• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এলডিপি ভাঙ্গার কারণ জানালেন সদ্য ঘোষিত একাংশের সভাপতি


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ১৮, ২০১৯, ০৫:২৫ পিএম
এলডিপি ভাঙ্গার কারণ জানালেন সদ্য ঘোষিত একাংশের সভাপতি

ঢাকা: এলডিপির (একাংশ) সদ্য ঘোষিত সভাপতি আবদুল করিম আব্বাসী বলেছেন, কর্নেল অলি আহমদের সঙ্গে কোনো দেশপ্রেমিক মানুষ রাজনীতি করতে পারেন না। কর্নেল অলি নিজের স্বার্থ ছাড়া কিছুই বোঝেন না। সব কিছুতেই তিনি নিজের স্বার্থ দেখেন।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। 

এর আগে এলডিপির নতুন আহ্ববায়ক কমিটি গঠনের ঘোষণা দেয়া হয়। এই সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে এলডিপিতে আনুষ্ঠানিক ভাঙন দেখা দিল। গত ৯ নভেম্বর কর্নেল অবসরপ্রাপ্ত অলি আহমেদকে সভাপতি এবং ড. রেদোয়ান আহমেদকে মহাসচিব করে এলডিপির নতুন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই কমিটি থেকে বাদ পড়েন দলটির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম। তারপর থেকেই মূলত দলটির মধ্যে ভাঙনের সুর ওঠে। আজ তা চূড়ান্ত রূপ পেল।

সোমবার প্রেস ক্লাবে এলডিপির পদবঞ্চিত নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে অলি আহমেদ এবং রেদোয়ান আহমেদ কমিটির বিপরীতে পাল্টা সাত সদস্যের একটি সমন্বয় কমিটি ঘোষণা করেন। এলডিপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম এই কমিটি ঘোষণা করেন। 

এছাড়া সমন্বয় কমিটির সভাপতি হিসেবে আবদুল করিম আব্বাসী নাম ঘোষণা করা হয় এবং সদস্যসচিব হন সেলিম।

পরে এক সংবাদ সম্মেলনে আব্বাসী বলেন, আজ দেশের রাজনীতি, অর্থনীতির পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলতেও আমার লজ্জা হয়। শুধু এক কথায় বলব, দেশের পরিস্থিতি এখন ভয়াবহ। আমার ৮৪ বছর বয়স হয়েছে, বাঁচার আর সাধ নেই। অনেক দেখেছি, বুঝেছি। এখন দেশেই স্বাভাবিক মৃত্যু চাই। এটাই আমার জীবনের শেষ চাওয়া।

তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত ছাত্রলীগ করেছি। রাজনীতি করতে গিয়ে অনেক দুঃখকষ্ট সহ্য করেছি। মুক্তিযুদ্ধ করেছি। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর জিয়াউর রহমানের হাত ধরে বিএনপিতে যোগদান করি। আমি ২৪ বছর নেত্রকোণা জেলা বিএনপির সভাপতি ছিলাম। জাতীয় সংসদে পাঁচবার নির্বাচন করেছি, তিনবার হুইপ ছিলাম। আমার এলাকার মানুষ, এই দেশ আমাকে অনেক দিয়েছে।

গেল ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনকে ভোট ডাকাতির নির্বাচন উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হতো তাহলে ফলাফল কী দাঁড়াতো তা আমরা সবাই জানি। কেউ সত্যি কথা বলতে চায় না, কবি-সাহিত্যিক-সাংবাদিকদের কলম স্তব্ধ হয়ে গেছে। তারপরও বলব, জাতির প্রয়োজনে সবার এগিয়ে আসা উচিত।

সংবাদ সম্মেলনে  সদস্যসচিব সেলিম বলেন, ‘গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে বেগম খালেদা জিয়া সরকারের রোষানলে পড়ে কারাবন্দি রয়েছেন। তাকে মুক্ত করার জন্য যখন দলমত-নির্বিশেষে জাতীয় ঐক্য গড়ার দরকার, তখন নিজেদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করার জন্য একটি পক্ষ তৎপর হয়ে উঠেছে।

এর মধ্যে কর্নেল অলি সাহেব তার এক বক্তব্যে পুরো বিএনপির নেতৃত্বকেই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন। তার এই বক্তব্যে (তিনি) বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দি থাকায় এবং তারেক রহমান দেশের বাইরে থাকায় বিএনপির নেতৃত্ব নেয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন। একজন সিনিয়র রাজনীতিবিদ হিসেবে দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে যেখানে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ রাখার প্রয়াস চালাবেন সেখানে জোটের মধ্যে বিভেদ তৈরির জন্য জাতীয় মুক্তিমঞ্চ তৈরি করেছেন। শুরুতে মুক্তি মঞ্চকে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আলাদা প্ল্যাটফর্ম বলা হলেও ধীরে ধীরে তার জিয়া পরিবার আর বিএনপির বিষোদগার করার প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়।

এদিকে, বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বকে বিতর্কিত আর দুর্বল করার চেষ্টা ষড়যন্ত্র শুরু করে যা আমাদের মতো জাতীয়তাবাদী আদর্শের পক্ষে মেনে নেয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এই অবস্থায় কোনো দলের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাওয়ানো আমাদের জন্য দুরূহ হয়ে পড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা অঙ্গীকার করছি, দেশের এই ক্রান্তিকালে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয়তাবাদী আদর্শের সৈনিকদের দুর্দিনে দেশপ্রেমিক হিসেবে জাতীয়তাবাদী আদর্শের রাজনীতিতে আরও বলিষ্ঠভাবে অংশগ্রহণ করব। সঙ্গে সঙ্গে সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় সক্ষম হব। নিজেদের নিয়োজিত করার লক্ষ্যে সারাদেশে এলডিপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে অচিরেই একটি কার্যকর ভূমিকায় অবতীর্ণ হব।’

এই প্রয়াসে বিএনপি স্বীকৃতি দেবে বলেও আশা প্রকাশ করেন সেলিম বলেন, বিএনপি ভেঙে এলডিপি গঠন করে যে পাপ করেছি তার প্রায়শ্চিত্ত করতে চাই।

সোনালীনিউজ/এমএএইচ

Wordbridge School
Link copied!