• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় যাচ্ছে না বুয়েট ঢাবি চবি ও রাবি

এবারো হয়রানি ও সংকট কাটছে না শিক্ষার্থীদের


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২০, ০১:২৫ পিএম
এবারো হয়রানি ও সংকট কাটছে না শিক্ষার্থীদের

ঢাকা : এবারো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও সংকট কাটছে না। গত ১২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসির সঙ্গে বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনগুলো নীতিগতভাবে রাজি হয় সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায়।

তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কার্যক্রমে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ৪টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ চার বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতিবাচক সিদ্ধান্ত প্রভাব ফেলবে সার্বিক ভর্তি কার্যক্রমে। তাছাড়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানিও খুব একটা যাচ্ছে না।  

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-ঢাবি। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

একাডেমিক সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগের নিয়মে নিজস্ব পদ্ধতিতেই স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা নেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ও (রাবি)।

এর আগে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ও সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় না যাওয়ার পক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সমন্বিত ভর্তি প্রক্রিয়া চালু করতে দীর্ঘদিন দাবি করে আসছেন অনেকে। সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসি এ নিয়ে নির্দেশনাও দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে।

আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই এটি কার্যকর করতে চায় সংস্থাটি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রশাসন চেষ্টা করছে এটি ঠেকাতে। প্রভাবশালীদের একটি অংশ একাট্টা হয়ে মাঠে নেমেছে ইউজিসির সিদ্ধান্তের কার্যকর আটকাতে।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে কমিশনে অনুষ্ঠিত এক সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

পূর্বনির্ধারিত সভায় ইউজিসির প্রতিনিধিরা ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আখতারুজ্জামান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সাইফুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীন আখতার উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমানে প্রচলিত ভর্তি পরীক্ষায় ভর্তিকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক ভোগান্তি হয় অনেক। আর্থিক ব্যয়ও নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। এসব বিবেচনায় বিশ্বায়নের এ যুগে উচ্চ শিক্ষার মানোন্নয়নে এ ধরনের কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি গ্রহণের উদ্যোগ যুক্তিযুক্ত।

ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, আমরা আশা করছি মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে  কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে পুরোদমে কার্যক্রম শুরু হবে। ভর্তির এ প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ইউজিসি সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। তবে কারো ইগো’র কারণে যাতে এই ভালো উদ্যোগ ব্যাহত না হয়।

ইউজিসির প্রস্তাবিত নীতিমালায় বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর লক্ষ্য, উদ্দেশ্য এবং পঠন-পাঠন প্রক্রিয়ার ভিন্নতা সত্ত্বেও তাদের ভর্তি পরীক্ষা কেবল এইচএসসি পরীক্ষায় পঠিত বিষয়গুলোর ভিত্তিতেই গৃহীত হয়ে থাকে।

বিষয়টি বিবেচনায় রেখে উচ্চ মাধ্যমিক ফল প্রকাশের পরপরই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটি কর্তৃক প্রদত্ত সময় অনুযায়ী তাদের নিজ নিজ ক্যাম্পাসে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করবে। কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তিচ্ছু ছাত্রছাত্রীদের একটি স্কোর করে দেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে অভিজ্ঞ এবং সিনিয়র শিক্ষকদের নিয়ে কলা, বিজ্ঞান ও বাণিজ্য শাখার জন্য পৃথক পৃথক তিনটি কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটি গঠন করা হবে। উক্ত তিন শাখায় তিনদিন পৃথক পৃথক ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে। ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল দেওয়ার পর কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির কাজ শেষ হবে।

পরে প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয় প্রচলিত পদ্ধতিতে (কিংবা যেভাবে তারা উপযুক্ত মনে করেন) তাদের নিজ নিজ প্রয়োজনীয় শর্তাবলি সংযোজন করে পৃথক পৃথক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে এবং নতুন করে আর পরীক্ষা না নিয়ে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত স্কোরকে বিবেচনা করেই ছাত্রছাত্রী ভর্তি করবে। প্রত্যেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েই ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র থাকবে।

ছাত্রছাত্রীরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী অভিন্ন প্রশ্নে পছন্দকৃত বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবে। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি তাদের পরীক্ষা নেওয়ার সামর্থ্যের অতিরিক্ত আবেদন পাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে মেধাক্রমানুযায়ী নিকটতম বিশ্ববিদ্যালয়ে তার পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাডেমিক কাউন্সিল/ভর্তি কমিটি ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় শর্তারোপ করার সুযোগ পাবে।

উল্লেখ্য, বিশেষায়িত বিভাগসমূহ যেমন- স্থাপত্য, চারুকলা ও সংগীত তাদের প্রয়োজনমতো শুধু ব্যবহারিক পরীক্ষা নিতে পারবে। তবে সেক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার স্কোর সংযুক্ত করেই মেধাতালিকা তৈরি করবে।

জানা যায়, প্রতি বছর উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চায় লক্ষাধিক শিক্ষার্থী। প্রতিযোগিতামূলক ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। এ জন্য আলাদাভাবে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। ভর্তি পরীক্ষাও আলাদা আলাদাভাবে আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হয়।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!