি চেক দিয়ে চেকে কাইয়ুমের স্বাক্ষর ছাড়াই উক্ত টাকা উঠিয়ে মেয়র আতিয়ার রহমান আত্মসাৎ করে। প্রায় ৪৪ কোটি টাকায় পৌরসভার পানির লাইনের কাজ অতি নিম্নমানের মালামাল দিয়ে উক্ত কাইয়ুমের মাধ্যমে করাচ্ছে মেয়র নিজেই। জনগণকে এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে। এছাড়াও আতিয়ার মিয়ার বিরুদ্ধে আরো ১৪/১৫টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে দায়ের করা ওই অভিযোগ পত্রে।

মেয়র নির্বাচিত হয়েই সে তার ঘনিষ্ঠ ১০/১২জনকে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি করে চাকরি দিয়েছে। এ নিয়োগে তার কোটি টাকার উপরে আয় হয়েছে বলে অনেকের ধারনা। এদের প্রতিজনের নিকট থেকে তিনি ৮ লাখ হইতে ১৫ লাখ টাকা নিয়েছেন। তার নিজের এবং পরিবারের আরো কয়েকজনের চরিত্র এতই খারাপ যে মুকসুদপুরের মানুষ তাদের ডন্ট মাইন্ড ফ্যামিলি আখ্যা দিয়েছে।

এ বিষয়ে তাদের বাপ-বেটার কোন ভেদাভেদ নাই। প্রেজেন্ট গভঃপার্টি (পিজিপি) নেতা হিসেবেও তিনি পরিচিত। জিয়াউর রহমানের আমলে থানার বিএনপি সভাপতি হিসেবে সে এ আসন থেকে সংসদ নির্বাচন করে। এরশাদের আমলে সে ছিল জাতীয় পার্টির থানা কমিটির সম্পাদক। বর্তমানে সে আওয়ামীলীগের থানা কমিটির সভাপতি। স্থানীয় এমপির বাড়িতে আওয়ামীলীগের কর্মী সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করে আতিয়ার মিয়া জানায়, বিভিন্ন দল থেকে আসা কয়েকজন তার বিরুদ্ধে দুদকে প্রায় ৫০টি মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। তার এ বক্তব্যের পরে এমপি সাহেব বা কোন নেতাকর্মী কোন বক্তব্য বা মন্তব্য করেনি। অনেকের ধারনা এতো বিশাল অপকর্মের কারণে আতিয়ার মিয়ার জনপ্রিয়তা শূন্যের কোঠায় নেমে গেছে।

পৌর কমিটির সম্পাদক সেলিম মোল্যা ছাড়া দলীয় কোন নেতা কর্মী এখন আর তার পক্ষে কোন সমর্থন জানায় না। তার নিজ গ্রামের দলীয় নেতারাও তার থেকে সরে গেছে। পৌরসভার কাউন্সিলররা প্রকাশ্যে কিছু না বললেও মেয়রের বিরুদ্ধে সকলেরই ক্ষোভ রয়েছে। তার দুই ছেলে রানা মিয়া ও রনি মিয়ার ব্যাপক অপকর্মের কারণে আতিয়ার মিয়ার পতনকে আরো ত্বরান্মিত করেছে বলে অনেকে মন্তব্য করেছে।

আতিয়ার মিয়ার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক লেখালেখি হচ্ছে। জানা গেছে, আওয়ামীলীগের কেন্দ্রের নেতাদের বিপুল অংকের টাকা দিয়া দুদকের মামলা হইতে খালাস পাওয়ার চেষ্টা করছে তিনি।

এ ব্যাপারে মুকসুদপুর পৌর মেয়র আতিয়ার মিয়া ও তার দুই পুত্র রানা মিয়া ও রনি মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এ ব্যাপারে কোন বক্তব্য দিতে রাজী হননি।

সোনালীনিউজ/এমএইচকে/এএস

Wordbridge School
Link copied!