• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

এমপি পাপুলকে নিয়ে কুয়েত সিআইডির অভিযান


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ১৪, ২০২০, ১১:০১ এএম
এমপি পাপুলকে নিয়ে কুয়েত সিআইডির অভিযান

ঢাকা : কুয়েতে আটক সাংসদ কাজী শহিদ ইসলামের বিরুদ্ধে মানব পাচারের অভিযোগের তদন্তের পর মুদ্রা পাচারের অভিযোগের তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে দেশটির সিআইডি।  এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশের এই সাংসদকে সঙ্গে নিয়ে অভিযানে নামেন সিআইডির কর্মকর্তারা। অভিযানে জব্দ করা হয় সাংসদের চেকবই।  তাতে বিপুল পরিমাণ আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে।

কুয়েতের কূটনীতিক ও ব্যবসায়িক সূত্রগুলো জানিয়েছে, কুয়েতের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কর্মকর্তারা গত বুধবার মূর্তজা মামুন নামে কাজী শহিদের এক বিশ্বস্ত কর্মচারীকে আটক করেন। এরপর সাংসদের ব্যাংক হিসাব থেকে লেনদেনের বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন।

কুয়েতের আরব টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কুয়েতের গোয়েন্দাদের কাছে সাংসদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়া বাংলাদেশের ১১ জন নাগরিক তাঁর সহযোগী মূর্তজা মামুনের নাম উল্লেখ করেন।  আদালত সাংসদের এই সহযোগীকে আটকের নির্দেশ দেন।

আটকের পর থেকে সাংসদ শহিদের ব্যাংকসহ কুয়েতের বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে গোয়েন্দারা বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেছেন। গত বুধবার মূর্তজা মামুনকে আটকের পর তাঁকে সিআইডির দপ্তরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় তাঁর কাছ থেকে বাংলাদেশের আটক সাংসদের বিষয়ে আরও কিছু তথ্য পান গোয়েন্দারা। ওই দিনই আদালত মূতর্জা মামুনকে সিআইডির রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন মঞ্জুর করেন। পরদিন অর্থাৎ গত বৃহস্পতিবার সিআইডির কর্মকর্তারা সাংসদ কাজী শহিদকে নিয়ে মুশরিক এলাকায় অবস্থিত তাঁর বাসার কার পার্কিংয়ে যান। সেখানে সাংসদের একটি গাড়ি থেকে বেশ কয়েকটি ব্যাংকের চেকবই উদ্ধার করা হয়। ওই চেকবইগুলো থেকে গত তিন মাসে কুয়েতের পাশাপাশি বাংলাদেশ ও কানাডায় বিপুল পরিমাণ আর্থিক লেনদেনের তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা।

কুয়েতে গত শনিবার আটক হন লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সাংসদ কাজী শহিদ ইসলাম পাপুল। আটকের পরদিন অর্থাৎ গত রোববার তাঁর জামিন আবেদন নাকচ করে আদালত তাঁকে মানব পাচার ও অবৈধ মুদ্রা পাচারের অভিযোগে সিআইডির রিমান্ডে পাঠায়। তাঁর রিমান্ডের মেয়াদকাল রোববার শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।  এরই মধ্যে সিআইডি সাংসদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পর্কে ১১ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে।  ওই ১১ জনের সবাই সাংসদের বিরুদ্ধে মানব পাচারের অভিযোগ আনার পাশাপাশি প্রতিবছর ভিসা নবায়নের জন্য বাড়তি টাকা নেওয়ার অভিযোগ এনেছেন।

কুয়েতে আটক সাংসদের সবশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন শুক্রবার সন্ধ্যায়  বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের কাছে নতুন কোনো তথ্য নেই। মিডিয়ায় বিভিন্ন বিষয় দেখছি। কুয়েতের কাছ থেকে সরকারিভাবে এ ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি। কুয়েত থেকে আমাদের রাষ্ট্রদূত জানিয়েছিলেন, কুয়েতের সরকারের কাছ থেকে তথ্য চেয়ে চিঠি লিখেছিলেন। যেহেতু কুয়েতে এখন বন্ধ চলছে, তাই তিনি এ বিষয়ে চিঠির কোনো জবাব পাননি।’

কুয়েতের সূত্রগুলো জানিয়েছে, কুয়েতের গোয়েন্দারা আটক সাংসদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের লোকজনের অভিযোগ আর ব্যাংকসহ কুয়েতের স্থানীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মূর্তজা মামুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। সাংসদ কাজী শহিদের প্রতিষ্ঠান মারাফী কুয়েতিয়া গ্রুপের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মূর্তজা মামুন কানাডার নাগরিক। মূর্তজা মামুন আটক সাংসদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত এবং তিনি কাজী শহিদের লেনদেনের হিসাব রাখতেন বলে জানিয়েছে কুয়েতের স্থানীয় সূত্রগুলো।

আটক সাংসদের বিষয়ে জানতে চাইলে কুয়েতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এস এম আবুল কালাম গতকাল বিকেলে মুঠোফোনে বলেন, কুয়েত সিআইডি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাংসদ কাজী শহিদকে তাদের হেফাজতে রেখেছে। গত শনিবারের পর থেকে একাধিকবার তাঁর জামিনের চেষ্টা হয়েছিল। তবে জামিন হয়নি।

সোনালীনিউজ/এএস

Wordbridge School
Link copied!