ঢাকা : দেশের বিমা খাতের স্বনামধন্য কোম্পানি এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের আইপিও’র আবেদন ও চাঁদা গ্রহণের নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ১৪ জুন থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত কোম্পানিটির আইপিও’র আবেদন ও চাঁদা গ্রহণ করা হবে।
কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর কে এম সাইদুর রহমান আজ সোনালীনিউজকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি আরো জানান, গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এরপর কয়েক দফায় সাধারণ ছুটি বাড়ানো হয়। যার ফলে কোম্পানির গত ১৩ এপ্রিল থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত আইপিও আবেদনের তারিখ নির্ধারিত থাকলেও তা পেছানো হয়েছিল।
সাইদুর রহমান বলেন, কোম্পানির বর্তমানে দুজন স্বতন্ত্র পরিচালক আছেন। বিমা আইন ২০১০ এর ভিত্তিতে তারা নিয়োগ পেয়েছেন। প্রসঙ্গত, বীমা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইআরএ) দেশের বীমা খাত পরিচালনা করে।
তিনি বলেন, বর্তমানে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের সঠিক সময়। সেই সাথে বাজারে তারল্য সংকট রয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের একটি শর্ত দেয়। শর্ত অনুযায়ী আইপিও থেকে উত্তোলিত অর্থের ২৫% আমরা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করব। বাকি অর্থ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি আইন অনুযায়ী এফডিআর করে রাখবো।
তিনি আরো বলেন, গত ৪/৫ বছরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কোন কোম্পানির জন্য সুপারিশ করেনি। কিন্তু ডিএসই এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স এর জন্য বিএসইসির নিকট সুপারিশ করেছে। এছাড়া আমরা গত কয়েক বছর ধরে নগদ লভ্যাংশ দিয়ে আসছি। এবং কোম্পানির শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভি) ১৮ টাকার বেশি হওয়ার পরেও আমরা প্রিমিয়ামের জন্য সুপারিশ করিনি।
করোনাভাইরাস ইস্যুতে পুঁজিবাজার গত ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ থাকায় কোম্পানিটির আবেদন গ্রহণও বন্ধ ছিল। তবে স্বাস্থ্য বিধি প্রতিপালনের মাধ্যমে বর্তমানে অফিস চলায় এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলনের অনুমোদন দেয়ায় আগামী ১৪ জুন থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত কোম্পানিটির আইপিও’র আবেদন ও চাঁদা গ্রহণের করা হবে।
বিএসইসি সূত্র জানায়, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স শেয়ারবাজারে ২ কোটি ৬০ লাখ ৭৯ হাজার সাধারণ শেয়ার ছেড়ে ২৬ কোটি ৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা উত্তোলন করবে। কোম্পানিটি ১০ টাকা ইস্যু মূল্যে শেয়ার ইস্যু করবে। উত্তোলিত অর্থ দিয়ে কোম্পানিটি ট্রেজারি বন্ড ও অন্যান্য ক্ষেত্রে বিনিয়োগ এবং আইপিও খরচ খাতে ব্যয় করবে।
৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ সমাপ্ত বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী কোম্পানিটির বিগত ৫ বছরে ভারিত গড় হারে শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১.৪২ টাকা এবং পুনমূল্যায়নসহ শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৮.৭২ টাকায়। যা পুনমূল্যায়ন ছাড়া ১৬.৬৫ টাকা।
কোম্পানিটির ইস্যু ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে এএএ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, আইআইডিএফসি ক্যাপিটাল এবং বিএলআই ক্যাপিটাল লিমিটেড।
এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্সের আইপিও অনুমোদনের ক্ষেত্রে কোম্পানিটিকে পাবলিক ইস্যু রুলসের বিবি ৩(৩)(সি) এর বিধানাবলী পরিপালনের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি প্রদান করেছে। এছাড়া আইপিও’র মাধ্যমে উত্তোলিত মূলধনের ২০% অর্থ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের শর্ত আরোপ করা হয়েছে। কোম্পানিটির সাধারণ শেয়ার ক্রয়ের ইলেকট্রনিক সাবস্ক্রিপশন সিস্টেম-এ অংশগ্রহনে ইচ্ছুক প্রত্যেক যোগ্য বিনিয়োগকারীকে ইলেকট্রনিক সাবস্ক্রিপশন সিস্টেম শুরুর দিন হতে পরবর্তী ৫ কার্যদিবস শেষে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে বাজার মূল্যে ন্যূনতম ১ কোটি টাকা বিনিয়োগ থাকতে হবে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (পাবলিক ইস্যু) রুলস, ২০১৫ (সংশোধিত) বিবি ৩(৩)(সি) এর বিধানে বলা হয়েছে, কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ন্যূনতম ১০% অথবা ৩০ কোটি টাকা যেটি বেশি সেই পরিমাণ টাকা উত্তোলন করতে হবে। তবে শর্ত থাকে যে, আইপিও পরবর্তী পরিশোধিত মূলধন ৫০ কোটির নিচে হবে না। এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্সকে পাবলিক ইস্যু রুলসের এই বিধান পরিপালন থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদে রয়েছেন দেশের সনামধন্য বিভিন্ন গ্রুপ অব কোম্পানির সু-দক্ষ, মেধাবী ও অত্যন্ত বিচক্ষণ ১১ জন বোড অব ডিরেক্টর ও ২ জন স্বতন্ত্র পরিচালক ও একজন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। যারা তাদের যোগ্যতা, মেধা ও অসাধারণ ব্যবসা পরিকল্পনার মাধ্যমে বিমা কোম্পানিটিকে দেশের নির্ভরযোগ্য বিমা কোম্পানি হিসেবে নিজের প্রতিষ্ঠিত করেছেন। যার ফলে বিমা কোম্পানিটির গ্রাহকের আস্থা অর্জন দিন দিন উন্নতির চূড়ায় যাচ্ছে।
বিমা খাতের দীর্ঘ ১৪ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মো. আব্দুল আউয়াল কোম্পানিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও মিসেস মাহফুজা ইউনূস ভাইস চেয়ারম্যান, মিসেস ফরিদা রাজ্জাক ডিরেক্টর, মো. শামসুর রহমান ডিরেক্টর, মিসেস হালিমা হারুন ডিরেক্টর, সাঈদ আল ফারুক ডিরেক্টর, মিসেস মরিওম আক্তার, মো. খলিলুর রহমান চৌধুরী ডিরেক্টর, মো. লতিফুল বারী ডিরেক্টর, আমির হামজা সরকার, মো. এবিএম কায়সার ডিরেক্টর, মো. সিদ্দিক হোসেন চৌধুরী স্বতন্ত্র পরিচালক, মো. ফিরোজ আহমেদ স্বতন্ত্র পরিচালক।
এছাড়াও আলহাজ মোহাম্মদ ইউনুস স্পন্সর শেয়ার হোল্ডার, মো. আলতাফ হোসেন সরকার স্পন্সর শেয়ার হোল্ডার, মো. মাজকাট হারুন স্পন্সর শেয়ার হোল্ডার, মিসেস সুলতানা জাহান স্পন্সর শেয়ার হোল্ডার, মো. কেএম সাইদুর রহমান ম্যানেজিং ডিরেক্টরের দায়িত্ব পালন করছেন।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৭১৯তম কমিশন সভায় কোম্পানিটির আইপিও অনুমোদন করা হয়।
সোনালীনিউজ/এএস
আপনার মতামত লিখুন :