• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

একত্রিশেই ক্রিকেটকে বিদায় বললেন নাজমুল


ক্রীড়া প্রতিবেদক এপ্রিল ২৩, ২০১৯, ০৭:৪২ পিএম
একত্রিশেই ক্রিকেটকে বিদায় বললেন নাজমুল

ছবি সংগৃহীত

ঢাকা: ২০০৪ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের অল্প কিছুদিন পরেই জাতীয় দলে জায়গা পেয়েছিলেন পেসার নাজমুল হোসেন। সেসময় আমাদের অবস্থা এমন ছিলো যে কোথাও কেউ একটু ভালো খেলেছে তো তাকে জাতীয় দলের জার্সি দিয়ে দেয়া হোক! নাজমুলের বেলাতেও ব্যতিক্রম হয়নি। মাত্র ১৭ বছর বয়সেই ভারতের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় নাজমুলের। ২০১৩ সালেই শেষ হয় এই পেসারের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার।

এরপর থেকে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে যাচ্ছিলেন। এবারই প্রথম কোচ হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেছেন নাজমুল হোসেন। তাই ৩১ বছর বয়সে ক্রিকেটকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানালেন ।

মঙ্গলবার মিরপুরে সবধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়া সম্পর্কে নাজমুল বলেছেন, ‘আমি ওভারঅল যদি, খেলার দিক থেকে চিন্তা করেন তাহলে কম খেলেছি। কিন্তু দলের সাথে ছিলাম প্রায় ১১ বছর। শেষের দুই বছর, ২০১৪’র পর থেকে আমি সব দিক থেকেই স্ট্রাগল করছিলাম। তখনই আমার মনে হয়েছিল লাকি না হলে আমার ব্রেক করে ফিরে আসা কঠিন হবে। যখন ফিট ছিলাম তখনও আমি ইন অ্যান্ড আউট ছিলাম। আমি প্রথম টেস্ট খেলার পর সাত বছর পর দ্বিতীয় টেস্ট খেলেছি।’
 
ক্যারিয়ারের স্মরণীয় স্মৃতি মনে করতে গিয়ে সাবেক এই পেসার বলেছেন, ‘আমি নিজেকে ধন্য মনে করি, আকরাম ভাই, সুমন ভাই বলেন, উনাদের মত লিজেন্ডদের সাথে খেলতে পারি। আমার যেই বয়স ছিল, মাশরাফি ভাই, সাকিব, তামিম... ওদের সাথে খেলতে পেরেছি। সব মিলিয়ে ক্রিকেট থেকে অনেক কিছু পেয়েছি। বাংলাদেশ ভারতের সাথে প্রথম ওয়ানডে জিতেছে, সেই ম্যাচটা আমি খেলেছি। প্রথম অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে, সেটা আমি খেলেছি। প্রথম শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছি, সেটা আমি খেলেছি। এইগুলো চিন্তা করলে আমার মনে হয় আমি ভাগ্যবানই ছিলাম। ছোট ক্যারিয়ার, কিন্তু আমার প্রাপ্তি অনেক।’

কোচিংয়ে ক্যারিয়ার গড়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছেন নাজমুল। এই মৌসুম থেকেই নেমে পড়েছেন তিনি। মাশরাফি, সাকিব, মুশফিকদের সঙ্গে আলোচনা করেই কোচিংয়ে নাম লিখিয়েছেন নাজমুল।

তিনি বলেন, আমি এখনো চিন্তা ভাবনা করি নাই। আমি সাকিবের সঙ্গে আলাপ করেছি, মুশফিকের সঙ্গে  আলাপ করেছি, রিয়াদের সঙ্গে বা মাশরাফি ভাই, রাজ ভাই, যারা আমার সার্কেল, তাদের সঙ্গে আলাপ করেছি। ওরা সবাই বলেছে এক বছর টানাহ্যাঁচড়া করে খেলার চেয়ে কোচিং কর। ওরা বলেছে আমি পারব। আমার তো ন্যাশনাল টিমে কোনো ফিউচার নাই। আমি সুজন ভাই’র সঙ্গে কথা বলেছি। আমি চাই না আমার মতো বোলাররা হারিয়ে যাক। আজকের পর তো সিজন শেষ। ঈদের পর আমি শুভাশিষ, শহীদ, আল আমিন, তাসকিন বা ৮-১০ জন যেই বোলার থাকবে, আমি চাইব পারসনালি ওদের সঙ্গে কাজ করতে যেন ওরা আমার মতো হারিয়ে না যায়।

নাজমুল ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত জাতীয় দলে খেলেছেন। এই সময়ে দুই টেস্ট, ৩৮ ওয়ানডে আর চারটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন সিলেটের এই পেসার। তবে বাংলাদেশের ক্রিকেটের অনেক প্রথমের সঙ্গে জড়িত তিনি। কেউ যদি বাংলাদেশের ক্রিকেটের স্মৃতিরোমন্থন করে ভারত, শ্রীলংকা কিংবা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম জয়ের ভিডিওটা দেখেন। তবে নাজমুল হোসেনকে সেখানে দেখা যাবে। কারণ ওই সকল জয়ের ম্যাচে খেলেছেন তিনি।

শ্রীলংকার বিপক্ষে ঘরের মাঠে ত্রিদেশীয় সিরিজ জয়ের খুব কাছাকাছি ছিল বাংলাদেশ। প্রথম শিরোপা জয়ের তীরে গিয়ে সেবার হেরেছিল বাংলাদেশ। সাকিব-মুশফিকরা সেই ম্যাচেই হারের জ্বালায় পুড়েছিলেন। ওই ম্যাচে শুরুতে দুর্দান্ত বোলিং করেন নাজমুল হোসেন।

নাজমুলের ক্যারিয়ার মূলত চোটে পড়ে শেষ হয়ে গেছে। তাপস বৈশ্য, সৈয়দ রাসেল ও শাহাদাতদের সময়ের পেসার তিনি। আকরাম খান, হাবিবুল বাশারদের সঙ্গে খেলেছেন। আবার এই প্রজন্মের তামিম, সাকিবদের পেয়েছেন। নাজমুল তাই বাংলাদেশের ক্রিকেটের দুই প্রজন্মের মেলবন্ধন। এবার তৃতীয় প্রজন্মের পেসারদের গুরু হওয়ার কাজে নেমে পড়েছেন তিনি।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!